গাজায় সামরিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের অস্ত্র আমদানি, রপ্তানি ও পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য দেশ স্লোভেনিয়া।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) রাতে দেওয়া এক সরকারি ঘোষণায় স্লোভেনিয়া সরকার জানায়, এটি ইউভুক্ত কোনো সদস্য রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নেওয়া প্রথম নিষেধাজ্ঞা।
স্লোভেনিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদসংস্থা এসটিএ’র খবরে বলা হয়, এর আগে স্লোভেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট গোলোব বেশ কয়েকবার বলেছিলেন, ইইউ যদি সম্মিলিতভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তার দেশ এককভাবে পদক্ষেপ নেবে।
দেশটির সরকারি বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়, ‘ইইউ অভ্যন্তরীণ বিভাজনের কারণে এই মুহূর্তে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে অক্ষম। এমন ব্যর্থতার কারণে লজ্জাজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। পদ্ধতিগতভাবে মানবিক সহয়াতায় ইসরায়েলি বাধার কারণে (গাজায়) অসংখ্য মানুষ মারা যাচ্ছে। তারা পানীয় জল, খাদ্য ও প্রাথমিক চিকিৎসা না পেয়ে মারা পড়ছে।’
যদিও স্লোভেনিয়ার সঙ্গে ইসরায়েলের অস্ত্র বাণিজ্য প্রায় নেই বললেই চলে, তবু এ নিষেধাজ্ঞাটি কূটনৈতিকভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: অনাহারে ১২৭ প্রাণহানির পর গাজায় ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি ইসরায়েলের
স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অস্ত্র বাণিজ্য বিশ্লেষক জাইন হুসেইন বলেন, ‘স্লোভেনিয়ার এই নিষেধাজ্ঞা প্রতীকী হলেও তাৎপর্যপূর্ণ।’
এর আগে স্লোভেনিয়া সরকার জুলাই মাসে চরম সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে দুইজন কট্টর ডানপন্থী ইসরায়েলি মন্ত্রীর দেশটিতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
সম্প্রতি, ইসরায়েলে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র সহায়তা বন্ধের তদবির করা আর্মস কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী পরিচালক ড্যারিল কিমবাল বলেন, ‘স্লোভেনিয়ার এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইন এবং মানবতার মৌলিক মূল্যবোধকে সম্মান দেখানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’
২০২৪ সালের জুনে স্লোভেনিয়ার পার্লামেন্ট ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়। এর আগে ইউরোপের আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে ও স্পেনও ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছিল।
ইতোপূর্বে স্পেন, নেদারল্যান্ডস ও যুক্তরাজ্য আংশিক অস্ত্র রপ্তানি বন্ধ করলেও স্লোভেনিয়ার মতো পূর্ণাঙ্গ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি। স্লোভেনিয়ার এই পদক্ষেপ ইউরোপে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান প্রতিক্রিয়ারই একটি বহির্প্রকাশ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।