তিনি বলেন, ‘আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী জাতি। বিজয়ী জাতি কেন অন্যের কাছে ভিক্ষাবৃত্তি ও মাথা নত করবে? বিজয়ী জাতি বিজয়ী জাতির মতোই বিশ্বজুড়ে মাথা উঁচু করে চলবে।’
‘স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২০’ প্রদান উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
’প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নগরীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ আটজন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠান ‘স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২০’ পেয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক পুরস্কারপ্রাপ্তদের হাতে পদক তুলে দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর বাংলাদেশ তার সম্ভাবনা হারায়।
তিনি বলেন, (হত্যার) ২১ বছর পরে সরকার গঠন করে তার সরকার জনগণের সামনে দেশের স্বাধীনতার সত্যিকারের ইতিহাস তুলে ধরতে শুরু করে।
প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার স্বপ্ন ও যারা তাজা রক্তের বিনিময়ে দেশের স্বাধীনতা এনেছেন, সেই লাখ লাখ শহীদের মহান ত্যাগের স্মৃতি স্মরণ করে বলেন, তার সরকার বাংলাদেশকে ক্ষুধামুক্ত ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা হিসেবে পুনর্গঠন করতে চায়।
‘আমরা জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়া, সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করা, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করা, প্রতিটি ঘর আলোকিত করা, প্রতিটি গৃহহীন ও ভূমিহীনকে বাড়িঘর সরবরাহের লক্ষ্য নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করছি। বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলতে এবং এর আত্মমর্যাদা বাড়িয়ে তুলতে কাজ করছি; যাতে আমরা বিশ্ব দরবারে মর্যাদার সাথে মাথা উঁচু করে, নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারি এবং কারও কাছে হাত পাততে না হয়,’ বলেন তিনি।
পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী (বীরপ্রতীক), মরহুম কমান্ডার (অব.) আবদুর রউফ, মরহুম মুহম্মদ আনোয়ার পাশা ও আজিজুর রহমান, চিকিৎসাবিদ্যায় অধ্যাপক ডা. মো. উবায়দুল কবীর চৌধুরী ও অধ্যাপক ডা. এ কে এম এ মুক্তাদির, সংস্কৃতিতে কালীপদ দাস ও ফেরদৌসী মজুমদার এবং শিক্ষায় টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের ভারতেশ্বরী হোমস।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন এবং পুরস্কারপ্রাপ্তদের সংক্ষিপ্ত জীবনী তুলে ধরেন।
পুরস্কারপ্রাপ্তদের পক্ষে অধ্যাপক ডা. একেএমএ মুক্তাদির অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
এর আগে গত ২০ ফেব্রুয়ারি জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২০’ এর জন্য বিশিষ্ট ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানের নাম ঘোষণা করে সরকার। ২৫ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা পুরস্কার তুলে দেয়ার ঐতিহ্য থাকলেও চলতি বছর কোভিড-১৯ মহামারির কারণে এটা সম্ভব হয়নি।
১৯৭৭ সাল থেকে ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সরকার প্রতি বছর এ পুরস্কার দিয়ে আসছে।
মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, তিন বাহিনীর প্রধান এবং সংসদ সদস্যরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।