২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামলার পর জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া ইসরায়েলিদের চারজনকে উদ্ধার করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। শনিবার জিম্মিদের মুক্ত করতে উপত্যকায় ভারী বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে তাদের মুক্ত করা হয়।
তবে ইসরায়েলের চরম আগ্রাসনের বলি হয়েছে বিপুলসংখ্যক ফিলিস্তিনি। হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের ওই হামলায় এখন পর্যন্ত শিশুসহ অন্তত ২১০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, হামাসের জিম্মিদশা থেকে মুক্ত ওই চারজন হলেন- নোয়া আরগামানি (২৬), আলগম মেইর (২২), আন্দ্রে কোজলভ (২৭) ও শ্লোমি জিভ (৪১)। তারা সবাই সুস্থ আছেন। ২৪৬ দিন জিম্মি থাকার পর তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও প্রিয়জনের সঙ্গে পুনর্মিলনের জন্য হেলিকপ্টারে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ ঘোষণার পর ইসরায়েলি নাগরিকদের উল্লাস করতে দেখা যায়।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৯৪ ফিলিস্তিনি নিহত
জিম্মি হওয়ার পর আরগামানি সবচেয়ে বেশি পরিচিতি পান। একটি সংগীত উৎসব থেকে অন্য তিনজনের মতো তাকেও তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তাকে অপহরণের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একটি মোটরসাইকেলে দুইজনের মাঝখানে বসে তিনি চিৎকার করছেন, ‘আমাকে মেরো না!’
আরগামানির মা লিওরা ব্রেইন ক্যান্সারে আক্রান্ত। মেয়েকে ফিরত চেয়ে তিনি একটি ভিডিও শেয়ার করেন।
ইসরায়েলের চ্যানেল ১৩ জানিয়েছে, মুক্ত করার পর আরগামানিকে তার মা যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
ইসরায়েল সরকারের প্রকাশিত একটি ভিডিওতে আরগামানিকে বলতে শোনা যায়, এতদিন পর হিব্রু শুনতে পেরে তিনি খুবই আনন্দিত।
এদিকে, এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, সমস্ত জিম্মিকে মুক্ত করা পর্যন্ত লড়াই চলবে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গালান্ট বলেছেন, অভিযানটি সত্যিকার অর্থেই ‘সাহসী, দুর্দান্ত পরিকল্পনার বহিঃপ্রকাশ ও দারুণভাবে সম্পন্ন হয়েছে’।
শনিবার মধ্য গাজার নুসেইরাতের প্রাণকেন্দ্রে ব্যাপক হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। জিম্মিদের মুক্ত করতে একইসঙ্গে পৃথক দুই স্থানে হামলা শুরু করে তারা। এই অভিযানের সাফল্য হিসেবে ওই চারজনকে মুক্ত করতে সমর্থ হয় তারা।
আরও পড়ুন: বাইডেনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে উভয়সংকটে নেতানিয়াহু
ইসরায়েলের সামরিক মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি সাংবাদিকদের বলেন, সামরিক গোয়েন্দারা খবর দেয় যে, জিম্মিদের নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরের কেন্দ্রস্থলের একটি অ্যাপার্টমেন্টে রাখা হয়েছে। ওই ক্যাম্প থেকে (ইসরায়েলি) সেনবাহিনীর দূরত্ব ছিল মাত্র ২০০ মিটারের মতো।’
তিনি বলেন, ‘ভবনে অভিযান শুরুর আগে সৈনিকদের বারবার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।’
‘দিনের আলোতেই আমরা অভিযান শুরু করি। কিন্তু বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই চারপাশ থেকে আমাদের ওপর ব্যাপক গুলিবর্ষণ শুরু হয়। এমনকি রকেটচালিত গ্রেনেডও আমাদের দিকে ছোড়া হচ্ছিল। এমন আক্রমণ মোকাবিলা করতে অভিযানে বিমানসহ আরও সেনা নিয়োগ করি।’
এ হামলায় বিপুলসংখ্যক ফিলিস্তিনি হতাহত হয়েছে।