টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মো. ফরহাদ হোসেন দীর্ঘ ৫২ ঘন্টা পর অবমুক্ত হয়েছেন। শুক্রবার দুপুর ১টার দিকে তিনি নিজ কার্যালয় থেকে অবমুক্ত হন।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ২২ জন কর্মচারী তাদের চাকরি স্থায়ীকরণসহ ১৪ দফা দাবিতে বুধবার সকাল ৯টা থেকে ভিসিকে তার কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রেখেছিলেন।
পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী মিছিল নিয়ে কার্যালয়ে গিয়ে ভিসিকে মুক্ত করেন।
বিকালে ভিসি মো. ফরহাদ হোসেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. এএসএম সাইফুল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক প্রক্টর মাসুদার রহমান ও সাবেক সভাপতি শাহীন উদ্দিনের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করে বিধি মোতাবেক নিয়োগ প্রক্রিয়া পরিচালনার সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন।
ভিসি মো. ফরহাদ হোসেন জানান, ২০১৯ সালে তৎকালীন ভিসি ২২ জন তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীকে এডহক ভিত্তিতে নিয়োগ দিয়ে গেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশন থেকে দুই দফায় ১৫টি পদের অনুমোদন পাওয়া গেছে। ওই ১৫ পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে।
আরও পড়ুন: ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবাহিত ছাত্রীদের হল ছাড়ার নোটিশ স্থগিত
এ সময় তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী সমিতির পক্ষ থেকে কিছু দাবি উত্থাপন করা হয়। তারা ১৫ পদের বিপরীতে ২২ জনকে নিয়োগ দেয়ার দাবি তুলেন। তারা কোন লিখিত পরীক্ষা ছাড়া শুধু মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের চাকরি স্থায়ী করণের দাবি করছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ তাদের সঙ্গে কয়েক দফা কথা বলেছেন। কিন্তু তারা তাদের দাবিতে অনড়।
শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী মিছিল নিয়ে ভিসির কার্যালয়ে আসেন। তারা দুর্নীতিমুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দেন। মিছিলটি ভিসির কার্যালয়ে সামনে এলে সেখানে অবস্থান ধর্মঘটে থাকা কর্মচারীরা চলে যান। তারপর শিক্ষার্থীরা তালা খুলে ভিসির ভিতরে গিয়ে ভিসিকে বাইরে আসার অনুরোধ করেন। তখন ভিসি তাদের সাথে বাইরে না এলেও দুপুরে ছাত্রদের সাথে নিয়ে মসজিদে জোহরের নামাজ আদায় করেন।
নামাজ শেষে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে ভিসি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমি গর্বিত, আমি এমন কিছু সন্তান পেয়েছি, যারা সত্য, ন্যায় ও বাস্তবতা বুঝতে পেরেছে। তোমাদের মত সন্তানরা থাকলে এই বিশ্ববিদ্যালয় অনেক দুর এগিয়ে যাবে।
মিছিলে নেতৃত্বদানকারী শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান বলেন, অযৌক্তিক কিছু দাবি আদায়ের জন্য তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীরা ভিসি স্যারকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিল। এটা খুবই দুঃজনক। যারা এটা করেছে আমরা তাদের শাস্তির দাবি করছি।
তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী সমিতির সভাপতি এসএম মাহফুজুর রহমান জানান, ভিসিকে কার্যালয় থেকে বাইরে বের হওয়ার সময় তারা কোন বাধার সৃষ্টি করেননি। অবস্থান ধর্মঘট শুরুর পরেই ভিসিকে তারা জানিয়েছিলেন সকালে হাটা বা বিশেষ কোন প্রয়োজনে তিনি কার্যালয়ের বাইরে বের হতে পারবেন। তবে তাদের কর্মবিরতি এখনো অব্যহত আছে।
দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ নেতাদের কক্ষ থেকে পিস্তল উদ্ধারের দাবি