বরগুনা
বরগুনায় বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুর মামলায় আওয়ামীপন্থী ১২ আইনজীবী কারাগারে
বরগুনা জেলা বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মামলায় বরগুনা আইনজীবী সমিতির আওয়াপন্থী ১২ আইউনজীবীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে বরগুনা বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ মো. সাইফুর রহমানের আদালতে তারা আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
বরগুনা জেলা বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে বরগুনা সদর থানায় তাদের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল।
আসামিরা হলেন- মাহবুবুল বারী আসলাম, মজিবুর রহমান, এম মজিবুল হক কিসলু, হুমায়ুন কবির, হুমায়ুন কবির পল্টু, সাইমুল ইসলাম রাব্বি, জুনায়েদ জুয়েল, আমিনুল ইসলাম মিলন, নুরুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ আল মামুন মোল্লা, ইমরান হোসেন, আব্দুর রহমান জুয়েল।
মামলা সূত্র জানায়, দুই বছর আগে ২০২৩ সালের ১৭ মার্চ মামলায় অভিযুক্ত আসামিরা জেলা আওয়ামী লীগের অফিস কার্যালয়ে কেক কেটে শেখ মজিবুর রহমানের জন্মদিন পালন করেন। পরে সেখান থেকে সবাই একত্রিত হয়ে লোহার রড, জিআই পাইপ, বগি দাসহ বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র নিয়ে বরগুনার বিএনপিকে উৎখাত করতে মিছিল সহকারে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে প্রবেশ করেন। পরে অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর শুরু করেন তারা।
মামলার পর ১২ আসামি চলতি বছরের ২ জুলাই হাইকোর্ট থেকে আট সপ্তাহের জন্য আগাম জামিন নেন এবং ২১ জুলাই বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিননামা দাখিল করেন। পরে জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ২৪ জুলাই তারা আবারও জামিনের আবেদন করেন। আদালত সেদিন নথি তলব করে শুনানির জন্য দিন নির্ধারণ করেন। মঙ্গলবার শুনানি শেষে আদালত তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন এবং তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. আবদুল মোতালেব মিয়া ও মো. হাবিবুর রহমান আকন বলেন, ‘আমরা আবারও জামিনের জন্য আবেদন করব। আসামিরা প্রত্যেকেই কোর্টে নিয়মিত কর্মরত, পালানোর কোনো সম্ভাবনা নেই। তাছাড়া, মামলাটি দুই বছর আগের ঘটনা নিয়ে করা হয়েছে এবং অনেক আসামি আওয়ামী লীগের সদস্যও নন।
অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষের পিপি মো. নুরুল আমীন বলেন, ২০২৩ সালে ১৭ মার্চ বরগুনা জেলা বিএনপির অফিস ভাঙচুর ও শহীদ জিয়াউর রহমান এবং খালেদা জিয়ার ছবি ভাঙচুর করেন তারা। এ ঘটনার মামলায় ১২ জন আইনজীবী আসামি ছিল। আসামিরা সবাই আওয়ামী লীগের পদধারী।
৯৩ দিন আগে
বরগুনায় পুকুরে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু
বরগুনা সদর উপজেলার ৯ নম্বর এম. বালিয়াতলী ইউনিয়নে একটি পুকুরে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (১ জুলাই) দুপুরে উপজেলার পাতাকাটা গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে।নিহত শিশু দুজন হলো, পাতাকাটা গ্রামের সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে জুনায়েদ (১০) ও রাসেল হোসেনের ছেলে ইয়াসিন (৯)। তারা প্রতিবেশী এবং সমবয়সী ছিল।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুপুরে জুনায়েদ ও ইয়াসিন বাড়ির পাশের একটি পুকুরপাড়ে খেলছিল। খেলার সময় হঠাৎ জুনায়েদ পুকুরে পড়ে গেলে ইয়াসিন তাকে বাঁচাতে গিয়ে পানিতে পড়ে যায়। উভয়েই পানিতে তলিয়ে যায়।
দীর্ঘক্ষণ তাদের খোঁজ না পেয়ে পরিবার ও আত্মীয় স্বজনরা খুঁজতে শুরু করে। পরে পুকুর থেকে দুজনকে উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. তাজকিয়া সিদ্দিকাহ বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই শিশু দুটির মৃত্যু হয়েছে। প্রাথমিক পরীক্ষার পর তাদের মৃত ঘোষণা করে লাশ পরিবারকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পড়ুন: মাগুরার পুকুরে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু
১৫৬ দিন আগে
বরগুনায় চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে আহত ২, নিখোঁজ ৪
বরগুনার পাথরঘাটায় সাগর থেকে মাছ ধরে ফেরার পথে দুটি ট্রলিং ট্রলার আটক, চাঁদা দাবি, আহরিত মাছ ছিনতাইসহ মৎসজীবীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে কোস্টগার্ডের সদস্যদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় দুই মৎসজীবী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এ ছাড়াও ট্রলার থেকে খালে পড়ে ৪ জন নিখোঁজ হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন পাথরঘাটার মৎসজীবীরা।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনার পাথরঘাটার বিষখালী ও বলেশ্বর নদীর ভাড়ানি খালে কোস্টগার্ডের বোর্ট কূলে এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে, গতকাল (মঙ্গলবার) সকাল ৯টার দিকে স্থানীয় আলম কোম্পানি ও মাসুম কোম্পানির দুটি মডিফাইড ট্রলিং ট্রলার আটক করে কোস্টগার্ড।
আটক হওয়া একটি ট্রলারের মালিক ও বরগুনা জেলা ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাসুম আকন জানান, ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগরে মাছ ধরার জন্য যান উপকূলের হাজার হাজার মৎসজীবীরা।
তিনি বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরে আবহাওয়া খারাপ হওয়ার কারণে মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে আমার একটি ট্রলার ঘাটের দিকে আসে। এ সময় কোস্টগার্ড ট্রলারটি আটক করে। এর পরপরই আলম কোম্পানি আরেকটি ট্রলার আটক করে কোস্টগার্ড।’
মাসুম আকন অভিযোগ করেন, ‘ট্রলার আটক করার পর আমাদের উপস্থিতিতে কোস্টগার্ড সদস্যরা পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। তখন আমরা বৈধ কাগজপত্র দেখালেও তা গ্রহণ না করে ট্রলার ধ্বংসের চেষ্টা করেন তারা। এ সময় পাথরঘাটা মৎস্য কর্মকর্তা আমাদের বৈধ কাগজপত্র ও হাইকোর্টের আদেশ দেখে ট্রলার ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে চলে যান।’
তবে কোস্টগার্ড সদস্যরা বিষয়টি না মেনে মঙ্গলবার রাতে ট্রলার ধংস করা শুরু করেন বলে জানান তিনি।
মাসুম আরও বলেন, ‘ট্রলার ধংস করা শুরু করলে মৎসজীবীরা আপত্তি জানান। তখন দুজন মৎসজীবীকে মারধর করা হয়। এতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং সংঘর্ষ শুরু হয়।’
এ ঘটনায় ২ জেলে আহত হয়েছেন এবং আরও ৪ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানান তিনি।
মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আরও জানান, ঈদের ছুটির আগেও কোস্টগার্ড কর্মকর্তাকে এক লাখ টাকা দিয়েছেন তিনি। ঈদের ছুটির পর বাড়ি থেকে এসে আবারও তাদের স্টেশনে ডেকে নিয়ে ট্রলিং ট্রলারের তালিকা চাওয়া হয়। সেই তালিকা থেকে মোটা অংকের টাকা দাবি করেন কোস্টগার্ড কর্মকর্তারা। এর আগেও কয়েক দফা টাকা দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
বিভিন্ন সূত্রের বরাতে জানা গেছে, উত্তেজনার একপর্যায়ে কোস্টগার্ড সদস্যরা মৎসজীবীদের লক্ষ্য করে ফাঁকা গুলি ছোড়েন। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় মৎসজীবীরাও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। এ ছাড়াও আটক ট্রলারে থাকা মৎসজীবীদের মারধরের অভিযোগও উঠেছে কোস্টগার্ডের বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন: সাম্য হত্যা: ঢাবির তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমা
এদিকে, সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে থানা পুলিশ।
এ বিষয়ে পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান বলেন, তারা উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন।
তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, কোস্টগার্ড ও মৎস্য বিভাগ এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।
১৬৯ দিন আগে
শর্টসার্কিটের আগুনে পুড়ে ছাই বরগুনায় দুই বসতবাড়ি
বরগুনা সদর উপজেলার একটি প্রত্যন্ত গ্রামে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে সৃষ্ট ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে দুটি বসতবাড়ি সম্পূর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে প্রায় সাত লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্মকর্তারা।
শনিবার (১৪ জুন) রাত ৮টার দিকে সদর উপজেলার ২ নম্বর গৌরীচন্না ইউনিয়নের টিলাবাড়ী গ্রামের (৪ নম্বর ওয়ার্ড) মৃত সেন্টু মিয়ার বসতবাড়িতে আগুনের সূত্রপাত হয়। এরপর তা ছড়িয়ে পড়ে পাশেই সেন্টু মিয়ার ভাতিজা মো. মোতালেব মিয়ার বাড়িতে।
বরগুনা সদর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের স্টেশন অফিসার মো. ইমদাদুল হক বলেন, ‘রাত সাড়ে ৮টার দিকে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। তবে এলাকাটির দুর্গম হওয়ার কারণে ফায়ার ট্রাক সরাসরি ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারেনি। স্থানীয়দের সহায়তায় পুকুর থেকে পানি এনে রাত ৯টার মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।’
তিনি বলেন, ‘আগুনে দুটি বসতবাড়ি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। মারা গেছে তিনটি গৃহপালিত ছাগল। ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ৬-৭ লাখ টাকা বলে জানা গেছে।’
আরও পড়ুন: গাজীপুরে ঝুট গুদামে আগুন
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্য মোতালেব মিয়া (৪৫) বলেন, ‘হঠাৎ করে বিদ্যুতের তার থেকে আগুন বের হয়ে পুরো ঘরটাকে ঘিরে ফেলে। কিছুই বাঁচাতে পারিনি।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল কাশেম বলেন, এলাকাটি দুর্গম হওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি সময়মতো পৌঁছাতে পারেনি। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে সরকারি ত্রাণ সহায়তা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে জেনেছি।
স্থানীয়দের দাবি, এমন ঘটনা যেন পুনরাবৃত্তি না হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
১৭৩ দিন আগে
বরগুনায় একদিনে ডেঙ্গুতে ২ জনের মৃত্যু
বরগুনায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১১ জুন) দুপুরে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চান মিয়া ফকির (৭৫) এবং সন্ধ্যায় গোসাই দাস (৭০) নামের এই দুজনের মৃত্যু হয়।
চান মিয়া সদর উপজেলার এম বালিয়াতলী ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা এবং গোসাই দাস বরগুনা পৌরসভার শহীদ স্মৃতি সড়কের বাসিন্দা ছিলেন।
চান মিয়ার মেয়ে কুলসুম জানান, ‘তিনদিন আগে বাবাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বুধবার সকালে প্লাটিলেট পরীক্ষায় দেখা যায় তা ৬৪ হাজারে নেমে এসেছে। দুপুরেই বাবা মারা যান।’
বরগুনা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. তাজকিয়া সিদ্দিকাহ বলেন, ‘রেফার করার পরও স্বজনরা রোগীদের বরিশালে না নিয়ে যাওয়ায় তাদের অবস্থার আরও অবনতি ঘটে এবং মৃত্যু হয়।’
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. রেজওয়ানুর আলম বলেন, ‘দুজনই বয়স্ক ছিলেন। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। অবস্থার অবনতি হলে বরিশালে পাঠানোর পরামর্শ দেওয়া হলেও তারা এখানেই থেকে যান।’
আরও পড়ুন: করোনার চোখ রাঙানি: পর্যটকপ্রিয় রাঙ্গামাটিতে স্বাস্থ্য বিভাগের ব্যাপক প্রস্তুতি
বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল সূত্র জানায়, ‘বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১৭২ জন, যার মধ্যে ৩১ জন শিশু।’
বরগুনাবাসী এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন এই পরিস্থিতিকে ‘স্বাস্থ্য ব্যবস্থার চূড়ান্ত ব্যর্থতা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। স্থানীয়রা বলছেন, পর্যাপ্ত চিকিৎসক, নার্স এবং ডেঙ্গু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা না থাকায় ঝরে পড়ছে মূল্যবান প্রাণ।
১৭৫ দিন আগে
নিদ্রা সৈকত: অপার সম্ভাবনার এক নিসর্গ ভূমি
বরগুনা জেলার তালতলী উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নে অবস্থিত নিদ্রা সমুদ্র সৈকত, যা স্থানীয়ভাবে ‘নিদ্রার চর’ নামেও পরিচিত। অপরূপ এই সৈকতটি বাংলাদেশের অন্যতম সম্ভাবনাময় পর্যটন স্থান হিসেবে দ্রুত জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এই সৈকতটির একদিকে সাগর, অন্যদিকে নদী এবং মাঝখানে কেওড়া ও ঝাউবনে ঘেরা সবুজ পরিবেশ। এখানকার জোয়ার-ভাঁটার খেলা, সবুজ ঘাসের বিস্তীর্ণ প্রান্তর এবং শ্বাসমূলের সমারোহ পর্যটকদের মুগ্ধ করে।
স্থানীয় পর্যটন উদ্যোক্তা আরিফ রহমান বলেন, নিদ্রা সৈকতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং বৈচিত্র্য পর্যটকদের সহজেই আকর্ষণ করতে সক্ষম। এখানে পর্যটন অবকাঠামো উন্নত করা গেলে এটি দেশের অন্যতম প্রধান পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত হতে পারে।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে সালমা বলেন, নিদ্রা সৈকতকে কেন্দ্র করে পর্যটন শিল্পের বিকাশে সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করছে। পর্যটকদের জন্য নিরাপত্তা এবং সুবিধা নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি।
নিদ্রা সৈকতের কাছেই রয়েছে শুভসন্ধ্যা সমুদ্র সৈকত, যেখানে প্রতি বছর জোছনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া, বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন টেংরাগিরি, ফাতরার চর ও সোনাকাটা ইকোপার্কও এই এলাকায় অবস্থিত। সব মিলিয়ে নিদ্রা সৈকত ও এর আশপাশের এলাকা পর্যটকদের জন্য একটি সম্পূর্ণ প্যাকেজ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
আরও পড়ুন: বৈশাখী মেঘের ডাকে মাটি ফুঁড়ে ‘মে বলের’ হাতছানি
সার্বিকভাবে, নিদ্রা সমুদ্র সৈকত তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, বৈচিত্র্যপূর্ণ পরিবেশ এবং আশেপাশের পর্যটন স্থানের সমন্বয়ে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। সঠিক পরিকল্পনা ও উন্নয়নের মাধ্যমে এটি দেশের অন্যতম প্রধান পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত হতে পারে।
২০৯ দিন আগে
বরগুনায় মাজার ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ, আহত ২০
বরগুনার আমতলীর ইসমাইল শাহ মাজারে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
রবিবার (১৬ মার্চ) দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে বটতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে সোলায়মান, রেজাউল, বাদল মৃধা, দুলাল মৃধা, আবু বকর, আবুল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল নোমান, মো. মামুন, আবুল কালাম, জোবায়ের ও ফজলুল করিমকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অপর আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা জানন, বরগুনার আমতলীর ইসমাইল শাহ মাজারে ২৮তম ওরশ গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় শুরু হয়। ওইদিন রাতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আমতলী উপজেলা শাখার সভাপতি মাওলানা ওমর ফারুক জেহাদী ও সাধারণ সম্পাদক গাজী বায়েজিদের নেতৃত্বে তাদের শতাধিক সমর্থক ও জনতা এসে মাজার কর্তৃপক্ষকে মাজার পুজা ও গান বাজনা বন্ধ করতে বলেন। কিন্তু মাজারের প্রধান খাদেম মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল ওরশ বন্ধে অপারগতা প্রকাশ করেন।
এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথাবার্তা চলাকালীন এক পর্যায় তার সমর্থক ও কিছু জনতা লাঠিসোটা নিয়ে মাজারে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে ওই ওরশে আসা হাজার হাজার ভক্ত ও স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। মানুষ এদিক ওদিক ছুটাছুটি করতে থাকেন। পরে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে রাত পৌনে তিনটায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
আরও পড়ুন: নরসিংদীতে মাজার ভাংচুরের প্রতিবাদে মানববন্ধন
খবর পেয়ে আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আশরাফুল আলম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) তারেক হাসান ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুল ইসলাম আরিফ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ততক্ষণে মাজারের দুইটি বৈঠকখানা ও মাজারের মধ্যে সামিয়ানা পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. রাসেদ মাহমুদ রোকনুজ্জামান বলেন, ‘আহতদের যথাযথ চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আমতলী শাখার সভাপতি ওমর ফারুক জেহাদী ও সাধারণ সম্পাদক গাজী বায়েজিদের নেতৃত্বে শতাধিক বিক্ষুব্ধ জনতা লাঠিসোঠা নিয়ে এসে মাজার ভাঙচুর করে। পরে মাজারে আগুন দেয়।
ইসমাইল শাহ মাজারের প্রধান খাদেম মোস্তাফিজুর রহমান বাবুলের দাবী, মাওলানা ওমর ফারুক জেহাদী ও গাজী বায়েজিদের নেতৃত্বে তাদের শতাধিক সমর্থক লাঠিসোঠা নিয়ে এসে অতর্কিতভাবে মাজারে হামলা চালায় ও আগুন দেয়। এতে মাজারের ভেতরের গিলাব ও দুটি বৈঠকখানা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তারা ভক্তদের মারধর ও মাজারের বাক্সে থাকা টাকা পয়সা লুটপাট করেছে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমতলী উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক গাজী বায়েজিদ বলেন, ‘মুফতী মাওলানা ওমর ফারুকসহ আমাদের বেশ কিছু সমর্থক ও বিক্ষুব্ধ জনতা গিয়ে মাজারের প্রধান খাদেমকে পবিত্র রমজান মাসে মাজার পূজা ও গান-বাজনা করতে নিষেধ করেন। কিন্তু তিনি তা মানতে নারাজ। এক পর্যায় তার ভক্তরা ক্ষিপ্ত হয়ে মাওলানা ওমর ফারুক জেহাদীর গায়ে হাত তুলে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এতে জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে মাজারে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে।’
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বর্তমানে মাজারটিতে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।’
আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আশরাফুল আলম ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
২৬২ দিন আগে
বরগুনায় নিহত মন্টুর ১৮ মাসের শিশুর দায়িত্ব নিলেন জামায়াত আমির
বরগুনায় মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলার পর হত্যার শিকার মন্টু চন্দ্র দাশের ১৮ মাস বয়সী শিশুর দায়িত্ব নিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
সোমবার (১৭ মার্চ) সকালে পৌরশহরের কালিবাড়ী কড়ইতলায় মন্টু দাশের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। এসময় মন্টু চন্দ্রের স্ত্রীর সঙ্গে তাদের দৈনন্দিন দুঃখ-কষ্টের কথা শোনেন জামায়াত আমির।
ডা. শফিকুর রহমান এসময় নিহতের পরিবারকে বিভিন্ন রকমের ফল ও ঈদ সামগ্রীসহ নগদ টাকা উপহার দেন।
আরও পড়ুন: আজহারকে মুক্তি না দিলে নিজেকে গ্রেপ্তারের আর্জি জামায়াত আমিরের
নিহত মন্টু দাসের দেড় মাসের ছোট শিশু কন্যাটিকে কোলে নিয়ে তিনি বলেন, এই কন্যা শিশুটির বয়স ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত আপনাদের সকল ধরনের ভরণ-পোষণের ব্যবস্থা আমরা করব। আপনাদের সব রকম সহযোগিতা করার জন্য আমরা আপনাদের পাশে থাকব।
জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান সকাল ১০টার দিকে হেলিকপ্টারে বরগুনা সার্কিট হাউস মাঠে নেমে নিহত মন্টু দাস ও ধর্ষিতা নন্দিনী দাসের বাড়িতে সমবেদনা জানাতে যান।
পরে বরগুনা শহীদ মিনার চত্বরে পথসভায় তিনি বলেন, বরগুনার আলোচিত শিশু ধর্ষণ ও তার বাবাকে হত্যার এ ঘটনায় মামলার রায় ৯০ দিনের মধ্যে কার্যকর করতে হবে। কিন্তু সতর্ক করে দিতে চাই, এটা ৯১ দিন হলে আমরা মানব না।
বরগুনা ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার হয়ে বাবাকে হাড়ানো শিশুটির পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন জমায়াত প্রধান।
এ সময় তিনি তাদের মেয়েদের লেখাপড়া এবং সংসারের অন্যান্য খরচের ব্যবস্থা করাপর জন্য কিছু সহায়তা করার আগ্রহ প্রকাশ করেন এ জন্য মন্টুর স্ত্রী শিখা রানী দাশকে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার পরামর্শ দেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, অ্যাডভোকেট. মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল, বরগুনা জেলা জামায়াতের আমির মো. মহিবুল্লাহ হারুনসহসহ অন্যান্য নেতারা।
আরও পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জামায়াত আমিরের বৈঠক, অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত
উল্লেখ্য, ১১ মার্চ রাতে বরগুনা পৌর শহরের কালিবাড়ি স্টাফ কোয়ার্টার দীঘির দক্ষিণ পাশে ঝোপঝাড় থেকে মন্টু চন্দ্র দাসের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরদিন নিহতের স্ত্রী অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে বরগুনা সদর থানায় একটি মামলা করেন।
মন্টু চন্দ্র বরগুনা বাজারের একটি মুরগির দোকানের কর্মচারী ছিলেন। তার পরিবারে দেড় মাসের এক কন্যা শিশু, চার বছরের এবং ১২ বছরের দুই কন্যা সন্তান রয়েছে।
মন্টুর পরিবারের দাবি, তার মেয়েকে অপহরণের পর ধর্ষণের অভিযোগ এনে মন্টু বরগুনা থানায় মামলা করার কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় মন্টুর স্ত্রী আরেকটি মামলা করেছেন। অপহরণ ও ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত সৃজীব চন্দ্র রায়, তার সহযোগী কালু ও রফিক কারাগারে আছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।
২৬২ দিন আগে
বরগুনায় ১৪৭ চিকিৎসকের বিপরীতে কর্মরত ১৪, যোগদান করেননি ৯ জন
বরগুনা জেলার ৬টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৪৭ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও বর্তমানে কর্মরত আছেন মাত্র ১৪ জন। আর ১৪ জন রয়েছেন অনুমোদিত ছুটিতে। চিকিৎসক সংকট নিরসনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জেলায় ১৩ জন চিকিৎসককে পদায়ন করা হলেও যোগদান করেছেন মাত্র ৪জন। এতে জেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ভেঙে পড়েছে চিকিৎসা সেবা।
১২ লক্ষাধিক জনসংখ্যার উপকূলীয় এ জেলার চিকিৎসা সেবার ভঙ্গুরতা ও চিকিৎসক সংকট নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে বাসিন্দাদের মধ্যে। স্বাস্থ্য বিভাগের যথাযথ জবাবদিহিতা না থাকায় স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। তবে সচেতন নাগরিকরা মনে করেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কঠোরতা অবলম্বন করলে পদায়নকৃত চিকিৎসকরা কর্মস্থলে যোগদান করতে বাধ্য হতো।
প্রায় ২ হাজার বর্গ কিলোমিটার আয়তনের উপকূলীয় জেলার সর্বস্তরের মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে চিকিৎসক ও জনবল পদায়নের দাবিতে বহু আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন বাসিন্দারা। কিন্তু কোনো প্রতিকার ও পদক্ষেপ চোখে পড়েনি।
জেলার ৬টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সিভিল সার্জন অফিসে মোট ১৪৭ জন চিকিৎসকের পদ রয়েছে। কর্মরত রয়েছেন মাত্র ২৮ জন। এর মধ্যে আবার ১৪ জন অনুমোদিত ছুটিতে থাকায় বর্তমানে কর্মস্থলে আছেন মাত্র ১৪ জন চিকিৎসক। এর উপর আবার রয়েছে অন্যান্য জনবলের সংকট।
বরগুনা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, চিকিৎসক সংকট নিরসনের লক্ষ্যে গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর জেলায় ১৩ জন নতুন চিকিৎসককে পদায়ন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। কিন্তু, তাদের মধ্যে যোগদান করেছেন মাত্র ৪ জন। আর বাকীরা এখনো যোগদান করেননি। এ বিষয়ে একাধিকবার চিঠি চালাচালি করলেও এখন পর্যন্ত কোনো সমাধান হয়নি।
জেলার পাথরঘাটা উপজেলা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ২৭ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও কাগজে-কলমে কর্মরত মাত্র ৪ জন। তাদের মধ্যে আবার ২ জন আছেন অনুমোদিত ছুটিতে। এছাড়া বাকি দু’জনের মধ্যে একজন এম. এস. রেসিডেন্সি কোর্সে যাবেন। বাকী একজন দিয়ে চলবে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
বামনা উপজেলা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৫ জন চিকিৎসকের বিপরীতে কাগজে-কলমে কর্মরত ৫ জন। কিন্তু একজন অনুমোদিত ছুটিতে এবং আরেকজন যাবেন এমডি কোর্সে। বেতাগী ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৭ জন চিকিৎসকের বিপরীতে কাগজে-কলমে কর্মরত আছে ৫ জন। তার মধ্যে একজন অনুমোদিত ছুটিতে, একজন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে সংযুক্তিতে কর্মরত এবং আরেকজন এমডি কোর্সে যাবেন। আমতলী উপজেলা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৯ জন চিকিৎসকের বিপরীতে কাগজে-কলমে কর্মরত ৪ জন। যার মধ্যে একজন মাতৃত্বকালীন ছুটিতে এবং আরেক এমডি কোর্সে যাবেন। তালতলী উপজেলা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৪ জনের বিপরীতে কর্মরত আছেন ২ জন। এছাড়া বরগুনা সদর স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয়ে ১৩ জনের বিপরীতে ৭ জন থাকলেও তাদের মধ্য থেকে ৪ জন বরগুনা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে সংযুক্তিতে কর্মরত এবং সিভিল সার্জন অফিসের ২ জন মেডিকেল অফিসারের স্থলে আছেন মাত্র একজন।
গেল বছরের ১৮ ডিসেম্বর বরগুনার বিভিন্ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পদায়ন করার পরও যোগদান না করা চিকিৎসকরা হলেন- ডা. নুর-ই জান্নাতুল ফেরদৌস, ডা. মো. সাজ্জাদ হোসেন, ডা. পথিক বিশ্বাস, ডা. মো. রাকিবুল হাসান, ডা. মানা শায়ন্তা ঘোষ, ডা. রাফসানা রউফ, ডা. মো. ফখরুল ইসলাম চৌধুরী, ডা. মো. সাইফুর রহমান ও ডা. বুশরা নওরীন।
আরও পড়ুন: বাকৃবি: ১০ হাজার মানুষের জন্য চিকিৎসক মাত্র ৮ জন
বরগুনা সচেতন নাগরিক কমিটির (টিআইবি) সভাপতি মনির হোসেন কামাল বলেন, বরগুনায় চিকিৎসক সংকটের কারণে দীর্ঘদিন ধরে মানুষ চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অথচ চিকিৎসককে পদায়ন করার পরও তারা যোগদান করছেন না। তার দাবি, চিকিৎসকদের যথাযথ জবাবদিহিতার আওতায় আনতে না পারার কারণে এমন সুযোগ নিচ্ছেন তারা।
বরগুনা প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট সোহেল হাফিজ বলেন, সুদীর্ঘ বছর স্বাস্থ্য বিভাগে চেইন অব কমান্ড বলে কিছু নেই। যার কারণে ইচ্ছেমত নিয়োগ অথবা বদলির রেওয়াজ চলমান।
তিনি আরও বলেন, সরকারি চাকরি করে সরকারের নির্দেশনা মানবেন না এটা হতে পারে না। এখান থেকে বেড়িয়ে না আসা পর্যন্ত স্বাস্থ্য বিভাগের সুফল আসবে না।
বরগুনা সিভিল সার্জন ডা. প্রদীপ চন্দ্র মন্ডল বলেন, ‘বরগুনা জেলায় চিকিৎসক সংকট তীব্র। এ সংকট কিছুটা কাটিয়ে উঠতে ১৮ ডিসেম্বর ১৩ জন চিকিৎসককে পদায়ন করা হয়েছে। কিন্তু তাদের মধ্যে মাত্র ৪জন যোগদান করলেও বাকীরা এখনো যোগদান করেনি। এ বিষয়ে দু’দফায় চিঠির মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বদলি আদেশে ৩ দিনের মধ্যে যোগদান করার কথা থাকলেও তারা এ বিষয়ে গুরুত্ব দেননি। সরকারি চাকরি বিধি অনুযায়ী এটা তারা করতে পারেন না।’
আরও পড়ুন: চিকিৎসক-নার্সসহ বিএসএমএমইউয়ের ১৫ জন বরখাস্ত
৩০৫ দিন আগে
বরগুনায় ছাত্রদলনেতার ছুরিকাঘাতে যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ
বরগুনার তালতলীতে পূর্বশত্রুতার জেরে আরাফাত শিকদার নামে স্থানীয় ছাত্রদলনেতার ছুরিকাঘাতে মোটরসাইকেলচালক আরাফাত খান নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টার দিকে উপজেলার শারিকখালী ইউনিয়নের কচুপাত্রা বাজারে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত আরাফাত খান (২১) ওই ইউনিয়নের বাদুরগাছা গ্রামের জলিল খানের ছেলে ও বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক খানের ভাতিজা। ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালাতেন তিনি।
অভিযুক্ত আরাফাত শিকদার কলারং গ্রামের শহীদ শিকদারের ছেলে ও শারিকখালী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সদস্যসচিব।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, গতকাল (শনিবার) রাত ৯টার দিকে কচুপাত্রা বাজারে শহীদ শিকদারের কীটনাশকের দোকানের সামনে থেকে নিহত আরাফাতকে মারধর করেন আরাফাত শিকদার ও তার সঙ্গে থাকা লোকজন। একপর্যায়ে ধারালো ছুরি দিয়ে তার বুকে আঘাত করা হয়।
আরও পড়ুন: ময়মনসিংহে জমি নিয়ে বিরোধ, ছুরিকাঘাতে কৃষকের মৃত্যু
এ ঘটনার পর স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ওই ঘটনার পর কচুপাত্রা বাজারে থমথমে অবস্থা বিরাজ করে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করে তালতলী থানা।
থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজালাল বলেন, ‘কচুপাত্রা বাজারে ছুরিকাঘাতে মোটরসাইকেলচালক আরাফাত খান নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের অভিযান চলমান। এখন পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডের কারণ জানা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, পূর্ব শত্রুতার জেরে এই ঘটনা ঘটেছে।
৩০৫ দিন আগে