প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চায় বলেই পাঠ্যসূচিতে পরিবর্তন আনা হচ্ছে।
২০২৪ সালের শিক্ষাবর্ষের জন্য মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধনের সময় তিনি বলেন, 'আমরা চাই আমাদের দেশ বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাক। এ কারণেই ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের (শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের) পাঠ্যসূচিতে পরিবর্তন আনা হচ্ছে।’
রবিবার (৩১ ডিসেম্বর) সকালে তার কার্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিয়ে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, তিনি শিক্ষার জন্য ব্যয়কে বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচনা করেন। তিনি বলেন, ‘শিক্ষার জন্য যা যা প্রয়োজন আমরা তা দেব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কীভাবে শিক্ষা দেয় এবং কোন পাঠ্যক্রম ও কোন পদ্ধতি অনুসরণ করে? আমরা বাংলাদেশে সেরকম আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাই।’
আরও পড়ুন: ২৮ অক্টোবর সাংবাদিকদের উপর হামলাকারীরা রেহাই পাবে না: প্রধানমন্ত্রী
তিনি দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির জন্য বাস্তব জ্ঞানভিত্তিক ব্যবহারিক শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি ছোটবেলা থেকেই আধুনিক প্রযুক্তি-জ্ঞানভিত্তিক শিক্ষার মাধ্যমে একটি জাতি গড়ে তুলতে চান এবং এ কারণেই তার সরকার কারিগরি শিক্ষা ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণকে গুরুত্ব দিচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা আধুনিক প্রযুক্তি-জ্ঞানভিত্তিক শিক্ষার মাধ্যমে একটি জাতি গড়ে তুলতে চাই। আমরা এরই মধ্যে এজন্য সবকিছু করেছি।’
নিজেদের যথাযথভাবে গড়ে তুলতে মনোযোগসহ পড়াশোনা করার জন শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের প্রতিহত করুন: টুঙ্গিপাড়ার জনসভায় শেখ হাসিনা
তিনি বলেন, 'আমরা বহুমুখী শিক্ষার মাধ্যমে জাতি গড়তে চাই। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন স্মার্ট ও দক্ষ জনগোষ্ঠী।’
দারিদ্র্য বিমোচনে শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমরা বাংলাদেশকে দারিদ্র্যমুক্ত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। একমাত্র শিক্ষাই পারে দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করতে। এজন্য আমরা শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছি।’
শেখ হাসিনা ২০২৪ সালের প্রাক্কালে সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান।
এ বছর সারাদেশে ৩ কোটি ৮১ লাখ ২৮ হাজার ৩২৪ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩০ কোটি ৭০ লাখ ৮৩ হাজার ৫১৭ কপি নতুন পাঠ্যপুস্তক বিতরণের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো।
পাঠ্যপুস্তকগুলো ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন উপজেলায় পাঠানো হয়েছে।
সরকার ২০১০ সাল থেকে এ পর্যন্ত সারাদেশে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত ৪৬৪ কোটি ৭৮ লাখ ২৯ হাজার ৮৮৩টি বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করেছে।
২০১৭ সাল থেকে সরকার চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো ও সাদ্রি সংস্করণের বই বিতরণের পাশাপাশি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের মাতৃভাষায় লেখাপড়ার জন্য ব্রেইল বই বিতরণ করে আসছে।
দীপু মনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান স্বাগত বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী