সেন্টারটির একটি ব্যাকআপ থাকবে যশোরে। যাতে প্রাকৃতিক দুর্যোগে কালিয়াকৈর ডেটা সেন্টার ক্ষতিগ্রস্ত হলেও যেন তথ্য হারিয়ে না যায়।
সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদের সাপ্তাহিক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘এখন থেকে সরকারি সব ডেটা এখানে রাখা হবে...সরকারি সব ডেটার জন্য এটা বাধ্যতামূলক এবং এখানে পেমেন্টের মাধ্যমে সব ব্যক্তিগত ডেটাও সংরক্ষণ করা যাবে।’
তিনি জানান, এমনকি ডেটা সেন্টারের মালিকও কোনো সংস্থার ডেটাতে ঢুকতে পারবে না। যেসব সংস্থা ডেটা জমা করবে কেবল তাদেরই ওই সংশ্লিষ্ট ডেটাতে প্রবেশের অধিকার থাকবে।
মন্ত্রিসভা বাংলাদেশ ডেটা সেন্টার কোম্পানি লিমিটেড শীর্ষক কোম্পানির মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশন এবং আর্টিক্যাল অব অ্যাসোসিয়েশনের সংশোধিত খসড়ার ভূতাপেক্ষ অনুমোদন দিয়েছে, বলেন খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রাথমিকভাবে মূলধন হিসেবে সরকার এ কোম্পানিকে ৫০ কোটি টাকা দিচ্ছে এবং কোম্পানিটিকে নিজস্ব আয় দিয়ে ডেটা সেন্টারটি পরিচালনা করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে কালিয়াকৈর ডেটা সেন্টারে নিজস্ব সার্ভার খুলতে হবে। সরকারি সব প্রতিষ্ঠানের ডেটা এখানে সংরক্ষণ করতে হবে। ওখানে সব সেফটি ও সিকিউরিটি থাকবে।’
আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব
সভায় আইসিটি বিভাগের চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সময়ে বাংলাদেশের সম্ভাবনা বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদকে অবহিত করা হয়।
এ সংক্রান্ত উপস্থাপনায় ভবিষ্যতে যেসব প্রযুক্তি বিশ্বকে নেতৃত্ব দেবে এমন ১০টি প্রযুক্তির কথা তুলে ধরা হয়েছে।
‘তাই আমাদের (চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সম্ভাব্যতা কাজে লাগাতে) এ ১০টি প্রযুক্তির প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে। অন্যথায়, আমরা আন্তর্জাতিক বাজারে টিকে থাকতে পারব না,’ বলেন সচিব।
প্রযুক্তিগুলো হলো- উন্নত উপকরণ, ক্লাউড প্রযুক্তি, স্বয়ংক্রিয় যানবাহন, সিন্থেটিক বায়োলজি, ভার্চ্যুয়াল অগমেনটেড রিয়েলিটি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবট, ব্লকচেইন, থ্রিডি প্রিন্টিং এবং ইন্টারনেট অব থিংস।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আমরা কীভাবে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে পরিচালনা করব তার ওপর আমাদের ভবিষ্যত নির্ভর করবে। যদি আমরা একে সঠিকভাবে চালনা করতে না পারি তবে আমাদের সমস্যার মোকাবিলা করতে হবে।’
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সময়ে উত্পাদন ও সব প্রযুক্তি ব্যবস্থার পরিবর্তন হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে তার কর্মশক্তিকে এ বিপ্লবের জন্য উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে হবে। অন্যথায় আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা, অর্থনীতি বা প্রযুক্তি বা অন্য সব ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়তে হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এরইমধ্যে দেশের বেশ কয়েকটি পোশাক কারখানা রোবট ব্যবহার শুরু করেছে।
জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন অনুমোদন
বিদ্যমান জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন-২০০২ বাতিল করে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন-২০২০-এর খসড়াটি নীতিগতভাবে অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় আইনের খসড়া মন্ত্রিসভায় এনেছে কারণ বিদ্যমান আইন সময়ের চাহিদা পুরোপুরি পূরণ করতে পারে না। নতুন আইন পাস হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যমান জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন-২০০২ বাতিল করা হবে।