ভূমিহীন হওয়ায় বরিশালে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে চাকরি অনিশ্চিত হওয়া সেই আসপিয়া ইসলাম কাজলকে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের আওতায় জমিসহ একটি ঘর দেয়া হচ্ছে। এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে পড়েছে; পুলিশে চাকরি পেয়েছেন আসপিয়া।
শুক্রবার বিকেলে বরিশালের হিজলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বকুল চন্দ্র কবিরাজ বলেন, জেলা প্রশাসক (ডিসি) স্যার আমাকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে আসপিয়ার ভূমিহীন পরিবারকে জমি ও ঘর দেয়ার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমি সকালে আসপিয়াকে অফিসে ডেকে তার সমস্যার বিষয়ে বিস্তারিত শুনেছি
মুজিববর্ষ উপলক্ষে চলমান আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় পরিদর্শন শেষে জমি চূড়ান্ত হলেই তার পরিবারকে একটি বাড়ি ও জমি দেয়া হবে।
আরও পড়ুন: পুলিশি হেফাজত থেকে পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গা টেকনাফে গ্রেপ্তার
বকুল চন্দ্র কবিরাজ আরও বলেন, চাকরিতে নিয়োগের মেয়াদ কতদিন তা জানি না। তবে ডিসি স্যারের নির্দেশিত সময়ের মধ্যে আমি আসপিয়া বা তার মায়ের নামে জমি ও বাড়ি হস্তান্তরের চেষ্টা করব।
আছপিয়ার পুলিশে চাকরি হয়েছে এমন তথ্য বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লেও বিষয়টি গুজব বলেছেন খোদ আসপিয়া। এ ব্যাপারে আসপিয়া বলেন, ফেসবুকে বিভিন্ন স্থানে আমার চাকরী হয়েছে এমন পোস্ট দেখেছি। শুনেছি সাইবার ৭১ নামের একটি আইডি থেকে আমার চাকরী হয়েছে এমন পোস্ট দেয়া হয়েছে। তবে আমি এই বিষয়ে কিছু জানিনা, চাকরী হয়েছে কিনা সেই সংশ্লিষ্ট কোনো চিঠি বা খবর আমাকে জানানো হয়নি।
তবে বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি এসএম আখতারুজ্জামান বলেন, আসপিয়ার নিয়োগের বিষয়টি মোটেও সহজ নয়।
প্রসঙ্গত, পুলিশে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে বরিশাল জেলায় ১০ সেপ্টেম্বর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পুলিশ সদর দপ্তর। ওই বিজ্ঞপ্তিতে বরিশাল জেলা থেকে টিআরসি পদে সাত জন নারী ও ৪১ জন পুরুষ নেয়ার কথা উল্লেখ করা হয়। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী হিজলা থেকে অনলাইনে আবেদন করেন আসপিয়া ইসলাম।
আরও পড়ুন: ৯৯৯ এ কল: পুলিশের হস্তক্ষেপে হাসপাতাল থেকে মৃত স্ত্রীর লাশ পেলেন ভ্যানচালক
এরপর,১৪, ১৫ ও ১৬ নভেম্বর বরিশাল জেলা পুলিশ লাইন্সে অনুষ্ঠিত শারীরিক যোগ্যতা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৭ নভেম্বর লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন আসপিয়া। ২৩ নভেম্বর প্রকাশিত লিখিত পরীক্ষার ফলাফলেও কৃতকার্য হন।২৪ নভেম্বর পুলিশ লাইন্সে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মেধা তালিকায় পঞ্চম হন আসপিয়া।
২৬ নভেম্বর পুলিশ লাইন্সে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ২৯ নভেম্বর মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ঢাকার রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে চূড়ান্ত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। সেখানে কৃতকার্য হন আছপিয়া।তবে চূড়ান্ত নিয়োগের আগে পুলিশ ভেরিফিকেশনে নিয়োগ থেকে ছিটকে পড়েন তিনি। কারণ তিনি বরিশাল জেলার স্থায়ী বাসিন্দা নন। এই নিয়োগ পাওয়ার অন্যতম শর্ত ছিল জেলার স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
বুধবার হিজলা থানার উপ- পরিদর্শক (এসআই ) মো. আব্বাস ভেরিফিকেশনে আসপিয়া বরিশাল জেলার স্থায়ী বাসিন্দা নয় উল্লেখ করে প্রতিবেদন জমা দেন।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় প্রিজাইডিং অফিসার ও পুলিশকে কুপিয়ে জখম, ভোট গ্রহণ বন্ধ