পল্লীকবি জসীম উদ্দীনের ১২০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ফরিদপুরে ২১ দিনব্যাপী জসীম পল্লী মেলা-২০২৩ শুরু হয়েছে।
শনিবার বিকালে জেলা সদরের অম্বিকাপুরে কবির নিজ বাড়ির সামনে কুমার নদের পাড়ে এ মেলার উদ্বোধন করা হয়।
জেলা প্রশাসন ও জসীম ফাউন্ডেশন এ মেলা আয়োজন করে।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদারের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন, কবির জামাতা ও প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, বীর বিক্রম।
আরও পড়ুন: রাঙামাটিতে ৫ দিনব্যাপী বৈসাবি মেলা আয়োজন
তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, আপনারা যদি কবি জসীমউদ্দিনকে জানতে চান- তবে তার বই পড়তে হবে। তার কৃতকর্মগুলো সম্পর্কে জানতে চেষ্টা করতে হবে।
তিনি নতুন প্রজন্মকে উদ্দেশ্য করে বলেন, প্রচারের অভাবে পল্লী কবি জসীমউদ্দিনকে নতুন প্রজন্ম ভুলতে বসেছে। নতুন প্রজন্ম আজকাল বই পড়া ভুলে যাচ্ছে। তাই, নতুন প্রজন্মকে বই পড়ার প্রতি উদ্বুদ্ধ করতে হবে। জসীমউদ্দিনের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করতে হবে। তা নাহলে একসময় নতুন প্রজন্ম জসীম উদ্দিনকে ভুলে যাবে।
এছাড়াও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন-পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক, সাধারণ সম্পাদক শাহ্ মো. ইশতিয়াক আরিফ, ফরিদপুর পৌর মেয়র অমিতাভ বোস, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা প্রমুখ।
এছাড়া বরেণ্য অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- কবিপুত্র ড. জামাল আনোয়ার, খুরশিদ আনোয়ার, কবি কন্যা আসমা জসীম উদ্দীন তৌফিক।
ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) তাসলিমা আলী জানান, এ মেলায় বিভিন্ন স্টলে লোকজ বিভিন্ন চারু ও কারুপণ্যের বিপণনের ব্যবস্থা রয়েছে। মেলায় ১৫০ থেকে ২০০টি স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া প্রতিদিন বিকালে মেলার মাঠ প্রাঙ্গণে জসীম মঞ্চে গান, নাচ, নাটকসহ বিভিন্ন লোকজ সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকছে। এতে ফরিদপুরের এবং জেলার বাইরের সংস্কৃতিক দলগুলো অংশগ্রহণ করছে।
তিনি আরও বলেন, মেলায় রয়েছে হস্ত, মৃৎ, বাঁশ ও বেত শিল্পসহ গ্রামীণ মানুষের ব্যবহৃত নিত্যদিনের জিনিসপত্র। এছাড়াও শিশু-কিশোরদের বিনোদনের জন্য রয়েছে সার্কাস, নাগরদোলাসহ বিভিন্ন রকমের রাইডস।
প্রসঙ্গত, ১৯৮৮ সাল থেকে জসীম মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। ওই বছর ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের উদ্যোগে ১ জানুয়ারি পল্লী কবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এ মেলার আয়োজন করা হয়।
মেলার ব্যাপ্তিকাল প্রথমে তিন দিন ছিল। পরে ৭, ১৫ ও এক মাসব্যাপী এ মেলার আয়োজন হয়েছে। ১৯৯১ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন আহমেদ এ মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এলে মেলার গুরুত্ব বেড়ে যায়।
পরে জেলা প্রশাসন ও জসীম ফাউন্ডেশন এ মেলা আয়োজন শুরু করে। তারই ধারাবাহিকতায় শনিবার বিকালে এ মেলার উদ্বোধন করা হয়।