স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে ডিসিদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমরা বলেছি একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন, যেটা দেশবাসী চাচ্ছে, সারা বিশ্বও সেভাবে তাকিয়ে আছে। একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য আপনাদের (ডিসি) ভূমিকাই মুখ্য হবে।
বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের তৃতীয় ও শেষ দিনের ষষ্ঠ অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
জননিরাপত্তা বিভাগ, সুরক্ষা সেবা বিভাগ এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ডিসিদের এই কার্য-অধিবেশন হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'আমরা বলেছি আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী এখন যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম। তাদের দেশপ্রেম, তাদের অভিজ্ঞতা, তাদের দক্ষতা...তারা এখন পরিপূর্ণ। কাজেই নির্বাচনের সময় যা প্রয়োজন, তাদের অভিজ্ঞতা ও তাদের দক্ষতা দিয়ে যেকোনো পরিস্থিতি তারা মোকাবিলা করতে পারবে।'
তিনি বলেন, 'বস্তুত সেই সময় তো আমাদের করণীয় কিছু থাকবে না। মন্ত্রণালয় শুধু রুটিন ওয়ার্ক করবে। মূল দায়িত্বে থাকবে ইলেকশন কমিশন। নিরাপত্তা বাহিনী তাদের কাছেই ন্যস্ত হবে।'
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ২ উপজাতি তরুণীকে ধর্ষণের পর হত্যা: একজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'তাই আমরা বলেছি একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন যেটা দেশবাসী চাচ্ছে। সারা বিশ্বও সেইভাবে তাকিয়ে আছে। একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য আপনাদের ভূমিকাই মুখ্য হবে। সেজন্য আপনারা তৈরি থাকুন, যাতে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে পারেন।'
তিনি বলেন, 'মাদক নিয়ে কথা বলেছি। এটা আমাদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ। মাদকের প্রতিরোধে আমরা তিন ভাগে ভাগ করে কাজ করছি। প্রথমে আমাদের চাহিদা কমাতে হবে। এ বিষয়ে তারা (ডিসি) মুখ্য ভূমিকা পালন করতে পারবেন।
আমরা বলেছি, স্কুল, কলেজ, মসজিদ মাদরাসায় সব জায়গায় যেন জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে সবসময় খেয়াল রাখেন। মাদকের চাহিদা কমানোর জন্য তারা যাতে কাজ করেন সেই কথা বলেছি। এটা না করতে পারলে আমাদের যে স্বপ্ন ২০৪১, ২০৩০; হয়তো অসম্পূর্ণ থেকে যাবে যদি আমরা এই জায়গাটিতে কাজ না করি।'
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের টলারেন্স নীতির কথা তাদের বলেছি। পাসপোর্ট ইমিগ্রেশনে আমরা আধুনিক জগতে চলে গেছি। ই-পাসপোর্ট ই-ভিসা ই-গেট এগুলোতে আমরা চলে গেছি সেগুলোর কথা আমি বলেছি।'
বিজিবির আওতার আট কিলোমিটার বাইরে গুলি হলে সে বিষয়ে প্রশাসনের তদন্তসহ ডিসিদের অন্যান্য প্রস্তাবের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমাদের সিনিয়র সচিব সে বিষয়ে বলেছেন তিনি এই প্রস্তাবগুলো পরীক্ষা নিরীক্ষা করে তিনি সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবেন।'
এক প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, 'বাংলাদেশের মানুষ কোনদিনও জঙ্গিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়নি। বিদেশ থেকে নানা ধরনের ইঙ্গিত কিংবা ষড়যন্ত্র...আমাদের এখানে দেয়ার প্রচেষ্টা হচ্ছিল যেটা আমি সবসময় বলে আসছি। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী তাদের কাজটি সঠিকভাবে করতে পেরেছে। কাজেই জঙ্গি আমরা দমন করেছি। কিন্তু আমরা গোড়া থেকে উঠিয়ে দিতে পারিনি। এখনও মাঝে মাঝে দু-একটি ঘটনা ঘটছে। (জঙ্গিরা) আমাদের এখান থেকে চলে গিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের ওখানে যোগাযোগ করছে। সেই ঘাঁটিটাও আমরা সমূলে বিনষ্ট করে দিয়েছি।'
আরও পড়ুন: অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক হলেন ৬ পুলিশ কর্মকর্তা
আরেক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'আমি তো সবসময় বলে আসছি, রোহিঙ্গারা আমাদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে যাবে, যদি তারা দীর্ঘদিন এখানে থাকে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘসহ সব জায়গায় আপিল করছেন।'
তিনি বলেন, 'এই জনগোষ্ঠী সবকিছু হারিয়ে, সবকিছু ফেলে এসেছে। কাজেই জঙ্গিরা এদের প্রলুব্ধ করতে পারে। প্রধানমন্ত্রী এটা ধারণা করতে পেরেছেন বলেই, তিনি তাদের ফিরিয়ে নেয়ার জন্য সব সময় চাপ দিয়ে আসছেন।'
রোহিঙ্গাদের একটি অংশ ইয়াবা পাচারসহ নানা ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত রয়েছে জানিয়ে আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, 'আমাদের এপিবিএন, আমাদের সেনাবাহিনী, আমাদের গোয়েন্দা বাহিনী সবাই সক্রিয় আছে আমার মনে হয় যা ঘটছে এর আর বিস্তার ঘটবে না।'
আরও পড়ুন: তথ্য সুরক্ষায় তথ্য সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করতে হবে: আইনমন্ত্রী