প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। এর প্রভাবে সোমবার বাংলাদেশে বাতাসের গতিবেগ বেড়েছে এবং বিকেল থেকে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের (বিএমডি) আবহাওয়াবিদ শাহিনুল ইসলাম বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এখনও আঘাত হানে নি। তবে আরও ঘনীভূত হতে পারে, উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে এবং মধ্যরাত বা মঙ্গলবার ভোর নাগাদ ভোলার কাছে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
আবহাওয়া অফিসের সর্বশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, ‘উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরের ওপর ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং উত্তর-পূর্ব দিকে উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে অগ্রসর হয়েছে।’
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সোমবার সকাল থেকে ঢাকাসহ দেশের অধিকাংশ এলাকায় মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ হচ্ছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নোঙর রাখতে বলা হয়েছে।
অবিরাম বর্ষণ অব্যাহত থাকলে ভূমিধস হতে পারে বলে সতর্ক করেছে চট্টগ্রাম ও অন্যান্য পার্বত্য জেলার কর্তৃপক্ষ।
এছাড়া উপকূলীয় সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার জেলার নিচু এলাকা এবং তাদের উপকূলীয় দ্বীপ ও চরাঞ্চল হতে পারে।
বুলেটিনে আরও বলা হয়েছে, স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫-৮ ফুট উচ্চতায় বাতাস চালিত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
দক্ষিণ উপকূলীয় অঞ্চল জুড়ে ইউএনবি সংবাদদাতারা সকাল থেকে ভারী বৃষ্টিপাত এবং জলোচ্ছ্বাসের কথা জানিয়েছেন।
মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ২৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ২৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মংলা বন্দর থেকে ২২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা বন্দর থেকে ১৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে কেন্দ্রীভূত ছিল।
উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা,পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনীসহ তিনটি অদূরবর্তী দ্বীপসমূহ ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
এছাড়া এসব জেলার নদীবন্দরকে ৩ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারসহ তিনটি উপকূলীয় দ্বীপও ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং বাংলাদেশের তৎসংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায় ৭৫-৮৮ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ায় ঘণ্টায় ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।