রংপুরের হারাগাছে পুলিশের বিরুদ্ধে তাজুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে পুলিশের গঠন করা তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এছাড়া ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনও দাখিল করতে বলা হয় এবং ১১ নভেম্বরের মধ্যে এই প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়ে ১৫ নভেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন রেখেছেন।
বুধবার বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
এর আগে এ ঘটনায় রংপুর পুলিশ কমিশনারের প্রতিবেদন আদালতে পড়ে শোনান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত।
আরও পড়ুন: মিতু হত্যা: পিবিআইর প্রতিবেদন গ্রহণ করেনি আদালত, বাবুলের আবেদনও খারিজ
উক্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, রংপুরের হারাগাছে পুলিশের বিরুদ্ধে তাজুল ইসলাম (৫৫) নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে একজন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, তাজুলের মৃত্যুর ঘটনায় লাশ সুরতহাল প্রতিবেদনে আঘাতের চিহ্ন নেই উল্লেখ করা হয়েছে। ওই ব্যক্তির কাছে পাঁচ গ্রাম হেরোইন পাওয়া গিয়েছিল বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে।
এর আগে রংপুরের হারাগাছে পুলিশের বিরুদ্ধে তাজুল ইসলাম (৫৫) নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা নিয়ে মঙ্গলবার পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন হাইকোর্টেও উপরোক্ত বেঞ্চের নজরে নেন আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। পরে এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা জানতে চান হাইকোর্ট। রংপুরের পুলিশ কমিশনারের সাথে কথা বলে ঘটনার বিস্তারিত ও এ ঘটনায় কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা আদালতকে জানাতে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্তকে মৌখিকভাবে আদেশ দেয়া হয়। সে অনুযায়ী বুধবার (০৩ নভেম্বর) রংপুরের পুলিশ কমিশনারের পক্ষ থেকে আদালতে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইন কর্মকর্তা ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত।
এ ব্যাপারে বুধবার ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত জানান, ই-মেইলে রংপুর থেকে পুলিশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ একটি প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন। সেটি আদালতে উপস্থাপন করেছি। আদালত এখন পুলিশের করা তদন্ত কমিটির রিপোর্ট ও ময়নাতদন্ত রিপোর্ট দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: পরীমণির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র
সোমবার রংপুরের হারাগাছে পুলিশের বিরুদ্ধে তাজুল ইসলামকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠে। ওইদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে হারাগাছের নতুন বাজার বছি বানিয়ার তেপতি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে নয়া বাজার বছি বানিয়ার তেপতি থেকে তাজুল ইসলামকে মাদকসহ আটক করে পুলিশ। এ সময় তিনি পুলিশের সাথে ধস্তাধস্তি করে পালানোর চেষ্টা করেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, পুলিশ তাকে মারধোর করলে ঘটনাস্থলেই মারা যান তাজুল ইসলাম। পরে ঘটনাটি জানাজানি হলে এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে থানা ঘেরাও করেন। বিক্ষুব্ধ জনতা ইটপাটকেল ছুড়ে মারার পাশাপাশি পুলিশের গাড়িসহ বেশ কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর করেন। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। নিহত তাজুল ইসলাম উপজেলার হারাগাছ নয়াটারী দালালহাট গ্রামের বাসিন্দা।