ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলের রামিয়াহয় ‘গুপ্তচর সরঞ্জাম’ লক্ষ্য করে একটি আত্মঘাতী ড্রোন হামলার দাবি করেছে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ।
স্থানীয় সময় সোমবার (২৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় এ হামলা চালানো হয় বলে জানিয়েছে হিজবুল্লাহ।
গোষ্ঠীটি বলেছে, ‘গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে আমাদের যোদ্ধারা রামিয়াহয় এ হামলা চালিয়েছে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক লেবাননের একাধিক সামরিক সূত্র জানিয়েছে, সোমবার দক্ষিণ লেবাননের সীমান্তবর্তী শহর ও গ্রামগুলোতে ১২টি ড্রোন ও যুদ্ধবিমান দিয়ে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। একটি গাড়ি ও দুটি মোটরসাইকেল লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়।
এছাড়া আবরা এলাকার প্রধান সড়কে চলাচলকারী একটি গাড়ি লক্ষ্য করে দুটি ইসরায়েলি ড্রোন আকাশ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করলে গাড়িটিতে আগুন ধরে যায়। এ ঘটনায় গাড়ির চালক নিহত হন। তিনি ফিলিস্তিনের একটি অংশের নেতা ছিলেন বলে জানা গেছে।
এ ছাড়াও দক্ষিণ লেবাননের ১৬টি সীমান্তবর্তী শহরে গোলাবর্ষণ করেছে ইসরায়েল। এতে ১১টি বাড়িসহ আরও প্রায় ২৪টি স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে। তবে এসব ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: হিজবুল্লাহর ঘোষণার পর লেবাননে ইসরায়েলের ১০০ বিমান হামলা
রোববার ভোর থেকে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহ বাহিনী ইসরায়েল-লেবানন সীমান্তে ব্যাপক গুলি বিনিময়ে লিপ্ত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে হামলা করার সময় থেকেই হামলা শুরু করেছে হিজবুল্লাহ। এরপর থেকে প্রায় প্রতিদিনই ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে গুলি বিনিময় চলছে। তবে ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীটির সঙ্গে লড়াই সম্প্রতি তীব্র আকার ধারণ করেছে। এটি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, তা একটি পূর্ণ যুদ্ধের রূপ নিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
হিজবুল্লাহ হামাসের চেয়ে অনেক শক্তিশালী। তাদের সঙ্গে নতুন করে যুদ্ধ শুরু হলে ইরানও তাতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িয়ে পড়তে পারে। ফলে তারাও ইসরালের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করতে পারে। সর্বোপরি, এটি একটি বড় পর্যায়ের আঞ্চলিক যুদ্ধের রূপ নিতে পারে।
সম্প্রতি হিজবুল্লাহর মোকাবিলায় ইসরায়েলের উত্তর সীমান্তে সৈন্য জড়ো করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
এ ব্যাপারে হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরাল্লাহ ইসরায়েলকে সতর্ক করে বলেছেন, আমাদের কাছে নতুন এমন অস্ত্র ও গোয়েন্দা সক্ষমতা রয়েছে, যা ইসরায়েলের গভীরে আরও গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করার সক্ষমতা রাখে।
অবশ্য গাজায় যুদ্ধবিরতি হলেই কেবল ইসরায়েলে হামলা বন্ধ করা হবে বলে হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: লেবাননে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৩ হিজবুল্লাহ সদস্য নিহত