বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ম্যারি মাসদুপুই বলেছেন, তারা রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, স্বেচ্ছামূলক, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবাসনের প্রত্যাশায় তাদের জন্য আরও ভালো সুযোগের পক্ষে সমর্থন অব্যাহত রাখবেন।
প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়েছে ফ্রান্স।
রাষ্ট্রদূত বলেন, তাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হচ্ছে শরণার্থী শিবিরে ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তাহীনতা এবং বার্মায় রোহিঙ্গাদের ফেরত যাওয়ার বিষয়টি মোকাবিলার পাশাপাশি তাদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন করা।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আহ্বান জানিয়েছে দাতা সংস্থাগুলো
বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মানবিক সহায়তা এবং গুরুত্বপূর্ণ সুরক্ষা পরিষেবা প্রদানে ইউএনএইচসিআর’র প্রচেষ্টায় সহায়তা করার জন্য ফ্রান্স সরকারের পক্ষ থেকে দেড় মিলিয়ন ইউরো (১ দশমিক ৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমতুল্য) অনুদানকে স্বাগত জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর।
ফ্রান্স রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সাড়াদানের দৃঢ় সমর্থক। বাংলাদেশে ইউএনএইচসিআরের প্রতিনিধি সুমবুল রিজভী বলেন, এই উদার সহায়তা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নসহ মানবিক ও সুরক্ষা প্রয়োজনে সহায়তা করবে।
তিনি আরও বলেন, 'এটি কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করে কক্সবাজারের পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্রের সফল পুনর্বাসনের মাধ্যমে জলবায়ু ও শরণার্থী পরিস্থিতির সামনের সারিতে থাকা স্থানীয় জনগোষ্ঠীকেও সহায়তা করবে।’
জাতিসংঘের সংস্থাটি মঙ্গলবার (২ জুলাই) বলেছে, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী ২০১৭ সালে তাদের আগমনের পর থেকে মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। এই অনুদান দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে শরণার্থী সহনশীলতা জোরদার করতে গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা প্রদান করবে। এর পাশাপাশি বন উজাড় এবং কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন রোধে সহায়তা করে এমন জ্বালানি কাঠের বিকল্প ব্যবস্থার মাধ্যমে পরিষ্কার রান্নার জ্বালানি সরবরাহের মাধ্যমে জলবায়ু কর্মসূচিকে সমর্থন করা।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে চীনের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
যেহেতু ফ্রান্স আবারও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছে, তাই ইউএনএইচসিআর আশা করছে যে মানবিক তহবিল ঘাটতির সময়ে এই অনুদান অন্যান্য দাতাদের জন্য উৎসাহ যোগাতে কাজ করবে।
চলতি বছরে মানবিক সংস্থাগুলো রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং প্রতিবেশী সম্প্রদায়ের বাংলাদেশিসহ প্রায় ১ দশমিক ৩৫ মিলিয়ন মানুষকে সহায়তার জন্য ৮৫২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি আবেদন করেছিল। বছরের মাঝামাঝি সময়ে জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যানে ৩০ শতাংশেরও কম অর্থায়ন করা হয়েছে।
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আত্মনির্ভরশীলতা বাড়াতে এবং বাংলাদেশ সরকারের ওপর চাপ কমাতে গত বছর গ্লোবাল রিফিউজি ফোরামের সহ-আহ্বায়ক ফ্রান্সসহ যে অঙ্গীকার করেছিল তা পূরণ করাও গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন: উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আরসা-আরএসও সংঘর্ষে নিহত ১