চলতি বছরের জুন মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজার শেয়ারের ৫০ শতাংশ দখল করে অ্যান্ড্রয়েড ইকোসিস্টেমকে ছাড়িয়ে গেছে আইফোন। সবচেয়ে বড় কনজুমার বেসের দেশটি এবার সবচেয়ে কম খরচে আইফোন সরবরাহ করছে। মূল্য শুরু হচ্ছে ৭৯৯ মার্কিন ডলার থেকে, যা প্রতি ডলার ১০৩.৯৬ টাকা রেটে বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৮৩,০৬২ টাকা।
স্টেটের উপর নির্ভর করে আইফোন-১৪ কেনার সময় প্রায় ৮.৫ শতাংশ থেকে ১৩ শতাংশ পর্যন্ত অতিরিক্ত কর ধার্য হবে। উদাহরণস্বরূপ, নিউইয়র্কের মতো জায়গায় আইফোন-১৪ মডেলের জন্য খরচ হবে ৮২৯ ডলার, যেখানে অতিরিক্ত রাষ্ট্রীয় ট্যাক্স বাবদ আরো ৭৪ ডলার অর্থাৎ প্রায় ৭,৬৯৩ টাকা। এতে ফোনের চূড়ান্ত মূল্য ৯০৩ ডলারে গিয়ে দাড়ায়, যা প্রায় ৯৩,৮৭৩ টাকা। সুতরাং এরপরেও দাম বাংলাদেশের তুলনায় ৫,৯২৭ টাকা কম। অন্যান্য মডেলগুলোর দাম-
আইফোন-১৪ প্লাস: ৮৯৯ মার্কিন ডলার (৯৩,৪৫৭ টাকা) থেকে শুরু
আইফোন-১৪ প্রো: ৯৯৯ মার্কিন ডলার (১,০৩,৮৫৩ টাকা) থেকে শুরু
আইফোন-১৪ প্রো ম্যাক্স: ১০৯৯ মার্কিন ডলার (১,১৪,২৪৮ টাকা) থেকে শুরু |
পড়ুন: সেরা ১০টি মোবাইল ক্রিকেট গেম ২০২২: ক্রিকেট দুনিয়া যখন মুঠোফোনে
কানাডা
আইফোন গত এক বছরে কানাডার বাজার শেয়ারের ৫৯.৩৩ শতাংশ দখল করে আছে। এখানেও বিভিন্ন স্টেটগুলোর সাথে সাথে আইফোন-১৪ ক্রয়ের উপর অতিরিক্ত কর ধার্য হবে। উদাহরণস্বরূপ, অন্টারিওতে আইফোন-১৪-এর জন্য ১০৯৯ কানাডিয়ান ডলার খরচ হবে। প্রতিটি কানাডিয়ান ডলার ৭৯.০৭ টাকা করে হলে বাংলাদেশি টাকায় এর দাম হয় ৮৬,৬২৪ টাকা। এর সাথে অতিরিক্ত রাষ্ট্রীয় ট্যাক্স হিসাবে আরও ১৪৩ ডলার (১১,৩০৮ টাকা) যুক্ত হবে। ফলে চূড়ান্ত মূল্য দাড়াবে ১২৪২ ডলার বা ৯৮,২০৬ টাকা; তাও বাংলাদেশের তুলনায় প্রায় দেড় হাজার টাকা কম। অন্যান্য মডেলগুলোর দাম-
আইফোন-১৪ প্লাস: ১২৪৯ কানাডিয়ান ডলার (৯৮,৪৪৭ টাকা) থেকে শুরু
আইফোন-১৪ প্রো: ১৩৯৯ কানাডিয়ান ডলার (১,১০,২৭০ টাকা) থেকে শুরু
আইফোন-১৪ প্রো ম্যাক্স: ১৫৪৯ কানাডিয়ান ডলার (১,২২,০৯৩ টাকা) থেকে শুরু
পড়ুন: অ্যান্ড্রয়েড-১৪ ফোনে সরাসরি স্যাটেলাইট সংযোগ: যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন অধ্যায়
জাপান
সেপ্টেম্বর মাসে জাপানিজ মুদ্রা ইয়েনের দাম কমেছে ২৪ শতাংশ। সে অনুসারে, জাপানের ক্রেতারা আইফোন-১৪-এর জন্য আইফোন ১৩-এর মূল্যের ২০ শতাংশ বেশি অর্থ প্রদান করবে। তবে তা বাংলাদেশের দামের তুলনায় বেশ কম। প্রতি ইয়েন ০.৭৩ টাকা হারে আইফোন-১৪-এর জন্য বাংলাদেশিদের খরচ করতে হবে ৮৬,৮৯৫ টাকা, যা জাপানের বাজারে ১১৯,৮০০ ইয়েন। অন্যান্য মডেলগুলোর মূল্য পড়ছে-
আইফোন-১৪ প্লাস: ১৩৪,৮০০ ইয়েন (৯৭,৭৭৪ টাকা) থেকে শুরু
আইফোন-১৪ প্রো: ১৪৯,৮০০ ইয়েন (১,০৮,৬৫৪ টাকা) থেকে শুরু
আইফোন-১৪ প্রো ম্যাক্স: ১৬৪,৮০০ ইয়েন (১,১৯,৫৩৪ টাকা) থেকে শুরু|
পড়ুন: চুরি হওয়া বা হারিয়ে যাওয়া স্মার্টফোন খুঁজে পাওয়ার উপায়
চীন
অ্যাপল তার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাজার মেইনল্যান্ড চীনে আইফোনের দাম অপরিবর্তিত রেখেছে। চলতি বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে চীনে স্মার্টফোন সেগমেন্টে অ্যাপল ৭০ শতাংশ মার্কেট শেয়ার দখল করেছে। এটি প্রথম ত্রৈমাসিকের ১২ শতাংশ বেড়েছে। চীনে আইফোন-১৪ সিরিজের দাম-
আইফোন-১৪: ৫৯৯৯ ইউয়ান (৮৯,৬৩৪ টাকা) থেকে শুরু
আইফোন-১৪ প্লাস: ৬৯৯৯ ইউয়ান (১,০৪,৫৭৫ টাকা) থেকে শুরু
আইফোন-১৪ প্রো: ৭৯৯৯ ইউয়ান (১,১৯,৫১৭ টাকা) থেকে শুরু
আইফোন-১৪ প্রো ম্যাক্স: ৮৯৯৯ ইউয়ান (১,৩৪,৪৫৮ টাকা) থেকে শুরু
পড়ুন: দেশের মোবাইল সিম বিদেশের মাটিতে ব্যবহার করার উপায়
হংকং
বছরের পর বছর ধরে হংকংয়ের স্মার্টফোন শিল্পের ৪০ শতাংশের উপরে বাজার শেয়ার ধরে রেখেছে আইফোন। হংকং-এ নতুন ফোনের দাম-
আইফোন-১৪: ৬,৮৯৯ হংকং ডলার (৯১,৩৮৪ টাকা) থেকে শুরু
আইফোন-১৪ প্লাস: ৭,৬৯৯ হংকং ডলার (১,০১,৯৮১ টাকা) থেকে শুরু
আইফোন-১৪ প্রো: ৮,৫৯৯ হংকং ডলার (১,১৩,৯০২ টাকা) থেকে শুরু
আইফোন-১৪ প্রো ম্যাক্স: ৯,৩৯৯ হংকং ডলার (১,২৪,৪৯৯ টাকা) থেকে শুরু |
পড়ুন: ফোর্বসের ‘থার্টি আন্ডার থার্টি’তে বাংলাদেশের প্রকৌশলী বাশিমা
দক্ষিণ কোরিয়া
আইফোন গত এক বছরে দক্ষিণ কোরিয়ার বাজার শেয়ারের ৩২.৯৭ শতাংশ অধিকার করে আছে। আইফোন-১৪-এর নতুন ফ্রন্ট ক্যামেরা দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপানিজ কোম্পানির মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এই প্রথমবারের মতো অ্যাপল আইফোনের ক্যামেরা নির্মাণে দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে কাজ করলো। দক্ষিণ কোরিয়ার বাজারে নতুন আইফোন সিরিজের মূল্য-
আইফোন-১৪: ১২,৫০,০০০ ওন (৯৩,২৯১ টাকা) থেকে শুরু
আইফোন-১৪ প্লাস: ১৩,৫০,০০০ ওন (১,০০,৭৫৪ টাকা) থেকে শুরু
আইফোন-১৪ প্রো: ১৫,৫০,০০০ ওন (১,১৫,৬৮১ টাকা) থেকে শুরু
আইফোন-১৪ প্রো ম্যাক্স: ১৭,৫০,০০০ ওন (১,৩০,৬০৭ টাকা) থেকে শুরু
পড়ুন: অরিজিনাল ফোন চেনার উপায়: ফোন কেনার আগে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখা জরুরি
থাইল্যান্ড
আইফোন গত ১২ মাসে থাইল্যান্ডের বাজারে আইফোনের শেয়ার ২৭.৭ শতাংশ। এখানে আইফোনের জন্য ভ্যাট ধার্য হচ্ছে ৭ শতাংশ করে। আর আইফোন সিরিজের মডেলগুলোর আসল দাম নির্ধারিত হয়েছে-
আইফোন-১৪: ৩২,৯০০ বাট (৯৩,৩৮০ টাকা) থেকে শুরু
আইফোন-১৪ প্লাস: ৩৭,৯০০ বাট (১,০৭,৫৭১ টাকা) থেকে শুরু
আইফোন-১৪ প্রো: ৪১,৯০০ বাট (১,১৮,৯২৪ টাকা) থেকে শুরু
আইফোন-১৪ প্রো ম্যাক্স: ৪৪,৯০০ বাট (১,২৭,৪৩৯ টাকা) থেকে শুরু |
পড়ুন: পুরনো স্মার্টফোনের আয়ু বাড়ানোর ৫টি টিপস
সিঙ্গাপুর
সিঙ্গাপুরে আইফোন-১৪ এর চূড়ান্ত দামের সাথে জিএসটি(গুড্স এ্যান্ড সার্ভিস ট্যাক্স) বাবদ আনুমানিক ৮৫ সিঙ্গাপুরিয়ান ডলার অন্তর্ভূক্ত থাকে। ৭৪.০২ টাকা করে রেট হলে বাংলাদেশি টাকায় এই ট্যাক্স খরচ দাড়ায় ৬,২৯২ টাকা। এরপরেও ১,২৯৯ সিঙ্গাপুরিয়ান ডলার (৯৬,১২০ টাকা) মূল্যের আইফোনের বেসিক মডেলটিতে বাংলাদেশের তুলনায় থেকে প্রায় সাড়ে ৩ হাজারের উপরে ছাড় থাকে। অন্যান্য মডেলগুলোর নির্ধারিত মূল্য-
আইফোন-১৪ প্লাস: ১,৪৯৯ সিঙ্গাপুরিয়ান ডলার (১,১০,৯১৯ টাকা) থেকে শুরু
আইফোন-১৪ প্রো: ১,৬৪৯ সিঙ্গাপুরিয়ান ডলার (১,২৫,৭১৮ টাকা) থেকে শুরু
আইফোন-১৪ প্রো ম্যাক্স: ১,৭৯৯ সিঙ্গাপুরিয়ান ডলার (১,৩৩,১১৮ টাকা) থেকে শুরু
পড়ুন: ফোন ফ্যাক্টরি রিসেট করার সঠিক পদ্ধতি
সংযুক্ত আরব আমিরাত
এই দেশটিতে আইফোন-১৪ এর চূড়ান্ত মূল্যের ভেতর প্রায় ১৯০ আমিরাতি ডলার (৫,৩৭৮ টাকা) ভ্যাট এবং সংবিধিবদ্ধ ফি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এরপরেও নতুন আইফোনের বেসিক মডেলটিতে বাংলাদেশের তুলনায় ২,০০০ টাকার বেশি ছাড়া পাওয়া যায়। বেসিক মডেলটির দাম ৩,৩৯৯ আমিরাতি ডলার (৯৬,২০১ টাকা) থেকে শুরু হয়। অন্যান্য মডেলগুলো দাম-
আইফোন-১৪ প্লাস: ৩,৭৯৯ আমিরাতি ডলার (১,০৭,৫২২ টাকা) থেকে শুরু
আইফোন-১৪ প্রো: ৪,২৯৯ আমিরাতি ডলার (১,২১,৬৭৩ টাকা) থেকে শুরু
আইফোন-১৪ প্রো ম্যাক্স: ৪,৬৯৯ আমিরাতি ডলার (১,৩২,৯৯৪ টাকা) থেকে শুরু|
পড়ুন: এলিয়েন কি সত্যি পৃথিবীতে এসেছিল?
মালয়েশিয়া
বিশ্বব্যাপী কেনাকাটার অন্যতম গন্তব্য মালয়েশিয়া। তাই কম দামে একটি আইফোন কেনার জন্যও দেশটি একটি ভালো বিকল্প। গত ১২ মাসে দেশটির বাজার শেয়ারের ২৭.১৭ শতাংশ অধিকার করে আছে অ্যাপলের ডিভাইস। বর্তমানে মালয়েশিয়ান রিঙ্গিতের বাংলাদেশি মুদ্রার বিনিময় রেট চলছে ২২.৯৬ টাকা। এখানে নতুন আইফোনের মূল্যগুলো হলো-
আইফোন-১৪: ৪,১৯৯ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত (৯৬,৪২৫ টাকা) থেকে শুরু
আইফোন-১৪ প্লাস: ৪,৬৯৯ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত (১,০৭,৯০৭ টাকা) থেকে শুরু
আইফোন-১৪ প্রো: ৫,২৯৯ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত (১,২১,৬৮৫ টাকা) থেকে শুরু
আইফোন-১৪ প্রো ম্যাক্স: ৫,৪৯৯ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত (১,২৬,২৭৭ টাকা) থেকে শুরু
পড়ুন: ইলন মাস্কের প্রাক্তন বান্ধবী তাদের স্মৃতিচিহ্নগুলো নিলামে তুলেছে!
এক নজরে দেশগুলোতে আইফোন-১৪-এর মূল্যের তুলনা
আইফোন-১৪-এর মূল্য কোন দেশে কেমন
আইফোন-১৪ বিক্রয়কারি দেশ |
যে মূল্য থেকে আইফোন-১৪ বিক্রি শুরু হবে |
|
নিজস্ব মুদ্রায় মূল্য |
মূল্য (টাকা) |
|
যুক্তরাষ্ট্র |
৭৯৯ মার্কিন ডলার |
৮৩,০৬১ |
কানাডা |
১০৯৯ কানাডিয়ান ডলার |
৮৬,৬২৪ |
জাপান |
১১৯৮০০ ইয়েন |
৮৬,৮৯৫ |
চীন |
৫৯৯৯ ইউয়ান |
৮৯,৬৩৪ |
হংকং |
৬৮৯৯ হংকং ডলার |
৯১,৩৮৪ |
দক্ষিণ কোরিয়া |
১২,৫০,০০০ ওন |
৯৩,২৯১ |
থাইল্যান্ড |
৩২,৯০০ বাট |
৯৩,৩৮০ |
সিঙ্গাপুর |
১২৯৯ সিঙ্গাপুরিয়ান ডলার |
৯৬,১২০ |
সংযুক্ত আরব আমিরাত |
৩৩৯৯ আমিরাতি ডলার |
৯৬,২০১ |
মালয়েশিয়া |
৪১৯৯ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত |
৯৬,৪২৫ |
শেষাংশ
সবচেয়ে কম দামে আইফোন-১৪ সরবরাহকারি দেশগুলোর সাথে বাংলাদেশি মুদ্রার মানের তারতম্যের কারণেই আইফোনের তুলনামুলক মূল্যমান প্রতিফলিত হচ্ছে। ফোনগুলোর মডেলের পাশাপাশি স্টোরেজ প্ল্যানগুলোর সাথে সাথে মূল্যও আরো বৃদ্ধি পাবে। এখন পর্যন্ত ১২৮ জিবি(গিগাবাইট), ২৫৬ জিবি, ৫১২ জিবি এবং ১ টিবি (টেরাবাইট) বাজারে ছাড়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক কেনাকাটায় আইফোনের মূল্যের উপর ওভারসিজ রিফান্ড ও ট্যাক্স পলিসির গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব আছে। তবে তা বাংলাদেশিদের জন্য অনুকূল তথা সাশ্রয়ী হবে।
পড়ুন: মঙ্গলগ্রহের জন্য রোবট তৈরিতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের অপার সম্ভাবনা