গুরুতর আহত অবস্থায় নিহত জোবায়েদ শেষ মুহূর্তে সিঁড়িঘরে দাঁড়িয়ে থাকা বর্ষার কাছে তাকে রক্ষার আকুতি জানিয়েছিলেন।
কিন্তু বর্ষা তখন রক্তাক্ত অবস্থায় ছটফট করতে থাকা জোবায়েদকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘তুমি না সরলে, আমি মাহীরের হব না।’
এরপরই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা যান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জোবায়েদ, জানিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে ডিএমপি অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এসএন নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, মাহীর ও বর্ষার মধ্যে প্রায় দেড় বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পরবর্তীতে বর্ষা জোবায়েদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন, যা মাহীর মেনে নিতে পারেননি।
এ বিষয়ে বারবার ঝগড়ার পর বর্ষা মাহীরকে জোবায়েদকে হত্যার জন্য উসকে দেন, বলেন নজরুল ইসলাম।
মাহীর এরপর তার বন্ধু আইলানকে পরিকল্পনার কথা জানায়। পরে তারা দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের বউবাজার এলাকা থেকে ৫০০ টাকায় একটি সুইচ-গিয়ার ছুরি কেনে।
ঘটনার দিন বর্ষা মাহীরকে জানিয়ে দেন, জোবায়েদ কখন টিউশনের জন্য তার বাসায় আসবেন।
জোবায়েদ ভবনে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে মাহীর তার মুখোমুখি হয়ে তর্কের একপর্যায়ে ব্যাগ থেকে ছুরি বের করে জোবায়েদের গলায় আঘাত করে হত্যা করেন।
ডিএমপি’র লালবাগ জোনের উপকমিশনার মল্লিক আহসান উদ্দিন সামি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে বর্ষা স্বীকার করেছেন, জোবায়েদের শেষ কথা ছিল, ‘আমাকে বাঁচাও।’
উত্তরে বর্ষা বলেন, ‘তুমি না সরলে, আমি মাহীরের হব না।’
সোমবার রাতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, পল্টন ও বংশাল এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তাররা হলেন, মাহীর রহমান (১৯), বারজিস শবনম বর্ষা (১৯) এবং ফারদিন আহমেদ আইলান (২০)।
রবিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পুরান ঢাকার বংশাল থানাধীন নূর বক্স লেন এলাকায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।
নিহত জোবায়েদ হোসাইন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ১৫তম ব্যাচের ছাত্র ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার হোমনা উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামে। সোমবার (২০ অক্টোবর) তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।