নীলফামারীতে কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বিজিবি সদস্যকে খালাস দেয়া কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এ ঘটনায় বিজিবি সদস্যের বিষয়ে প্রতিবেদন দেয়া পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা সহিদুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশের মহাপরিদর্শককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
একই সঙ্গে বিজিবি সদস্য মো. আকতারুজ্জামানকে ধর্ষণের অভিযোগ থেকে অব্যাহতির আদেশও বাতিল করেছেন হাইকোর্ট।
সোমবার (২১ নভেম্বর) বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ধর্ষণের শিকার কিশোরীর করা আপিল আবেদনের শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: ঢাকার ফুটপাত বিক্রি ও ভাড়া উত্তোলনে জড়িতদের তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট
এছাড়া পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সুপারকে মামলাটি তদন্ত করে ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে নীলফামারী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আদালত ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ অ্যান্ড মেন্টাল হাসপাতালের কর্তৃপক্ষকে ধর্ষণের শিকার কিশোরীকে মানসিক চিকিৎসা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
মেয়েটির পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শিশির মনির ও সুপ্রিম কোর্টের লিগ্যাল এইড প্যানেলের আইনজীবী বদরুন নাহার এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারোয়ার হোসেন বাপ্পী।
এর আগে ১৫ জুন সুপ্রিম কোর্টে একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা ঘটেছিল, যখন ১৫ বছর বয়সী এক মেয়ে তার মায়ের সঙ্গে আদালতে গিয়ে বিচার দাবি করেছিল।
মেয়েটি বলল, ‘ইউর অনার আমার বয়স ১৫ বছর। আমার সঙ্গে থাকা মহিলাটি আমার মা। একজন বিজিবি সদস্য আমাকে ধর্ষণ করলেও নীলফামারীর আদালতে তাকে খালাস দেয়া হয়েছে। আমরা গরীব, আমাদের টাকা নেই। আপনার কাছে আমরা বিচার চাই।’
আদালত তখন জানতে চেয়েছিল যে সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির কোনও আইনজীবী আছেন কি না যারা মামলাটি নিতে পারেন। আইনজীবী বদরুন নাহার উঠে দাঁড়িয়ে নিজের পরিচয় দেন।
এরপর আদালত বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন।
২০২০ সালের ২০ নভেম্বর নীলফামারীর সৈয়দপুরে স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় প্রতিবেশী এক বিজিবি সদস্যকে আসামি করা হয়েছে।
বিচারের পর, নীলফামারী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ২০২২ সালের ১৭ মে অভিযুক্তকে খালাস দেয়।
পরে গত ২৯শে জুন আসামিদের খালাস দেয়া বিচারিক আদালতের রায় ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্ট।
খালাস পাওয়া বিজিবি সদস্য আখতারুজ্জামানকে চার সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আরও পড়ুন: জায়েদ খানের প্রার্থিতা বৈধ বলে হাইকোর্টের রায় স্থগিত