গাজা শহরে মানবিক সহায়তার জন্য অপেক্ষারত ফিলিস্তিনিদের উপর ইসরায়েলের হামলায় কমপক্ষে ৭০ জন নিহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোরে এ হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে নিহতের সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলার জবাবে ইসরায়েলের আকাশ, সমুদ্র ও স্থল আক্রমণের প্রথম লক্ষ্য ছিল গাজা শহর ও গাজার বাকি অংশগুলো। এলাকাটি ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের শিকার হয়েছে এবং কয়েক মাস ধরে বাকি অঞ্চল থেকে মূলত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তবে সহায়তা পেয়েছে সামান্যই।
ত্রাণ সংস্থাগুলো বলছে, গাজার বেশির ভাগ এলাকায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ত্রাণবাহী গাড়িবহরে সাহায্যপ্রত্যাশী মানুষের মরিয়া হয়ে হামলে পড়াও এর একটি কারণ বলে জানায়।
জাতিসংঘ বলছে, গাজার এক চতুর্থাংশ মানুষ অনাহারে ভুগছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কিদরা বলেন, বৃহস্পতিবারের হামলায় আরও ২৮০ জন আহত হয়েছেন।
কামাল আদওয়ান হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের প্রধান ফারেস আফানা বলেন, ঘটনাস্থলে পৌঁছে চিকিৎসকরা কয়েকশ মানুষকে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখেছেন।
তিনি বলেন, মৃত ও আহতদের নিয়ে যাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত অ্যাম্বুলেন্স নেই এবং কয়েকজনকে গাধার গাড়িতে করে হাসপাতালে আনা হয়েছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা এসব প্রতিবেদন খতিয়ে দেখছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই যুদ্ধে ফিলিস্তিনি নিহতের সংখ্যা ৩০ হাজার ৩৫ জনে দাঁড়িয়েছে এবং আহত হয়েছেন ৭০ হাজার ৪৫৭ জন।
তবে এর মধ্যে কতজন বেসামরিক ও যোদ্ধা তা আলাদা করে বলতে পারেনি মন্ত্রণালয়। নিহতদের দুই-তৃতীয়াংশই নারী ও শিশু বলে জানানো হয়েছে।
হামাস নিয়ন্ত্রিত সরকারের অংশ এই মন্ত্রণালয় হতাহতের বিস্তারিত রেকর্ড রাখে। এর আগে যেসব যুদ্ধ হয়েছে সেসবের হতাহতের যে হিসাব এই মন্ত্রণালয় দিয়েছে, তা অনেকাংশে জাতিসংঘ, স্বাধীন বিশেষজ্ঞ এমনকি ইসরাইলের নিজস্ব পরিসংখ্যানের সঙ্গেও মিলেছে।
ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের হামলায় ১,২০০ মানুষ নিহত হয়, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক এবং প্রায় ২৫০ জন জিম্মিকে করে হামাস। নভেম্বরে সপ্তাহব্যাপী যুদ্ধবিরতির সময় হামাসের জিম্মায় প্রায় ১৩০ জন রয়েছে বলে ইসরায়েলের দাবি। যাদের মধ্যে এক চতুর্থাংশ মারা গেছে বলেও মনে করা হচ্ছে।