হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন খারিজ করে দিয়ে চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী এ আদেশ দেন।
মিন্নির আইনজীবী জেডআই খান পান্না সাংবাদিকদের জানিয়েছেন যে এ আদেশের ফলে তার কারাগার থেকে মুক্তি পেতে আর কোনো আইনি বাধা নেই।
এর আগে রবিবার বিকালে হাইকোর্টের জামিন আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদন করেন রাষ্ট্রপক্ষের অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড সুফিয়া খাতুন।
২৯ আগস্ট বাবার জিম্মায় থাকা এবং গণমাধ্যমের সাথে কথা না বলার শর্তে মিন্নিকে জামিন দেয় হাইকোর্ট। আদালত বলে, ১৯ বছর বয়সী মিন্নি জামিনে থাকা অবস্থায় তার বাবার জিম্মায় থাকবেন এবং গণমাধ্যমের সাথে কথা বলতে পারবেন না। এ ব্যত্যয় ঘটলে তার জামিন বাতিল হবে।
এদিকে, রিফাত হত্যা মামলায় মিন্নিসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে বরগুনা পুলিশ। রবিবার আদালত পরিদর্শক আব্দুল কুদ্দুস জানান, সদর থানার পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সিরাজুল ইসলাম গাজীর কাছে ৬১৪ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র জমা দেন।
রিফাত হত্যার ঘটনায় তার বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে বরগুনা সদর থানায় মামলা করেছিলেন। মামলায় এ পর্যন্ত ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে প্রধান আসামি সাব্বির আহমেদ ওরফে নয়ন বন্ড ২ জুলাই পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন।
অভিযুক্তদের মধ্যে ১৪ জন কিশোর হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে আলাদা সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেয়া হয়েছে।
২৬ জুন সকালে প্রকাশ্যে বরগুনা সরকারি কলেজ গেটের সামনে রিফাতকে (২২) কুপিয়ে আহত করা হয়। এ সময় স্বামীকে বাঁচাতে চেষ্টা করতে দেখা যায় মিন্নিকে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় বরিশাল নেয়ার পর রিফাত মারা যান।
রিফাত হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী মিন্নিকে ১৬ জুলাই সকাল পৌনে ১০টার দিকে পুলিশ লাইনে এনে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাত ৯টার দিকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরদিন তাকে আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। তবে রিমান্ডের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ১৯ জুলাই তাকে আদালতে হাজির করা হয় এবং তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে মিন্নিকে বরগুনা কারাগারে পাঠানো হয়।
তবে মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোরের দাবি, কারাগারে মিন্নি তাদের জানিয়েছেন যে নির্যাতন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে তার কাছ থেকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায় করা হয়েছে। ৩১ জুলাই মিন্নির ১৬৪ ধারায় দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন জানানো হয়।