দুই মাস পর পর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে তাদের সমস্যার সমাধান করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘প্রতি দুই মাসে শেষ সোমবার একদিন ডিএনসিসির অডিটোরিয়ামে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে বসব। আপনাদের কথা শুনব। আপনাদের সমস্যা সমাধান করব।’
তিনি বলেন, প্রতি দুই মাসে একদিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য বরাদ্ধ থাকবে। তাছাড়া যেকোনো সময় আপনাদের সমস্যা হলে আমার দুয়ার সবসময় আপনাদের জন্য খোলা থাকবে।
বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন আয়োজিত মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এই ঘোষণা দেন তিনি।
আরও পড়ুন: মশার লার্ভা ধ্বংসে বিটিআই কার্যকরী ভূমিকা রাখবে: মেয়র আতিক
অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগরের মোট ১ হাজার ৩০০ জন মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
মেয়র বলেন, 'উত্তর সিটি করপোরেশনের কোনো সেবা নিতে এসে মুক্তিযোদ্ধাদের যেন দ্বারে দ্বারে ঘুরতে না হয়, সেজন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছি। মুক্তিযোদ্ধারা যদি কোনো সেবার জন্য উত্তর সিটিতে আসেন তাহলে তাদের কোনো হয়রানি করা যাবে না। বয়স্ক মুক্তিযোদ্ধাদের যদি প্রয়োজন হয় তাহলে তাদের বাসায় গিয়ে সেবা দিয়ে আসতে হবে। তাদের কোনো কাজে সময়ক্ষেপণ করা যাবে না।'
তিনি বলেন, 'ডিএনসিসিতে আগে মুক্তিযোদ্ধাদের কবরগুলো ১০ বছরের জন্য সংরক্ষণ করা হতো। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান দেখিয়ে এই কবরস্থানগুলো আমরা সারা জীবনের জন্য সংরক্ষণ করব। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নির্ধারিত কবরস্থান ১০ বছর সংরক্ষণের পরিবর্তে আজীবন বিনামূল্যে সংরক্ষণ করতে পারবেন।’
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সড়কগুলোর নাম মুক্তিযোদ্ধাদের নামে করা হবে বলেও জানান তিনি।
মেয়র বলেন, 'আপনারা যেভাবে ৯ মাস যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছেন আগের কোনো সরকার কিন্তু আপনাদের সেভাবে সন্মান দেয়নি। একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার আপনাদের উপযুক্ত সন্মান দিয়েছেন।’
আরও পড়ুন: পরিবেশের ক্ষতি করে উন্নয়ন করা যাবে না: মেয়র আতিক
মেয়র আতিকুল ইসলাম আরও বলেন, '২০২৪ সালে ডিসেম্বর মাসে মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানদের নিয়ে উত্তর সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে আরও বড় পরিসরে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে একটি বিজয় মিছিল করা হবে।
তিনি বলেন, মিরপুরে মুক্তিযুদ্ধের অনেক স্মৃতি রয়েছে। শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থান সেখানে। মিরপুর জল্লাদখানা একসময় অবহেলিত ছিল। সেখানে মাদকের আখড়া ছিল। আরেকপাশে ছিল ময়লার ভাগাড়। আমরা মিরপুর জল্লাদখানাকে নান্দনিকভাবে সাজিয়েছি। সেখানে একটি লাইব্রেরি নির্মাণ করে দেব। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সেখানে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পারবে।
ডিএনসিসির সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফ-উল ইসলাম, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী, ডিএনসিসির সব বিভাগীয় প্রধান ও ডিএনসিসির কাউন্সিলর এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: দ্রুত কাজ শেষ করে রাস্তা-ঘাট খুলে দেওয়ার নির্দেশ মেয়র আতিকের