শনিবার জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৬তম মৃত্যুবার্ষিকী। বিদ্রোহী কবির জীবন ও কর্মের স্মরণে দিবসটি পালনে বিভিন্ন সংগঠন দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
সকাল ৭টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে কবির সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা কবির সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে তাকে সম্মান জানান। কবি নজরুল ইনস্টিটিউট এবং মন্ত্রণালয়ের অধীন অন্যান্য বিভাগ ও সংস্থার সহযোগিতায় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এই সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কর্তৃপক্ষও মহান কবির সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে, পরে ঢাবি উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি র্যালি বের হয়।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সকাল ৯টায় কাজী নজরুলের কবরস্থানে বিশেষ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে।
আরও পড়ুন: গুগল ডুডলে কাজী নজরুলের ১২১তম জন্মবার্ষিকী
কবি নজরুল ইনস্টিটিউট বিকাল ৫টায় ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে এক বিশেষ আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে, যেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো.আবুল মনসুর।
সন্ধ্যা ৭টার দিকে সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানট ধানমন্ডির মিলনায়তনে বিশেষ সাংস্কৃতিক শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে। অনুষ্ঠানটি একযোগে তাদের ফেসবুক পেইজ এবং ইউটিউব চ্যানেলে সম্প্রচার করা হবে এবংঅনুষ্ঠানটি প্রয়াত নজরুল শিল্পী সোহরাব হোসেনকে উৎসর্গ করা হয়েছে।
বিদ্রোহী কবির ৪৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শাহবাগ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও হাসপাতাল (বিএসএমএমইউ) এর বি ব্লকের ১১৭ নম্বর কেবিনে পর্দা উঠবে। যে কক্ষে কবি তার শেষ দিনগুলো কাটিয়েছেন। শনিবার দর্শনার্থীদের জন্য কেবিনটি খুলে দেয়া হবে।
বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) সহ বেশ কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেল, বাংলাদেশ বেতারসহ রেডিও স্টেশন এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্ম জাতীয় কবির জীবন ও কর্মের স্মরণে বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে।
বিদ্রোহী করি কাজী নজরুল ১৮৯৯ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বর্ধমানের চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কবি তার জ্বালাময়ী কবিতার মাধ্যমে ঔপনিবেশিক শাসনের অন্যায় ও দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে মানুষকে সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন।
নজরুল ইনস্টিটিউট অনুসারে, কাজী নজরুল তার বাকশক্তি হারানোর আগে ২১ বছরের কর্মজীবনে দুই হাজার ৬০০টি গান, ৬০০টি কবিতা, তিনটি উপন্যাস এবং ৪৩টি প্রবন্ধ লিখেছিলেন।
আরও পড়ুন: শতকণ্ঠে কাজী নজরুল ইসলামের ‘বিদ্রোহী’ কবিতা
বাবা মৃত্যুর পর কবি কাজী নজরুল একটি সামান্য বেতনে চাকরি পান এবং পরিবারের খরচ চালাতে তিনি একটি মসজিদে মুয়াজ্জিন হিসেবেও কাজ করেন।
নয় বছর বয়সে, চুরুলিয়ায় 'লেটো' দরে যোগ দেয়ার জন্য তাকে স্কুল ছেড়ে দিতে হয়েছিল। ১৯ ১৭ সালে একজন সৈনিক হিসেবে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। এর কয়েক বছরের মধ্যে কাজী নজরুল তার সাহিত্যিক জীবন শুরু করেন। ১৯২১ সালে তার ‘বিদ্রোহী’কবিতা প্রকাশিত হয়েছিল। এক বছর পর তিনি ‘ধূমকেতু’ নামে একটি পাক্ষিক পত্রিকা প্রকাশিত করেন।
কাজী নজরুল এই দিনে ঢাকায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একটি মসজিদের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়।