নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবমুখী হওয়ায় এ নিয়ে গ্রামের অভিভাবকরা খুশি বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) দুপুরে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ‘জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ’ উপলক্ষে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জাতীয় পর্যায়ের বিজয়ী শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘নতুন শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে প্রান্তিক পর্যায়ের (গ্রামের) মা-বাবাদের মধ্যে এ বিষয়ে কোনো আপত্তি বা উষ্মা নেই। তাদের অভিযোগ কম। বরং তারা খুশি। ধান কাটার সময়ে তাদের সন্তান তাদের সহযোগিতা করার বিষয়টি স্কুলে শিখছে। এটা দেখে তারা আপ্লুত।’
শহরের অল্পসংখ্যক অভিভাবক শুরু থেকে আপত্তি জানিয়ে আসছেন উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে শহুরে অভিভাবকরা বলছেন- আমাদের সন্তান ইলেকট্রিক্যাল ট্রেডের শিক্ষা নিয়ে কী অর্জন করবে? আমরা তো সন্তানকে বিজ্ঞানী বানাতে চাই। কিন্তু তাদের সে উপলব্ধি থাকা উচিত যে, প্রাত্যহিক জীবনে নানা বিষয়ে শিক্ষার্থীকে সম্পৃক্ত করাটা পাঠ্যপুস্তক ও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার চাইতেও অনেক সময় অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’
শিক্ষাকে বাস্তব জীবনে প্রয়োগের লক্ষ্যে শিক্ষাক্রমের রূপান্তর করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন শিক্ষামন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘তত্ত্বীয় জ্ঞানের প্রায়োগিক দিকটা শেখালে শিক্ষা আনন্দময় হয়ে ওঠে। এজন্য শিক্ষাক্রম রূপান্তরের চেষ্টা করা হচ্ছে। শিক্ষকদেরও সেভাবে প্রশিক্ষিত করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের মানসিক পরিবর্তনটা এখন বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘গ্রামের মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি ও তাদের চাওয়াটাকে যদি আমরা প্রত্যাখ্যান করি, শিক্ষাকে যদি অভিজাত মানসিকতা সৃষ্টির একটা প্রক্রিয়া হিসেবে দেখি, তাহলে সেটা সমাজ ও রাষ্ট্রে ভয়াবহ বিপর্যয় সৃষ্টি করবে। সমাজের সবার লক্ষ্য যদি হয় গাড়ি-ঘোড়ায় চড়া, তাহলে গাড়ি তৈরি করবে কে? শুধু অভিজাত বা উচ্চ প্রশাসনিক পদ দিয়ে সমাজ সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত করা সম্ভব নয়। এজন্যই আমরা শিক্ষায় রূপান্তরের পথে হাঁটছি।’