সব ধরনের নীতি সুদহার ও বিনিময় হার অপরিবর্তিত রেখে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধেও কঠোর মুদ্রানীতি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) এই ঘোষণায় বলা হয়েছে, ঘোষিত নতুন মুদ্রানীতির লক্ষ্য সরকারি ব্যয়ের জন্য টাকা ছাপানো বন্ধ করে মূল্যস্ফীতি কমানো । ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মধ্যে মূল্যস্ফীতির হার ৬ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রাও রাখা হয়েছে এই নীতিতে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে সাংবাদিকরা গভর্নরের সব ধরনের কর্মসূচি বর্জন করায় বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো অনলাইনে নতুন মুদ্রানীতি প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আরও পড়ুন: অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের বর্জনের মধ্যে অনলাইনে মুদ্রানীতি বিবৃতি প্রকাশ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক
সাধারণত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর, ডেপুটি গভর্নর ও প্রধান অর্থনীতিবিদের উপস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে মুদ্রানীতি প্রকাশ করা হয়। সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তর পর্বে যোগ দিয়ে মুদ্রানীতির বিভিন্ন প্রত্যাশা সম্পর্কিত তথ্য তুলে ধরেন তারা।
নীতিমালায় সুদহার অপরিবর্তিত থাকায় ঋণের সুদহার বাড়বে না। নতুন মুদ্রানীতিতে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতি আনতে আমদানি শিথিল করা হয়েছে, কড়াকড়ির কারণে যা আগে ধীর হয়ে পড়েছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এখন থেকে গাড়ি, ফল, ফুল ও প্রসাধনী আমদানির ক্ষেত্রে শুধু লেটার অব ক্রেডিটের (এলসি) বিপরীতে নগদ জমা দিয়েই এসব পণ্য আমদানি করতে হবে। এছাড়া অন্যান্য পণ্য আমদানিতে অগ্রিম অর্থ পরিশোধের বিষয়টি শিথিল করা হবে।
নতুন মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। গত জুন পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ দশমিক ৮ শতাংশ। বেসরকারি ঋণ প্রবৃদ্ধির এই হার আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত বহাল রাখা হয়েছে। অন্যদিকে, জুন শেষে সরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ৮ শতাংশ।
আরও পড়ুন: খেলাপি ঋণ বাংলাদেশ ব্যাংক ১১% বললেও প্রকৃত চিত্র ২৫%: ড. আহসান এইচ মনসুর
এছাড়া সরকারের ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা আরও বাড়িয়ে ১৪ দশমিক ২ শতাংশ করা হয়েছে। অর্থাৎ ব্যাংকিং খাত থেকে সরকারকে আরও বেশি ঋণ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি নতুন টাকা (রিজার্ভ মানি) ছাপিয়ে মুদ্রার সরবরাহ না বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। জুন মাসে রিজার্ভ মানি প্রবৃদ্ধি ছিল ৭ দশমিক ৯ শতাংশ। ডিসেম্বরে এই প্রবৃদ্ধি ২ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।