প্রায় দেড় যুগ আগে চারদলীয় জোট সরকারের আমলের ১০ ট্রাক অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় করা মামলার ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদন) এবং আসামিদের আপিল শুনানির জন্য আগামী ১৮ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট। রাষ্ট্রপক্ষের সময় আবেদন মঞ্জুর করে বুধবার বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি ফাতেমা নজীবের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে মামলার শুনানির প্রস্তুতির জন্য রাষ্ট্রপক্ষে সময় আবেদন করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ। সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল নির্মল কুমার দাস। পরে বশির আহমেদ বলেন, এ মামলায় বিচারিক আদালত ২০১৪ সালে রায় দেয়ার পর এ মামলার নথি ডেথ রেফারেন্স হিসাবে হাইকোর্টে পাঠানো হয়। একই সঙ্গে বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে আসামিপক্ষ। পরে এ মামলার পেপারবুক (মামলার যাবতীয় নথি) প্রস্তুত হওয়ার পর এখন শুনানির জন্য কার্যতালিকায় এসেছে।
২০০৪ সালের ১ এপ্রিল মধ্যরাতে চট্টগ্রামের সিইউএফএল জেটিঘাটে খালাসের সময় পুলিশ সদস্যরা আটক করে ১০ ট্রাক সমপরিমাণ অস্ত্র। এ ঘটনায় ২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি চোরাচালানের ঘটনায় করা বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় ১৪ জনকে ফাঁসিতে ঝোলানোর রায় দেন আদালত। অস্ত্র আইনের পৃথক দুটি ধারায় ১৪ জনের প্রত্যেককে দেয়া হয় যাবজ্জীবন ও সাত বছর করে দণ্ডাদেশ।
মামলায় (বিশেষ ক্ষমতা আইনে) সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী (মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ড কার্যকর), সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর এবং ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়া, এনএসআইর সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, এনএসআই’র সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আব্দুর রহিম (গত বছরের ১৫ আগস্ট কারাবন্দি অবস্থায় ঢামেকে মৃত্যুবরণ করেন), ডিজিএফআই’র সাবেক পরিচালক (নিরাপত্তা) উইং কমান্ডার (অবসরপ্রাপ্ত) সাহাবুদ্দিন আহমেদ, এনএসআইর সাবেক উপ-পরিচালক মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) লিয়াকত হোসেন, এনএসআইর সাবেক মাঠ কর্মকর্তা আকবর হোসেন খান, রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সার কারখানা চিটাগং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডের (সিইউএফএল) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহসিন উদ্দিন তালুকদার, সিইউএফএল’র সাবেক মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) কেএম এনামুল হক, সাবেক ভারপ্রাপ্ত শিল্পসচিব নুরুল আমিন, চোরাচালানী হিসেবে অভিযুক্ত হাফিজুর রহমান, অস্ত্র খালাসের জন্য শ্রমিক সরবরাহকারী দীন মোহাম্মদ ও ট্রলার মালিক হাজি আবদুস সোবহানকে ফাঁসিতে ঝোলানোর রায় দেন আদালত। বিচারিক আদালতে রায়ের পর মামলার ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়।