উগান্ডার পশ্চিমাঞ্চলের কাসেস জেলায় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সন্দেহভাজন বিদ্রোহীদের হামলায় ৩৮ জন শিক্ষার্থীসহ ৪১ জন নিহত হয়েছেন। শনিবার স্থানীয় মেয়র এ তথ্য জানিয়েছেন।
এমপন্ডওয়ে-লুবিরিহা মেয়র সেলভেস্ট মাপোজে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) জানিয়েছেন, হতাহতদের মধ্যে শিক্ষার্থী, একজন প্রহরী এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের দুই সদস্য রয়েছে।
মাপোজ বলেন, বিদ্রোহীরা একটি ছাত্রাবাসে আগুন দেওয়ায় কিছু শিক্ষার্থী মারাত্মক দগ্ধ হয়েছিল, অন্যদেরকে গুলি করা হয়েছিল বা কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছিল।
পুলিশ বলেছে যে অ্যালাইড ডেমোক্রেটিক ফোর্সের (এডিএফ) বিদ্রোহীরা কঙ্গো সীমান্ত থেকে ২ কিলোমিটার দূরের শহর এমপন্ডওয়ের লুবিরিহা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে হামলা চালিয়েছে।
পুলিশ এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘একটি ছাত্রাবাসে আগুন দেওয়া হয়েছে এবং একটি খাবারের দোকান লুট করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ২৫টি লাশ স্কুল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং বেভেরা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আরও আটজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।’
পুলিশ জানিয়েছে, উগান্ডার সেনারা কঙ্গোর ভিরুঙ্গা ন্যাশনাল পার্কে হামলাকারীদের ট্র্যাক করেছে।
সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে যে উগান্ডার সেন্যরা কঙ্গোর অভ্যন্তরে ‘অপহৃতদের উদ্ধার করতে শত্রুদের তাড়া করছে।’
কাসেসে উগান্ডার প্রেসিডেন্টের প্রতিনিধিত্বকারী একজন কর্মকর্তা জো ওয়ালুসিম্বি ফোনে এপিকে বলেছেন, কয়েকজন ব্যক্তি এমনভাবে পুড়ে গেছে যে ‘পরিচয় চেনা যাচ্ছে না।’
আরও পড়ুন: কঙ্গোতে জাতিসংঘবিরোধী বিক্ষোভে নিহত ১৫, আহত ৫০
একজন প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা এবং ওই অঞ্চলের একজন প্রাক্তন আইনপ্রণেতা উইনি কিজা টুইটারে এক পোস্টে ‘কাপুরুষোচিত এই হামলার’ নিন্দা করেছেন।
তিনি বলেন, ‘স্কুলে হামলা অগ্রহণযোগ্য এবং এটি শিশু অধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন।’
তিনি আরও বলেন, স্কুলগুলো সর্বদা ‘প্রতিটি ছাত্রের জন্য একটি নিরাপদ স্থান’ হওয়া উচিত।
এডিএফ-এর বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পূর্ব কঙ্গোর প্রত্যন্ত অঞ্চলে বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে অনেক হামলা চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে।
এডিএফ দীর্ঘদিন ধরে উগান্ডার প্রেসিডেন্ট ইওওয়েরি মুসেভেনির শাসনের বিরোধিতা করেছে, মার্কিন নিরাপত্তা মিত্র হিসেবে যিনি ১৯৮৬ সাল থেকে ক্ষমতায় রয়েছেন।
উগান্ডার কিছু মুসলমান ১৯৯০ এর দশকের গোড়ার দিকে গ্রুপটি প্রতিষ্ঠা করে। তাদের অভিযোগ ছিল সরকার মুসেভেনির প্রকৃত নীতি থেকে দূরে সরে গেছে।
সেই সময় থেকে প্রায়ই বিদ্রোহীরা উগান্ডার গ্রামগুলোর পাশাপাশি রাজধানীতে মারাত্মক হামলা চালায়। ১৯৯৮ সালে উগান্ডার একটি শহরে এক হামলায় ৮০ জন শিক্ষার্থী নিহত হন।
ক্রমে গোষ্ঠীটি ইসলামিক স্টেট (আইএস) গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেছে।
গত মার্চ মাসে সন্দেহভাজন এডিএফ চরমপন্থীদের হামলায় কঙ্গোতে কমপক্ষে ১৯ জন নিহত হয়েছিল।
কয়েক বছর ধরে উগান্ডার কর্তৃপক্ষ দেশের ভূখণ্ডের বাইরেও এডিএফ জঙ্গিদের খুঁজে বের করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
২০২১ সালে উগান্ডা এই গ্রুপটির বিরুদ্ধে কঙ্গোতে যৌথ বিমান এবং কামান হামলা শুরু করে।