রূপপুর এনপিপি প্রকল্পে দুর্নীতি বিষয়ে কিছু বিভ্রান্তিকর এবং মিথ্যা তথ্যের ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রচার করার খবরের নিন্দা জানিয়েছে রোসাটম স্টেট করপোরেশন।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতি দিয়ে তারা প্রকল্পে দুর্নীতির বিষয়ের ব্যাখ্যা দেয় নির্মাণকারী রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিটি।
এই বিষয়ে আরও অযৌক্তিক জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটাতে, রাশিয়ান রপ্তানি ক্রেডিট ব্যবহারের পদ্ধতি এবং রূপপুর এনপিপি নির্মাণে এরই মধ্যে ব্যয় করা অর্থের পরিমাণ স্পষ্ট করা প্রয়োজন বলে মনে হয় বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে।
এতে বলা হয়, ২০২৪ সালের ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রূপপুর এনপিপি প্রকল্পের বাস্তবায়নের জন্য রাশিয়ার প্রদত্ত ১ হাজার ১৯০ কোটি মার্কিন ডলার পরিমাণের রাষ্ট্রীয় রপ্তানি ঋণ (স্টেট এক্সপোর্ট ক্রেডিট) থেকে মোট ৭৮০ কোটি মার্কিন ডলার ব্যবহৃত হয়েছে।
আরও পড়ুন: রূপপুর দ্বিতীয় পারমাণবিক কেন্দ্র নির্মাণে রোসাটমকে প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, পৃথক দুটি চুক্তির অধীনে দুটি ঋণ দেওয়া হয়। এর একটি ২০১৩ সালের ১৫ জানুয়ারি প্রথম চুক্তির অধীনে ব্যবহৃত ৪৯ দশমিক ১৩ কোটি মার্কিন ডলার (এই ঋণের মোট পরিমাণ ৫০ কোটি মার্কিন ডলার পর্যন্ত, এবং এর ব্যবহারের মেয়াদ ২০১৭ সালে শেষ হয়)। আর ২০১৬ সালের ২৬ জুলাই দ্বিতীয় চুক্তির অধীনে ব্যবহৃত ৭৩৩ কোটি ১৮ লাখ মার্কিন ডলার। দ্বিতীয় রপ্তানি ঋণের পূরো পরিমাণ হল ১ হাজার ১৩৮ কোটি মার্কিন ডলার। এই ঋণের এখন পর্যন্ত ৬৪ শতাংশ ব্যবহৃত হয়েছে, এবং এটির ব্যবহারের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরে।
রূপপুর এনপিপি প্রকল্পে যেকোনো দুর্নীতির সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে না উল্লেখ করে তারা বলেছে, রাশিয়ান ফেডারেশনের আইন অনুযায়ী কোনো রাষ্ট্রীয় রপ্তানি ঋণ প্রদানে সার্বভৌম ঋণগ্রহীতার কাছে সরাসরি টাকা স্থানান্তর করা হয় না। রপ্তানি চুক্তির অধীনে বিদেশি গ্রাহককে প্রদত্ত যেকোনো পণ্য, কাজ বা পরিষেবাগুলোর অর্থায়ন রাশিয়ান রুবেলে রাশিয়ান অর্থ মন্ত্রণালয় রাশিয়ান রপ্তানিকারক সংস্থাকে সরাসরি দেয়। রাশিয়ান অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে দেওয়া নথি অনুযায়ী এই লেনদেনগুলো করা হয়। পূর্বে আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলোর উপর বিশেষায়িত বৈধ এজেন্ট – ভিইবি-আরএফ’র সেই নথিগুলো অনুমোদিত হয়। রাষ্ট্রীয় রপ্তানি ঋণের ব্যবহৃত পরিমাণ রাশিয়ান ফেডারেশনের প্রতি বিদেশি রাষ্ট্র ঋণগ্রহীতার ঋণ হিসাবে বিবেচিত হয়।
আমরা বিশ্বাস করি যে, যারা রূপপুর এনপিপিতে ‘দুর্নীতি’ বিষয়ে ভুয়া খবর ছাপিয়ে ছড়িয়ে দেয় তারা ইচ্ছাকৃতভাবে এই উচ্চাভিলাষী প্রকল্পটিকে কলঙ্কিত করতে এবং মস্কো ও ঢাকার মধ্যে স্থিতিশীল এবং পারস্পরিকভাবে উপকারী সম্পর্ককে নষ্ট করতে চেষ্টা করে।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের রূপপুর প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের খবর উড়িয়ে দিলেন রুশ রাষ্ট্রদূত