শনিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮টিসহ সিলেট নগরীর ৩২টি কেন্দ্রে ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা এবং দুপুর আড়াইটায় শাবির ৮টিসহ মোট ৪৬টি কেন্দ্রে ‘বি’ ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এবছর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭০৩টি (কোটাসহ) আসনের বিপরীতে এবার আবেদন করেছে ৭১ হাজার ১৮ জন শিক্ষার্থী। সে হিসেবে প্রতি আসনের বিপরীতে ৪২ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেয়।
বিশেষ কোনো অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে যান্ত্রিক শহরে বেড়ে যাওয়া ট্রাফিকের সময়ের দুর্ভোগ কমাতে ‘ট্রাফিক আইন মেনে চলা, মোটরসাইকেল চালানোর সময় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা’ স্লোগানকে সামনে রেখে দিনব্যাপী এ কার্যক্রম চালিয়েছেন সিলেট বাইকিং কমিউনিটি এবং বুস্টার্স সংগঠন দুটির সদস্যরা।
সিলেট বাইকিং কমিউনিটি যাত্রা শুরু থেকেই শহরের বিভিন্ন স্থানে গতি নিয়ন্ত্রকে রঙ করা, হেলমেট ব্যবহারে সচেতনতার লিফলেট বিতরণ, এইচ.এস.সি পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছানার দুর্ভোগ দেখে এ ধরনের সেবাদানের কথা ভাবেন তারা।
সেই ভাবনা থেকে শাবির ভর্তি পরীক্ষার সময় যানবহনের দুর্ভোগ নিরসনে শনিবার দেড় শতাধিক মোটরসাইকেলের নিয়ে শাবি ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা ৯ হাজার ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর পাশে ছিল সিলেট বাইকিং কমিউনিটি এবং বুস্টার্স এর সদস্যরা। দুই সংগঠনের সদস্যরা একত্র হয়ে ভর্তি পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা শুরুর আগে ও পরে কেন্দ্র এবং নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করেছে একদম বিনামূল্যে।
এ বিষয়ে সিলেট বাইকিং কমিউনিটির প্রধান সমন্বয়ক শাহিদ জামান ইউএনবিকে বলেন, ভর্তি পরীক্ষার সময় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এই সিলেটে লক্ষাধিক মানুষের আগমন ঘটে। এইসময় যানবাহনের অধিক চাপের ফলে পরীক্ষার্থীদের সাথে দুর্ভোগ পোহাতে নগরবাসীর। আমাদের এই সেবা এতো মানুষের মাঝে কিছুটা হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস দিয়েছে। এতেই আমরা আনন্দিত। সামনের দিনগুলোতে আরও বড় পরিসরে এ সেবা প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা ইচ্ছে আছে আমাদের।
সেই সাথে আমরা বাইকারদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব সৃষ্টির মাধ্যমে সিলেটের পর্যটন স্থানগুলোকে বিশ্বের মাঝে তুলে ধরতে চাই এবং বিদেশি বাইকারদেরকে সঙ্গে নিয়ে সিলেটের মাধ্যমে বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে উপস্থাপন করতে চাই, জানান তিনি।
তাদের এ ধরনের নতুন সেবা সম্পর্কে ভর্তি পরীক্ষার শৃঙ্খলা উপ-কমিটির আহ্বায়ক ও প্রক্টর অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমদ জানান, এ ধরনের ব্যবস্থাপনা এবারই প্রথম। সবাই নিয়ম মেনে মোটরসাইকেলগুলোতে স্টিকার ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আনা-নেয়ার কাজ করছে। সবচেয়ে বড় বিষয় ভর্তি পরীক্ষার্থীদের অপরিচিত এলাকা হওয়ায় তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি স্বেচ্ছাসেবীরা গুরুত্ব সহকারে দেখছে।
শাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ইউএনবিকে বলেন, ভর্তি পরীক্ষার্থীদের যাতায়াত ব্যবস্থাপনায় এরকম ব্যতিক্রম উদ্যোগকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাধুবাদ জানাই। অতীতে ভর্তি পরীক্ষার সময় এভাবে কখনো কেউ এগিয়ে আসেনি।