সিলেট নগরীর বালুচর এলাকায় দেড় বছরের শিশু আলমগীর হত্যা মামলার ১৩ বছর পর তার সৎ পিতাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে সিলেট বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মো. শাহাদৎ হোসেন প্রামানিক চাঞ্চল্যকর এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের পেশকার (বেঞ্চ সহকারী) মো. আহম্মদ আলী।
দন্ডপ্রাপ্ত আসামির নাম চান মিয়া। তিনি দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর থানার ফরিকটিলা ধুপিপাড়ার (বাবুপাড়া) রশিদ আলীর ছেলে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, ঘটনার ১৩ বছর পূর্বে নেত্রকোণা জেলার পূর্বধলা থানার পূর্ব তিলাশপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদের মেয়ে বিলকিছ বেগম পূর্বের স্বামীর তিন সন্তানসহ চান মিয়ার সঙ্গে সংসার পেতেছিলেন।
কিন্তু আগের স্বামীর সন্তানদের অন্যত্র রাখা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর দ্বন্দ্ব চলছিল। এক পর্যায়ে ২০১০ সালের ৩১ আগস্ট বিলকিছ বেগমের দেড় বছরের ছেলে আলমগীরকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পালিয়ে যায় চান মিয়া।
১ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টার দিকে উত্তর বালুচর আল-ইসলাহ পুরান ক্লাব মাঠ থেকে শিশু আলমগীরের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
আরও পড়ুন: নড়াইলে ফেনসিডিল বহনের দায়ে এক ব্যক্তির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
এ ঘটনায় বিলকিছ বেগম বাদি হয়ে একমাত্র চান মিয়াকে আসামি করে কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
২০১১ সালের ১৮ জানুয়ারি একমাত্র চান মিয়াকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।
২০১২ সালের ২ অক্টোবর আসামি চান মিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদালত এ মামলার বিচারকাজ শুরু করেন।
দীর্ঘ শুনানি ও ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) আদালত আসামি চান মিয়াকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০১ ধারায় ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ২ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট মো. ফখরুল ইসলাম ও আসামিপক্ষে ষ্টেইট ডিফেন্স অ্যাডভোকেট মো. আমিনুল ইসলাম মামলাটি পরিচালনা করেন।