বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, সুষম উন্নয়ন নিশ্চিত করতে ঐতিহ্যকে ধারণ ও লালন করে এগোতে হবে।
তিনি বলেন, ‘বাঙালি সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছে আমাদের ঋদ্ধ ঐতিহ্য। ঢাকার নান্দনিকতা ও ঐতিহ্যের জন্যই ঢাকা বারবার হয়েছে এ অঞ্চলের রাজধানী। ঢাকার মতোই এদেশের প্রতি অঞ্চলের রয়েছে আলাদা আলাদা কৃষ্টি, সংস্কৃতি ,সৌন্দর্য যা বাংলাদেশকে করেছে ঐশ্বর্য মন্ডিত।’
বুধবার(২১ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার অদূরে কেরাণীগঞ্জে অধ্যাপক হামিদুর রহমান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও আলিয়স ফ্রঁসেজের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘পুরান ঢাকা থেকে শেখা: জীবন্ত ঐতিহ্য সমূহের ভবিষ্যৎ অনুসন্ধান’ শীর্ষক প্রদর্শনীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: ২০২৬ সালের মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে: নসরুল হামিদ
ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, নদী, জীবন-জীবিকা ও শহরের রয়েছে অবিচ্ছিন্ন সম্পর্ক। ঢাকার সঙ্গে বুড়িগঙ্গার রয়েছে এমনই একটি আত্মীয়তা। বুড়িগঙ্গাকে ঘিরেই ঢাকা বেড়েছে, বিকশিত হয়েছে। ঢাকার স্থাপত্যশৈলী ও ঐতিহ্য সমন্বিত এবং সম্মিলিতভাবে রক্ষা করতে হবে। কোন অবস্থাতেই একে ঝুঁকিতে পড়তে দেওয়া ঠিক হবে না।
ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মারি মাসদুপুয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ফরাসগঞ্জ ছিল ফরাসিদের আবাসস্থল।
মোগল আমলের রূপান্তর এবং আশেপাশের এলাকা সমূহের অর্থনৈতিক চালিকাশক্তির বিবর্তন, আরমানিটোলা পাড়ার আশেপাশের প্রকাশ্য উন্মুক্ত স্থানগুলোর শ্রেণীবিন্যাস, শাখারী কারিগরদের নির্মাণশৈলী ও হারানো কারুকাজ ধরে রাখা , তাতিবাজারের সোনার গহনা নির্মাণ শৈলী, বাংলা বাজারে বই ও বাংলা ভাষা এখনো যেভাবে ধরে রাখা হয়েছে , গোল তালাবের আকারে পুরান ঢাকার ঘন বুননে বিরল মুরুদ্যান, মঙ্গলাবাসরে জমিদারের প্রসারের রূপান্তর এবং পলাশগঞ্জের পার্শ্ববর্তী এলাকার কাঠের সঙ্গে কাগজের সংযোগের গল্প এই প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে।
আরও পড়ুন: দু-একদিনের মধ্যে ঢাকাসহ আশপাশের এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বাড়বে: নসরুল হামিদ
এ সময় অন্যানের মধ্যে বক্তব্য দেন আলিয়াস ফ্রঁসেজ ঢাকা কেন্দ্রের পরিচালক ফ্রান্সিস গ্রজিন।
এই প্রদর্শনীটি ইনএসএ, প্যারিস লা ভিলেট, বুয়েট, ঢাকা, বিভিসিওএ, নাভি মুম্বাই, সি.এ.টি, ত্রিভান্দ্রম এবং মকপো বিশ্ববিদ্যালয় এবং দক্ষিণ কোরিয়ার স্থাপত্যের শিক্ষার্থীদের গ্রুপগুলোর দুই সপ্তাহরে স্থাপত্য বিষয়ক গবষেণার ফলাফল।
তারা পুরান ঢাকার সঙ্গে সর্ম্পকিত বিষয়গুলো নিয়ে অনুসন্ধান করার জন্য বিভিন্ন ওয়ার্কিং গ্রুপে বিভক্ত হয়ে কাজ করেছেন। এতে যেসব বিষয় সমূহ নিয়ে তারা অনুসন্ধান চালিয়েছেন সেগুলোর মধ্যে ছিল– পুরান ঢাকার বিপন্ন ঐতিহ্য, বৃত্তাকার র্অথনীতি, শহুরে কৃষি, জনসাধারণরে জন্যে স্থান বন্টন পদ্ধতি এবং পুরান ঢাকার করপোরেট সংস্কৃতি।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ইন্দোনেশিয়ার বিনিয়োগকে স্বাগত জানায় বাংলাদেশ: নসরুল হামিদ
এই বেগবান প্রবৃদ্ধির মাঝেই ঢাকা তার স্থাপত্য ও জীবন্ত ঐতিহ্য হারানোর ঝুঁকিতে রয়ছে। পুরান ঢাকা এবং বুড়িগঙ্গা নদীর মধ্যে একটি জটিল সম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে-যা এই মাঠ র্পযায়রে কর্মশালাটি এই সম্পর্কটিকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছে। একইসঙ্গে এই শহরের পুরোনো গোলকধাঁধায় এখনও বিকাশমান জীবন্ত ঐতিহ্যেরে বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছে। ৪৪ জন শিক্ষার্থী এবং ১২ জন পরামর্শদাতার একটি দল পুরোনো শহরের এই দিকগুলোকে চিত্রায়িত এবং নথিভুক্ত করতে একসঙ্গে কাজ করেছেন৷
এই সমীক্ষায় অন্তর্ভুক্ত করা দিকগুলো হলো- মুঘল আমলের মহল্লা থেকে বড় কাটরার রূপান্তর এবং আশেপাশের এলাকা সমূহের জন্যে এর একটি অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি হিসেবে রূপান্তর, এই প্রক্রিয়ায় এর আসল কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলা, আরমানি টোলা পাড়ার আশেপাশে প্রকাশ্য উন্মুক্ত স্থানগুলোর শ্রেণিবিন্যাসের গবেষণা, শাঁখারী কারিগরদের কাছ থেকে শাঁখারী চুড়ি তৈরির হারানো কারুকাজ শেখার পাশাপাশি বাঙালি সংস্কৃতির ঐতিহ্য ধরে রাখা, তাঁতী বাজারের সোনার চকচকে এই পাড়ায় নির্মিত ঐতিহ্যকে দ্রুত গতিতে রূপান্তরিত করা, এর সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার। বাংলাবাজারে বই ও বাংলা ভাষা এখনও যেভাবে ধরে রাখা হয়েছে, গোল তালাবের আকারে পুরান ঢাকার ঘন বুননের বিরল মরুদ্যান, মঙ্গলাবাসরে জমিদারের প্রাসাদের রূপান্তর এবং ফরাশগঞ্জরে পার্শ্ববর্তী এলাকার কাঠের সঙ্গে কাগজের সম্পর্কের গল্প।
প্রদর্শনীটি চলবে শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত। প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে প্রদর্শনীটি।
আরও পড়ুন: লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হলে পেট্রোবাংলার কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে: নসরুল হামিদ