শ্রম আইন সংশোধনে কিছু কিছু বিষয়ে নীতি-নির্ধারক পর্যায়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।
তিনি বলেন, শ্রম আইন যাতে আরও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হয়, সে বিষয়ে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) কিছু পরামর্শ দিয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ মে) সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আজ আমাদের আলোচনা শেষ হয়েছে। আমরা শ্রম আইন সংশোধন করছি। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা এ বিষয়ে কিছু পরামর্শ (সাজেশন) দিতে চায়। যে আইনটি হচ্ছে, সেটি যাতে আরও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হয় এবং আইএলওর বিশেষজ্ঞ কমিটির পরামর্শগুলো যাতে এতে অন্তর্ভুক্ত (কমপ্লায়েন্ট) করা হয়, মূলত তারা সেজন্য পরামর্শগুলো দিতে চায়। সেই বিষয়ে তাদের বক্তব্য ছিল।
তিনি বলেন, ' সরকারের পক্ষ থেকে আইএলওর সঙ্গে সমন্বয়ের চেষ্টা চালিয়ে যেতে চাচ্ছি আমরা। সেজন্যই মূলত আমরা তিন দিন ধরে সেটা (শ্রম আইনের খসড়া) নিয়ে আলোচনা করেছি। এখানে মূলত কিছু ইস্যুতে সংশোধনী (আমেন্ডমেন্টে) থাকার কথা বলেছেন।'
আরও পড়ুন: আইনগত সহায়তা পাওয়া করুণা নয় অধিকার: আইনমন্ত্রী
আনিসুল হক বলেন, 'শ্রম আইন সংশোধনের বিষয়ে কিছু বিষয় এসেছিল। যেসব বিষয়ে নীতিনির্ধারক পর্যায়ে সিদ্ধান্ত দিতে হবে। সেটি আমি বলেছি নীতিনির্ধারণ পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে সেটার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। আমরা গ্রহণ করব কী করব না।’
তিনি আরও বলেন, কিছু কিছু বিষয়ে ত্রিপক্ষীয় কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে। তাদের বক্তব্য নোট করেছি, তাদের বক্তব্য সেখানে তুলে ধরব। সেখানে আলোচনার মাধ্যমে আমাদের দেশের বাস্তবতায় গ্রহণযোগ্য কি না- সেই সিদ্ধান্ত আমরা নেব। কিছু কিছু ইস্যু আছে, যেগুলো মনে হয়েছে গ্রহণযোগ্য, সেগুলো আমরা গ্রহণ করেছি। এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, সেজন্য এ বিষয়ে আমি বিস্তারিত বলব না। কারণ বিস্তারিত বলতে গেলে হয়তো আমি কোথাও ভুল করব, সেজন্য আমি বলব না।
আইনমন্ত্রী বলেন, আমরা তিন দিন ধরে তাদের বক্তব্য শুনেছি। প্রত্যেকটা ইস্যু নিয়ে বিশদভাবে আলোচনা করেছি। মত বিনিময় করেছি। আমার মনে হয়, এ রকম মত বিনিময়ের মাধ্যমে আমরা যে সিদ্ধান্ত নিচ্ছি সেটা শুধু স্টেক হোল্ডারদের জন্যই ভালো নয়, বরং আমার মনে হয় এই আলোচনাটাই আন্তর্জাতিকমানের ক্ষেত্রে একটা উদাহরণ হয়ে থাকবে। আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে বলেও জানান তিনি।
আনিসুল হক বলেন, আইএলওর বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্যরা আমাদের আইনটা দেখেছেন ও পড়েছেন। এরপর তারা আন্তর্জাতিক মান নিয়ে কিছু সুপারিশ করেছেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, আমরা যে থ্রেডহোল্ড (ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের ক্ষেত্রে শ্রমিকদের সম্মতির হার) ১৫ শতাংশে নিয়ে এসেছি, তারা এটির প্রশংসা করেছেন। তারা চায় এটা আরও কমে আসুক। আমরা যে বাস্তবতার কথা বলেছি, আমরা ২০১৭ সালে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, এটা আমরা ক্রমান্বয়ে কমাব। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আমরা ক্রমান্বয়ে কমাচ্ছি। আমার মনে হয় আমাদের উভয় পক্ষের অবস্থান পরিষ্কার হয়েছে এবং উভয় পক্ষই সেই অবস্থা বুঝতে পেরেছে।
আরও পড়ুন: শ্রমিক অধিকার লঙ্ঘনের জরিমানার অংক বাড়ানো হয়েছে: আইনমন্ত্রী