বিদ্যুৎ খাতের সংকট মোকাবিলায় সরকারের ব্যর্থতার জন্য সংসদে বিরোধী দলের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
বুধবার একাদশ সংসদের ২০তম অধিবেশনে বিদ্যুৎ সঙ্কট নিয়ে আলোচনা করেন সংসদ সদস্যরা।
বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজ কর্পোরেশন বিল-২০২২ পাসের আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ সংসদে বলেন, ‘বিদ্যুৎ খাত আওয়ামী লীগের কোটিপতি বানানোর কারখানায় পরিণত হয়েছে। আমার কাছে সেই তথ্য ও তালিকা রয়েছে।’
বিদ্যুৎ খাতে ‘ইনডেমনিটি’ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি সংসদে বিদ্যুৎ সংকট নিয়ে আলাদা আলোচনার দাবি জানান।
তিনি বলেন, ‘এখানে (সংসদে) উন্মুক্ত আলোচনা হোক, গত ১৫ বছরে সরকার কী বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে, তা জাতিকে জানাতে দেন, তারা কী করেছেন তা বলতে দেন।’
হারুন দাবি করেন, তার কাছে কোটিপতিদের তথ্য ও তালিকা রয়েছে, প্রয়োজনে তিনি তা বিদ্যুৎমন্ত্রীর কাছে পাঠাবেন।
তিনি কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টের জন্য বিদ্যুৎ খাতে দেয়া তথাকথিত ‘ক্ষতিপূরণ’ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
হাজার কোটি টাকা ব্যবহার করে ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানির যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিএনপির এই সংসদ সদস্য।
তিনি বলেন, ‘আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, ভারত নানা দিক থেকে আমাদের কষ্ট দিচ্ছে, আপনারা ক্রমশ ভারতের বিদ্যুৎ আমদানির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছেন। আমদানি-নির্ভরতার কারণে বিদ্যুৎ খাত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।’
তিনি বলেন, সরকার বিদ্যুৎ খাতকে প্রায় ধ্বংস করে দিয়েছে।
গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, বিদ্যুৎ খাতের অবস্থা খুবই খারাপ।
তিনি বলেন, একটি অশুভ শক্তি এই সেক্টর দখল করেছে। প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে মনে হচ্ছে তিনি সেই বাহিনীর মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছেন।
জাতীয় পার্টির সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য রওশন আরা মান্নান বলেছেন, গ্যাস সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা যদি নিজেদের গ্যাস উত্তোলনের ব্যবস্থা করতাম, তাহলে এই পরিস্থিতি হতো না। এখন ঢাকায় দিনের বেলা রান্নার জন্য গ্যাস পাওয়া যায় না।’
বিএনপির সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা বলেছেন, বিদ্যুৎ নিয়ে সরকারের বড় বড় কথাবার্তা দেখার মতো।
তিনি বলেন, উৎপাদন ক্ষমতা যতই হোক না কেন, বাস্তবতা হচ্ছে লোডশেডিং বিরাজ করছে।
তিনি অভিযোগ করেন, দায়মুক্তি দিয়ে কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টের মাধ্যমে ব্যাপক লুটপাট হয়েছে।
তিনি বলেছিলেন, ‘কিছু ব্যক্তিকে অবিশ্বাস্য পরিমাণ অর্থ দেয়ার জন্য সরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো বন্ধ করে ভাড়ার বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো চলছে।’
রুমিন বলেন, একদিন এই ‘ডাকাতি’ তদন্ত করা হবে।
তিনি বলেন, যারা লুটপাটের সঙ্গে জড়িত তাদের শাস্তি দেয়া হবে।
জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, ‘ক্ষতিপূরণ’ ইস্যুতে সংসদে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে এবং বিরোধী দল এতে অংশ নিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘জনগণ এর সুবিধা ভোগ করছে (কুইক রেন্টাল প্ল্যান্ট)।’
তিনি আরও বলেন, বিএনপির সংসদ সদস্যরা সংসদে লিখিতভাবে প্রশ্ন করলে, তিনি লিখিত আকারে সবকিছুর উত্তর দেবেন।