ভারতের গুজরাটের আহমেদাবাদে বিমান দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত মেডিকেল হোস্টেলের ৫ শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও ৪০ শিক্ষার্থী। এছাড়াও দুর্ঘটনার শিকার এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটির ২৪২ আরোহীর সবাই নিহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) স্থানীয় সময় দুপুর দেড়টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। ভারতের কর্তৃপক্ষের বরাতে দ্য টেলিগ্রাফ ও ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির খবরে হতাহতের বিষয়ে এমনটিই বলা হয়েছে।
এয়ার ইন্ডিয়া বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিমানটিতে ২৪২ আরোহী ছিলেন। তাদের মধ্যে ২৩২ যাত্রী ও ১০ ক্রু ছিলেন। যাত্রীদের মধ্যে ১১ শিশুও ছিল বলে জানিয়েছে এয়ার ইন্ডিয়া।
আরও পড়ুন: আহমেদাবাদে বিমান বিধ্বস্ত: ২৪২ আরোহীর কেউ বেঁচে নেই
এক বিবৃতিতে এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, আহমেদাবাদ-লন্ডন গ্যাটউইকে পরিচালিত এআই১৭১ বিমানটি দুর্ঘটনায় পড়েছে। বিমানটিতে থাকা যাত্রীর মধ্যে ১৬৯ জন ভারতীয় নাগরিক, ৫৩ জন ব্রিটিশ, ৭ জন পর্তুগিজ এবং ১ জন কানাডিয়ান ছিলেন।
ছবিতে দেখা গেছে, বিমানের একটি অংশ বিজে মেডিকেল কলেজের ছাত্রাবাসের ছাদে আটকে রয়েছে।
এফএআইএমএ ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন সামাজিক মাধ্যম এক্সে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘আমরা আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনার খবর শুনে গভীরভাবে স্তম্ভিত। আমরা যখন জেনেছি বিমানটি বিজেএমসির ছাত্রাবাসে বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে অনেক এমবিবিএস শিক্ষার্থীও আহত হয়েছেন। তখন খবরটি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে!!!! আমরা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি এবং যেকোনো সহায়তার জন্য প্রস্তুত আছি!’
প্রায় ৪০ জন চিকিৎসক আহত হয়েছেন এবং অন্তত একজনের অবস্থা গুরুতর। ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিজে মেডিকেল কলেজের একজন প্রত্যক্ষদর্শী ড. শ্যাম গোবিন্দ বলেছেন, ‘আমি এবং আমার জুনিয়র ডাক্তার আহত হয়েছি। ৩০-৪০ জন অনুগ্র্যাজুয়েট ডাক্তারও আহত হয়েছেন এবং এক থেকে দুইজন শিক্ষার্থীর অবস্থা গুরুতর।’
আরও পড়ুন: ভারতে বিধ্বস্ত লন্ডনগামী বিমানে ৫৩ ব্রিটিশ নাগরিক ছিলেন
বেসরকারি বিমান চলাচল অধিদপ্তর (ডিজিসিএ) জানায়, পাইলট ক্যাপ্টেন সুমিত সাবহরওয়াল বিমানের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আগে এক ‘জরুরি বিপদ’ সংকেত পাঠিয়েছিলেন। ‘মেইডে’ সংকেত একটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিপদ সংকেত, যা প্রধানত বিমানচালনা ও সমুদ্র পরিবহন যোগাযোগের ক্ষেত্রে জীবনসংকটাপন্ন জরুরি অবস্থার তথ্য জানাতে ব্যবহার করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) দুপুরে আহমেদাবাদে বিমান দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, এটি ‘খুবই বেদনাদায়ক’। তিনি বলেন, তিনি মন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন যারা আক্রান্তদের সহায়তা করার জন্য কাজ করছেন।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধনা উপদেষ্টা এই বিমান দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার শোক প্রকাশ করে বলেছেন, ‘ভারতের শহর আহমেদাবাদে বিধ্বস্ত লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে অনেক ব্রিটিশ নাগরিক ছিলেন, দুর্ঘটনায় পতিত হওয়ার দৃশ্যগুলো ভীষণ মর্মান্তিক।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি পরিস্থিতি সম্পর্কে নিয়মিত আপডেট পাচ্ছি এবং এই গভীর উদ্বেগজনক মুহূর্তে আমার চিন্তা যাত্রী ও তাদের পরিবারের সঙ্গে রয়েছে।’ এছাড়া এই দুর্ঘটনায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারাও শোক প্রকাশ করেছেন।