বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ সূত্র অনুসারে, আগামী জুনের মধ্যে ৮০৬.৭৬৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (৬ হাজার ৭৭২.৮৭ কোটি টাকা) ব্যয়ে সরকার এ তেল আমদানি করবে।
সূত্র বলছে, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ ও রাষ্ট্রয়াত্ত বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) যৌথভাবে এ তেল আমদানি করবে। আমদানি তেলের মধ্যে ১.১৯ মিলিয়ন টন ডিজেল, এক লাখ টন জেট এ-১, ৩০ হাজার টন পেট্রল এবং এক লাখ টন ফার্নেস তেল।
সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি গত সপ্তাহে বিপুল পরিমাণ এ তেল আমদানির অনুমোদন দেয়। এছাড়াও তেল আমদানির প্রস্তাবিত ব্যয়েরও অনুমোদন দেয়া হয় কমিটিতে।
প্রস্তাবিত ব্যয় অনুযায়ী প্রতি ব্যারেল ডিজেলে ২.৯৫ ডলার, প্রতি ব্যারেল জেট এ-১ ৩.৯৬ ডলার, প্রতি ব্যারেল পেট্রলে ৫.৫০ ডলার এবং প্রতি টন ফার্নেস তেলের জন্য ২৯.৭৫ ডলার খরচ করা হবে।
ক্রয় কমিটির প্রস্তাব অনুসারে, আমদানিকৃত পরিশোধিত তেলের মধ্যে ইন্দোনেশিয়ার ‘বিএসপি জাপিন’ থেকে ৯০ হাজার টন ডিজেল, ৪০ হাজার টন ফার্নেস তেল ও ১৫ হাজার টন পেট্রল এবং মালয়শিয়ার পিটিএলসিএল থেকে ১.১০ লাখ টন ডিজেল, ১০ হাজার টন জেট এ-১ এবং ২০ হাজার টন ফার্নেস তেল আমদানি করা হবে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) ইএনওসি থেকে ৯০ হাজার টন ডিজেল ও ২০ হাজার টন ফার্নেস তেল এবং থাইল্যান্ডের পিটিটিটি থেকে ৬০ হাজার টন ডিজেল ও ২০ হাজার টন ফার্নেস তেল কেনা হবে।
এদিকে চীনের দুটি রাষ্ট্রয়াত্ত কোম্পানির থেকে শুধু ডিজেল কিনবে বাংলাদেশ। এর মধ্যে পেট্রোচীন থেকে ৯০ হাজার টন এবং ইউনিপেক থেকে ১.৫ লাখ টন ডিজেল ক্রয় করা হবে।
এছাড়া কুয়েতের রাষ্ট্রয়াত্ত প্রতিষ্ঠান কেপিসি থেকে ৫১ হাজার টন ডিজেল ও ৯০ হাজার টন জেট এ-১ এবং ফিলিপাইনের পিআইটিসি থেকে ৯০ হাজার টন ডিজেল ও ১৫ হাজার টন পেট্রল ক্রয় করা হবে।
কর্মকর্তারা জানান, জ্বালানি আমদানির ক্ষেত্রে সরকার কয়েক বছর ধরে একটি সুনির্দিষ্ট কৌশল অনুসরণ করে আসছে। সেই কৌশল অনুসারে সরকার মোট জ্বালানি তেল আমদানির ৫০ শতাংশ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রয়াত্ত কোম্পানির থেকে এবং বাকি ৫০ শতাংশ উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ক্রয় করে।
এমন কৌশল প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী এএইচএম মুস্তফা কামাল জানান, তেল আমদানিতে নিরাপদ অবস্থানে থাকতে সরকার এ কৌশল গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, ‘যদি সম্পূর্ণ আমদানি উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে করা হয়, সেখানে সবসময় ঝুঁকি থাকে। কারণ কোনো আন্তর্জাতিক সংকটের ক্ষেত্রে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান জ্বালানি সরবরাহ করতে না পারলে দেশের জ্বালানি আমদানি অনিশ্চয়তার মুখে পরবে।’
আর এ কারণেই এ কৌশল অনুসরণ করা হয়, যোগ করেন মন্ত্রী।