প্রবল বৃষ্টিপাতে ইন্দোনেশিয়ার সুলাওয়েসি দ্বীপের একটি অননুমোদিত স্বর্ণের খনিতে ভূমিধসে অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও ১৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানা গেছে।
গোরোনটালোর সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ এজেন্সির মুখপাত্র আফিফুদ্দিন ইলাহুদে জানান, রবিবার প্রায় ৩৫ জন গ্রামবাসী গোরোনটালো প্রদেশের প্রত্যন্ত বোন বোলাঙ্গো জেলার একটি স্বর্ণের খনিতে স্বর্ণ তুলতে খোঁড়ার কাজ করছিলেন। এ সময় আশপাশের পাহাড় ধসে কয়েক টন কাদার নিচে তারা চাপা পড়েন।
তিনি বলেন, উদ্ধারকারীরা রবিবার আহত পাঁচজনকে উদ্ধার করেছে এবং সোমবার ১১ জনের লাশ উদ্ধার করেছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও ১৯ জন। তাদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা।
ইলাহুদে বলেন, 'ভারী বৃষ্টিপাত, ঘন কাদা ও ধ্বংসাবশেষের কারণে রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মৃত ও নিখোঁজদের জন্য ত্রাণ তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে।’
তিনি বলেন, উদ্ধার করা তিনটি লাশ সেখান থেকে সরিয়ে নিতে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন উদ্ধারকারীরা।
ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির মুখপাত্র আবদুল মুহারি বলেন, শনিবার থেকে প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে একটি বাঁধও ভেঙে গেছে, যার ফলে বোন বোলাঙ্গোর পাঁচটি গ্রামে ৩ মিটার (১০ ফুট) পর্যন্ত বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে প্রায় ৩০০ বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এক হাজারেরও বেশি মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে সরে গেছে।
ইন্দোনেশিয়ায় অননুমোদিত খনিতে কাজের বিষয়টি খুবই সাধারণ। গুরুতর আহত বা মৃত্যুর উচ্চ ঝুঁকি নিয়ে এসব খনিতে কাজ করে হাজার হাজার মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে।
ভূমিধস, বন্যা ও টানেল ধসে পড়ার মতো ঘটনায় মাঝে মাঝেই এখানকার শ্রমিকরা বিপদের সম্মুখীন হন। স্বর্ণের আকরিক প্রক্রিয়াজাতকরণের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অত্যন্ত বিষাক্ত পারদ ও সায়ানাইড থাকে। অথচ অধিকাংশ সময় খুব হালকা আবার কখনো কখনো কোনো সুরক্ষাই ব্যবহার করেন না শ্রমিকরা।
২০২২ সালের এপ্রিলে দেশটির সর্বশেষ বড় খনি দুর্ঘটনা ঘটেছিল। উত্তর সুমাত্রার ম্যান্ডেলিং নাটাল জেলায় একটি অবৈধ ঐতিহ্যবাহী স্বর্ণের খনিতে ভূমিধস হয়েছিল। সেখানে ১২ জন নারী মারা গিয়েছিলেন।
এর আগে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে উত্তর সুলাওয়েসি প্রদেশের একটি অবৈধ স্বর্ণের খনিতে অস্থায়ী কাঠের কাঠামোর মাটি সরে যায় এবং বিপুল সংখ্যক গর্তের কারণে মাটি ধসে পড়ে। ওই ঘটনায় ৪০ জনেরও বেশি মানুষ মাটি চাপা পড়ে মারা গিয়েছিল।