এক রাতে সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ জেলায় ৮ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৪ জন।
শুক্রবার রাত ৮টা থেকে শনিবার ভোর সাড়ে পাঁচটার মধ্যে গাজীপুর, চট্টগ্রাম, সিলেট, নরসিংদী ও দিনাজপুরে এ ঘটনাগুলো ঘটে।
গাজীপুরে নিহত ২
গাজীপুরের ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে পিকআপ ভ্যানচাপায় মোটরসাইকেলের ২ আরোহী নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার রাত সাড়ে আটটার দিকে ঘটনাটি ঘটে।
নিহতরা হলেন- মঞ্জুর হোসেন (৪১) ও হাসান (৪০)। নিহতরা কোনাবাড়ি এলাকায় ঝুট ব্যবসা করতেন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের বিস্তারিত পরিচয় জানাতে পারেনি পুলিশ।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কোনাবাড়ি থানার ওসি কে এম আশরাফ উদ্দিন জানান, শুক্রবার রাত সাড়ে আটটার দিকে কোনাবাড়ির দিক থেকে গাজীপুরের চৌরাস্তার দিকে তিন যুবক একটি মোটরসাইকেলে যাচ্ছিলেন। মোটরসাইকেলটি কড্ডা বাইমাইল এলাকায় পৌঁছালে পেছন থেকে আসা একটি পিকআপ ভ্যান মোটরসাইকেলটিকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই মঞ্জুর হোসেন ও হাসান মারা যান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। অপরজনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়।
চট্টগ্রামে কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
চট্টগ্রামের নিমতলা বিশ্বরোডে রাহুল সাহা (২৮) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন অর্পিতা (২১) নামের এক নারী।
শুক্রবার রাত ১১টার দিকে জেলার বন্দর থানাধীন নিমতলা বিশ্বরোড ফায়ার সার্ভিস ক্যাম্পের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত রাহুল সাহা সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের বার আউলিয়া এলাকার বাসিন্দা। চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লার রাজা পুকুর পাড় এলাকায় বসবাস করতেন তিনি।
আহত অর্পিতা নগরীরর কোতোয়ালি এলাকার এনায়েত বাজারের গোয়ালপাড়ার বাসিন্দা।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন বন্দর থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুরুল কাদের মজুমদার।
এ বিষয়ে বিশ্বরোড ফায়ার সার্ভিস ক্যাম্পের সদস্য মফিজুর রহমান বলেন, ‘হঠাৎ শব্দ শুনে গিয়ে দেখি রাস্তার মধ্যে রক্তাক্ত অবস্থায় একটি মোটরসাইকেলসহ যুবক ও যুবতী পড়ে আছেন। সঙ্গে সঙ্গে তাদের চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের নেওয়ার পর চিকিৎসক ছেলেটিতে মৃত ঘোষণা করেন এবং মেয়েটিতে ওয়ার্ডে ভর্তি করে নেন।’
সিলেটে সড়ক দূর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
সিলেটের জৈন্তাপুরে মোটরসাইকেলের সঙ্গে অটোরিকশার সংঘর্ষে প্রবাস ফেরত যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার রাত ১১টার দিকে উপজেলার দরবস্ত ইউনিয়নের দরবস্ত-চতুল সড়কের সরকারি খাদ্যগুদাম-সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ইয়াসির আরাফাত (১৮) দরবস্ত ইউনিয়নের করগ্রামের বাসিন্দা আব্দুস শুক্কুরের ছেলে। সম্প্রতি কাতার থেকে দেশে আসেন তিনি।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জৈন্তাপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম জানান, শুক্রবার রাতে আরাফাত মোটরসাইকেলযোগে দরবস্ত বাজার থেকে বাড়িতে ফিরছিল। খাদ্যগুদাম-সংলগ্ন এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা সিএনজিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে তার মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনার পর গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় স্থানীয়রা। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত পৌনে ২টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
নরসিংদীতে বাস-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে ২ জন নিহত
নরসিংদীর পাঁচদোনায় বাস ও মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে গায়ক আহসান তানভীর পিয়ালসহ ২ জন নিহত হওয়ার ঘটেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন মাইক্রোবাসের আরও ৩ যাত্রী।
শনিবার ভোর পাঁচটার দিকে পাঁচদোনার ড্রিম হলিডে পার্কের সামনের সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- মাইক্রোবাসচালক সালাম (৪৩) ও যাত্রী আহসান তানভীর পিয়াল (২৬)। ‘ওড সিগনেচার’ মিউজিক ব্যান্ডের অন্যতম সদস্য ছিলেন আহসান তানভীর পিয়াল।
আহতরা হলেন- ঢাকার মহাখালী এলাকার আফতাব উদ্দিনের ছেলে আকিব (২৬), সিলেটের হবিগঞ্জ এলাকার খোরশেদ আলমের ছেলে সাকিব (২৬) ও চট্রগ্রামের পাথর ঘাটা এলাকার অনুপের ছেলে অমিত (২৭)। তারা প্রত্যেকেই মাইক্রোবাসের যাত্রী ছিলেন।
স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায়, ঢাকা থেকে সিলেটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা একটি মাইক্রোবাস ভোর ৫টার দিকে নরসিংদীর চৈতাব এলাকার ড্রিম হলিডে পার্কের সামনে পৌঁছালে হানিফ পরিবহনের এটি বাসের সঙ্গে মুখোমুখী সংঘর্ষ হয়। এতে মাইক্রোবাসটি দুমড়ে মুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই মাইক্রোবাসের চালক সালাম ও পিয়াল নামের এক যাত্রী নিহত হন।
দিনাজপুরে চায়ের দোকানে ট্যাংক লরি, নৈশ প্রহরীসহ নিহত ২
দিনাজপুর জেলা সদরের কাউগাঁ মোড়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি ট্যাংক লরি রাস্তার পাশে চায়ের দোকানে ঢুকে পড়ায় এক নৈশ প্রহরীসহ ২ জন নিহত হয়েছেন।
শনিবার (১১ মে) ভোর সোয়া ৫টার দিকে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে৷
ট্যাংক লরিসহ চালক ও হেলপারকে আটক করেছে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরিদ হোসেন বলেন, ফুলবাড়ী উপজেলা হয়ে একটি ট্যাংক লরি গন্তব্যে যাওয়ার সময় জেলা সদরের কাউগাঁ মোড়ে সকাল সোয়া ৫টার দিকে চালক নিয়ন্ত্রণ হারান। এ সময় লরিটি রাস্তার পাশে আব্দুস সোবহান নামের একজনের চায়ের দোকানে ঢুকে পড়ে।
তিনি আরও বলেন, এতে চায়ের দোকানে অবস্থান করা নৈশ প্রহরী আজাহার আলী দুর্ঘটনাস্থলে নিহত হন। এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পর মারা গেছেন রানা নামে একজন ক্রেতা।
নিহত নৈশ প্রহরী আজাহার আলী (৬০) জেলা সদরের বিশ্বনাথপুর গ্রামের মৃত আজির হোসেনের ছেলে। ক্রেতা রানা (২৫) জেলা সদরের কাউগা হাটখোলা গ্রামের বাসিন্দা।
থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দুলু মিয়া জানান, খবর পেয়ে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে লরির চালক কুষ্টিয়া জেলার রাহিনী বটতলা মৃত আব্দুস সামাদ খন্দকারের ছেলে রাজু খন্দকার (২৯) এবং হেলপার একই জেলার বাসিন্দা শরিফুল ইসলামের ছেলে সোহাগকে (১৯) লরিসহ আটক করে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।