মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর দ্রুত ও টেকসই প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করার জন্য বিশেষ করে থাইল্যান্ড ও আসিয়ানের আরও সক্রিয় ভূমিকা চেয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন আগামী মাসে ঢাকায় ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশনের (আইওআরএ) মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও উপ-প্রধানমন্ত্রীকে অংশগ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন।
রবিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে থাইল্যান্ডের স্থায়ী সচিব-মনোনীত সারুন চারোয়েনসুওয়ান মোমেনের সঙ্গে দেখা করার সময় এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
সাক্ষাতকালে তারা বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বিদ্বেষ নয়'-এই মূল পররাষ্ট্রনীতির লক্ষ্যে বাংলাদেশ সব প্রতিবেশি দেশের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি এই অঞ্চলে বৃহত্তর সংযোগ সুবিধার মাধ্যমে একটি শক্তিশালী এবং আরও কার্যকর আঞ্চলিক সহযোগিতা গঠনের গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
মোমেন দুই দেশের অর্থনীতির মধ্যে বিদ্যমান পরিপূরকতাগুলোকে কাজে লাগাতে পারস্পরিক স্বার্থে উদ্যোগ ও সহযোগিতার আহ্বান জানান।
তিনি অপার সম্ভাবনায় সমৃদ্ধ বাংলাদেশের পর্যটন খাতের উন্নতির জন্য আরও থাই সহায়তার অনুরোধ করেন।
মোমেন দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও গভীর করতে বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন উদ্যোগ, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ খাত, স্বাস্থ্য ও ওষুধ খাতে আরও থাই বিনিয়োগকে উৎসাহিত করেন।
থাই স্থায়ী সচিব মনোনীত বাংলাদেশে বর্তমানে চলমান উচ্চ প্রবৃদ্ধি এবং ব্যাপক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করেন, যা দেশকে দ্রুত পরিবর্তিত করছে।
পারস্পরিক সুবিধাজনক সময়ে যৌথ কমিশন সভা করার ওপরও তিনি জোর দেন।
এছাড়াও তিনি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও ব্যবসাকে আরও শক্তিশালী করার জন্য একটি এফটিএ সম্পন্ন করার পরামর্শ দেন।
পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠক
সফররত থাইল্যান্ডের স্থায়ী সচিব-মনোনীত বাংলাদেশের আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতির ভূয়সী প্রশংসা করেন, যা তিনি শনিবার চট্টগ্রামের বিনাজুরির একটি মন্দিরে দেখেছিলেন।
রবিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এসব কথা বলেন।
তার প্রথম সফরে তাকে স্বাগত জানিয়ে পররাষ্ট্র সচিব উদ্বূত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য, বিশেষ করে ইউরোপে মহামারি এবং ক্রমবর্ধমান সংঘর্ষের কারণে একটি শক্তিশালী আঞ্চলিক দৃষ্টিভঙ্গি জোরদার করার গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
খাদ্য ও জ্বালানির নিরাপত্তাহীনতা, সরবরাহ শৃঙ্খল বিঘ্নিত হওয়া, মন্দার হুমকির কারণে উদ্ভূত সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি প্রতিবেশিদের মধ্যে আরও সমন্বয় ও ফলপ্রসূ সহযোগিতার আহ্বান জানান।
এই বছরের মার্চ মাসে ব্যাংককে দ্বিতীয় ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) এর সফল আয়োজনে তার সন্তুষ্টি প্রকাশ করে। পররাষ্ট্র সচিব দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের কাঙ্ক্ষিত গতি বজায় রাখার জন্য এই জাতীয় প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখার উপর জোর দেন।
তিনি পারস্পরিক সুবিধাজনক তারিখে ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য তৃতীয় এফওসি-র জন্য থাই স্থায়ী সচিব-মনোনীতকে আমন্ত্রণ জানান।
পররাষ্ট্র সচিবও রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে আরও সক্রিয় থাই সমর্থন চেয়েছেন।