স্বাধীন ও নির্ভরযোগ্য জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের জন্য সংস্কারের পাশাপাশি নীতিমালার কার্যকর বাস্তবায়নের ওপর জোর দিয়েছেন বক্তারা।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) রাজধানীতে অনুষ্ঠিত ‘স্বাধীন ও নির্ভরযোগ্য জাতীয় মানবাধিকার কমিশন: সংস্কার ভাবনা’ শিরোনামে এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এ সুপারিশ বলেন।
সুইস এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কো-অপারেশনের (এসডিসি) সহায়তায় ইউএনডিপির স্ট্রেংদেনিং ইনস্টিটিউশনস পলিসিজ অ্যান্ড সার্ভিসেস (এসআইপিএস) প্রকল্পের আয়োজনে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে বক্তারা বলেন, স্বাধীন ও নির্ভরযোগ্য জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের জন্য সংস্কার প্রয়োজন। রাষ্ট্রের প্রতিনিধি অপরাধ করলে কী করণীয় তা নির্ধারণ ও এর বিচারের নিশ্চয়তা প্রদান আবশ্যক। মানবাধিকার লঙ্ঘলের সীমা শূণ্যতে নামিয়ে আনা একান্ত জরুরি। কেবল সংস্কার নীতিমালায় নয় বরং নীতিমালার কার্যকর বাস্তবায়ন প্রয়োজন।
তারা বলেন, সাম্প্রতিক পটপরিবর্তনের ফলে জাতীয় অংশীজনদের একত্রিত হয়ে এনএইচআরসিকে শক্তিশালী করার জন্য প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা ও আলোচনার করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি জনগণের প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার প্রত্যাশাকে আমলে নিয়ে এনএইচআরসিকে সংস্কারের দাবিও জোরদার হচ্ছে। কাজেই, দেশে আইনের শাসন সমুন্নত রাখা, জনগণের অধিকার রক্ষা এবং জনগণের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য একটি সম্পূর্ণ স্বাধীন, নির্ভরযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অপরিহার্য।
নানাবিধ প্রতিবন্ধকতার কারণে মানবাধিকার কমিশন বিগত বছরগুললোতে সে ভূমিকা পালন করতে পারেনি উল্লেখ করে তারা বলেন, মানবাধিকার কমিশন যে উদ্দেশ্যে গঠন করা হয়েছে, সে উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতে মানবাধিকার কমিশন ব্যর্থ হয়েছে। বিগত বছরগুলোতে মারাত্মক মানবাধিকার লঙ্ঘন হলেও, দায়ী ব্যক্তি বা সংস্থাকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসার বাস্তবিক নজির নেই। মানবাধিকার রক্ষা মূলত রাষ্ট্রের আবশ্যিক দায়িত্ব, এজন্য নজরদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে মানবাধিকার কমিশনের ভূমিকা অপরিহার্য।
বৈঠকে সূচনা বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন, এনএইচআরসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ মাহিলা পরিষদের ড. মালেকা বানু, উইমেন্স অ্যাফেয়ার্স কমিশনের প্রধান শিরিন হক, সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার সাবিনা ইয়াসমিন লুবনাসহ আরও অনেকে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন ২০০৯, আইনি ও নীতিগত সংস্কার, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য নিয়োগে আইনি সীমাবদ্ধতা দূর করা, কমিশনে নারী সদস্যদের সংখ্যা বৃদ্ধি, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানবাধিকার সুরক্ষায় টাস্কফোর্স গঠন, তদন্ত ক্ষমতা, প্রবাসী শ্রমিকদের মানবাধিকার সুরক্ষা, জনসাধারণের কাছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ভাবমূর্তি ও জবাবদিহি জোরদারে নাগরিক সমাজ সংস্থা এবং গণমাধ্যমের ভূমিকা প্রভৃতিসহ গুরুত্বপূর্ণ উদ্বেগের বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
বিচার বহির্ভূত হত্যা বন্ধ এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ ব্যক্তিকে মানবাধিকার কমিশনে নিয়োগ প্রদানের ওপর গুরুত্বারোপ ককরেন বক্তারা।