বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন, হত্যা, সন্ত্রাস বন্ধ করতে এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লেইন বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন ইউরোপপ্রবাসী বাংলাদেশিরা।
সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদর দপ্তরে একজন কর্মকর্তার হাতে স্মারকলিপি তুলে দেন তারা।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে। চেপে বসা অপশক্তির সরকার তাদের দোসরদের দিয়ে এই অসত্য মামলা করছে।’
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, ‘বাঙালির মুক্তি আন্দোলন ও স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার ষড়যন্ত্র করছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়ে যখন সমৃদ্ধির মহাসড়ক দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে চলেছিলেন তখন পাকিস্তান সমর্থিত সাম্প্রদায়িক শক্তি জামায়াত-শিবির-বিএনপি সারা দেশে হত্যা, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ, লুটতরাজ, মন্দির-গির্জা ভাংচুর, সংখ্যালঘুদের হত্যা, পুলিশ-আনসার হত্যা, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হত্যা, সংসদ ভবন, গণভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেস, বিটিভিসহ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় হামলা করে ব্যাপক ক্ষতি সাধনের মধ্য দিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করে নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে। সরকারপ্রধান জননেত্রী শেখ হাসিনাকে জোর করে দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য করে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত ধানমন্ডির ৩২ নম্বর ঐতিহাসিক বাড়িটি পুড়িয়ে দেয়।’
প্রবাসী বাংলাদেশিরা বলেন, ‘সরকারপ্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশে তার দোসররা বাংলাদেশে হত্যা, নৈরাজ্য, মানবাধিকার লঙ্ঘন করে চলছে। আমরা ইউরোপে বসবাস করি। কিন্তু বাংলাদেশে আমাদের পরিবারের সদস্যরা আছেন, আমাদের স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি আছে। গত ৫ আগস্ট নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ক্ষমতায় বসে সারা দেশে নৈরাজ্য কায়েম করে চলছে। আমাদের পরিবারের অনেক সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের সম্পত্তি লুট করা হচ্ছে। আমরা খুবই উদ্বিগ্ন।’
স্মারকলিপিতে তারা বলেন, ‘আপনাদের কাছে আমাদের বিনীত অনুরোধ, জননেত্রী শেখ হাসিনাসহ নেতাদের বিরুদ্ধে করা সব মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার, সংখ্যালঘুদের ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের নির্যাতন, হত্যা বন্ধ করার জন্য বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করুন।’
এর আগে ১ সেপ্টেম্বর সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ও বেলজিয়াম আওয়ামী লীগের সার্বিক সহযোগিতায় বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদর দপ্তরের সামনে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। পরে ২ সেপ্টেম্বর ইইউ প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লেইনের কাছে স্মারকলিপি পাঠানো হয়।