অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্বে সব অংশীজনের যৌথ প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ শিগগিরই 'স্বাভাবিকতা, স্থিতিশীলতা, ঐক্য, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি'র পথে ফিরে আসবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।
তিনি আরও বলেন, ‘সে পর্যন্ত বাংলাদেশ যা সাহায্য চাইবে দেওয়া হবে।
ইয়াও ওয়েন বলেন, ‘আমরা সহযোগিতার অপার সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি। আমরা অনেকগুলো সহযোগিতার ক্ষেত্র দেখতে পাচ্ছি যেখানে আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারি।’
সোমবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর শফিকুর রহমানের সঙ্গে বৈঠকের পর রাষ্ট্রদূত ইয়াও সাংবাদিকদের সঙ্গে এসব কথা বলেন।
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, চীন কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যা ঘটেছে তা ঢাকা-বেইজিং সম্পর্কে কোনো প্রভাব ফেলবে না।
সরকারের সংস্কার এজেন্ডা ও সময়সীমা সম্পর্কে জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, ‘এটা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। বাংলাদেশের জনগণের সিদ্ধান্তকে আমরা সম্মান জানাব। আমরা বাংলাদেশের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।’
তিনি আরও বলেন, চীন বাংলাদেশ, তার জনগণ এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি সমর্থন দেয়।
জামায়াত প্রধানের সঙ্গে খুবই ভালো, গঠনমূলক ও ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, 'এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল।’
ইয়াও বলেন, চীনের নেতাদের ও ঢাকাস্থ দূতাবাসের সঙ্গে জামায়াতের খুব ভালো সম্পর্ক ছিল। কিন্তু গত ১৩ বছর ধরে এটি বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক পুনর্স্থাপনের এবং সংলাপ ও সহযোগিতা পুনরায় শুরু করার সময় এসেছে বলে আমরা বিশ্বাস করি। আমরা দলগুলোর এবং দুই দেশের মধ্যে আমাদের ভবিষ্যৎ সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেছি।’
জামায়াত চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কের সমর্থক এবং বাংলাদেশে আরও সহযোগিতা ও আরও চীনা বিনিয়োগ দেখতে চায় বলে জানান ইয়াও।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে রাষ্ট্রদূত বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং চীন অব্যাহতভাবে ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে দ্রুত প্রত্যাবাসনের জন্য তারা জামায়াতসহ বাংলাদেশের সব অংশীজনদের সঙ্গে একযোগে কাজ করবেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ এই মুহূর্তে ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণে রয়েছে এবং দুই দেশের মধ্যে ঐতিহ্যবাহী বন্ধুত্ব আরও সংহত করতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার, সব রাজনৈতিক দল এবং সর্বস্তরের সাথে বিনিময় ও সহযোগিতা গভীর করতে চীন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি আরও বলেন, দুই দেশ ও দুই দেশের জনগণের জন্য অধিকতর কল্যাণ বয়ে আনতে বাংলাদেশ-চীন সমন্বিত কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বের অব্যাহত উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ চীন।
ঢাকার চীনা দূতাবাস জানায়, দুই পক্ষ চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক, আন্তঃপক্ষ বিনিময় ও সহযোগিতা এবং অভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয় নিয়ে গভীর মতবিনিময় করেছে।
রাষ্ট্রদূত জানান, ‘খুব ভালো একটি বৈঠক হয়েছে এবং আমরা জামায়াতের সঙ্গে আরও সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।’
শফিকুর রহমান বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে চীনের অবদানের প্রশংসা করেন।
তিনি এক চীন নীতির প্রতি জামায়াতের দৃঢ় সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন এবং চীনের সঙ্গে দুই দল ও দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা জোরদার করার ইচ্ছাও তুলে ধরেন।