বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অন্য কোনো দেশের হস্তক্ষেপ কাম্য নয় বলে মস্কোতে বৈজ্ঞানিক কনফারেন্সে বক্তারা অভিমত প্রকাশ করেন।
তারা বলেন, বাংলাদেশ নিজেদের ভাগ্য নিজেই নির্ধারণে সক্ষম।
বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) মস্কোর আরএআইসি কনফারেন্স কক্ষে ‘রাশিয়া ও বাংলাদেশ সহযোগিতার নতুন দিগন্ত’ শিরোনামে বৈজ্ঞানিক ও ব্যবহারিক কনফারেন্সে বক্তারা এসব কথা বলেন।
যৌথভাবে কনফারেন্সের আয়োজন করে রাশিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন (আরএআইসি) এবং রাশিয়ান ফ্রেন্ডশিপ সোসাইটি উইথ বাংলাদেশ।
কনফারেন্সের আলোচনায় অংশ নিয়ে রাশিয়ান পার্লামেন্ট স্টেট দুমার আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটির প্রথম ডেপুটি চেয়ারম্যান স্বেতলানা সের্গেইভনা ঝুরোভা বলেন, রাশিয়া ও বাংলাদেশের পারস্পরিক সহযোগিতার সম্পর্ক সুদীর্ঘকালের। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালে ও যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে রাশিয়া বাংলাদেশের পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় যেভাবে সহযোগিতা করেছিল, দুই দেশের জনগণের স্বার্থে ভবিষ্যতেও এ সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশের সঙ্গে জ্বালানি, কৃষি, শিক্ষা, খেলাধুলা, জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিভিন্ন বিষয়ে একই সঙ্গে কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে।
রাশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসান বলেন, রাশিয়া-বাংলাদেশের বহুমুখী সম্পর্ককে আরও সমৃদ্ধ ও মজবুত করতে বাংলাদেশ সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি বলেন, রাশিয়ার বিভিন্ন শিল্পকারখানায় বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি চালু হয়েছে। আগামীতে আরও দক্ষ জনশক্তি এবং রাশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অধিকসংখ্যক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী পাঠানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
মস্কোতে পাবলিক ডিপ্লোম্যাসি নিয়ে কাজ করা সংগঠন রাশিয়ান ফ্রেন্ডশিপ সোসাইটি উইথ বাংলাদেশের সভাপতি সাত্তার মিয়া বলেন, বাংলাদেশ নিজেদের ভাগ্য নিজেরাই নির্ধারণ করতে পারে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বাইরের হস্তক্ষেপ কোনোভাবেই কাম্য নয়। বাংলাদেশের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক ঐতিহাসিক এবং রাশিয়া বিষয়টিকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মূল্যায়ন করে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে রাশিয়ার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে দৃঢ় করতে সংগঠনের পক্ষ থেকে মস্কোতে বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ভাস্কর্য স্থাপন করা হবে। অন্যদিকে বিশ্বের প্রথম মহাকাশচারী রুশ নভোচারী ইউরি গ্যাগারিনের একটি ভাস্কর্য ঢাকার বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটারকে দেওয়া হবে। এছাড়া সংগঠনের উদ্যোগে ঢাকায় রাশিয়ান ইউনিভার্সিটি ও রাশিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুল হবে।
এ সময় রাশিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশনের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল তাতিয়ানা মিশুকভস্কায়া আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে স্বাগত বক্তব্য দেন এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার মান্টিটস্কির পাঠানো একটি বার্তা কনফারেন্সে পাঠ করে শোনান।
কনফারেন্সে বাংলাদেশ-রাশিয়া দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে প্রথাগত ধরনের বাইরে গিয়ে আরও প্রসারিত ও বৈচিত্র্য আনার বিষয়ে আলোচনা হয়।
এ সময় দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক রুশ বিশেষজ্ঞরা আলোচনায় অংশ নেন। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, এমজিআইএমও বিশ্ববিদ্যালয়, ডিপ্লোম্যাটিক অ্যাকাডেমি, রাশিয়ান অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সের প্রতিনিধিরা কনফারেন্সের আলোচনায় অংশ নিয়ে মতামত ব্যক্ত করেন।