প্রতিবেশী দেশ থেকে প্রতিশোধ না এলে বৈরিতা বাড়াবে না বলে জানিয়েছে ভারত ও পাকিস্তান। এর আগে দুই দেশই পরস্পরের ভূখণ্ডে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে। গত মাসে কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ পর্যটক নিহত হওয়ার পর এটি ছিল দুপক্ষের মধ্যে সবচেয়ে বড় পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বলেন, ‘ভারত যদি আর কোনো হামলা না চালায়, তাহলে উত্তেজনা প্রশমনের কথা ভাববে তার দেশ। তবে ভারত যদি কোনো ধরনের হামলা চালায়, তাহলে আমরা তার জবাব দেব।’
পাকিস্তানের জিও নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমরা জবাব দিয়েছি। কারণ আমাদের ধৈর্যের সীমা শেষ হয়ে গেছে। যদি তারা এখানে থামে, তাহলে আমরাও থেমে যাওয়ার কথা ভাবব।’
দিল্লিতে এক সাক্ষাৎকারে ভারতীয় উইং কমান্ডার ভূমিকা সিং বলেন, ‘তার দেশ উত্তেজনা প্রশমনে অঙ্গীকারাবদ্ধ, যদি পাকিস্তানের তরফ থেকে কোনো ধরনের প্রতিশোধ না আসে।’
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের তিন বিমানঘাঁটিতে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার অভিযোগ
‘তবে সীমান্ত এলাকায় পাকিস্তানের স্থলবাহিনীকে অগ্রসর হতে দেখা গেছে। একটি হামলা নতুন করে উত্তেজনা বাড়ানোর আভাস দিচ্ছে,’ বলেন তিনি।
ভারত-পাকিস্তানকে উত্তেজনা কমানোর আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ। শনিবার ভারতীয় কর্মকর্তা ও পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।
উত্তেজনা প্রশমনের উপায় খুঁজে বের করতে দুপক্ষকে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। ভবিষ্যতে সংঘাত এড়াতে গঠনমূলক আলোচনা শুরু করতে যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা করবে বলেও তিনি প্রস্তাব দিয়েছেন।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেছেন, ‘ভারতকে আমরা উপযুক্ত জবাব দিয়েছি। আমাদের নিরপরাধ নাগরিকদের রক্তের প্রতিশোধ নিয়েছি।’ যদিও বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে ভারত।
ভারতের উসকানির জবাবে তার দেশ ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে বলেও দাবি করেনে শাহবাজ শরিফ। বলেন, ‘রাতে বিমান ঘাঁটি ও অন্যান্য স্থানে ভারত ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পরে তার জবাব দিয়েছে পাকিস্তান।’
তবে ভারতের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যেই পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেন, ‘বর্তমানে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের শঙ্কা নেই। কিন্তু যদি তেমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়, তাহলে এখন যারা চেয়ে চেয়ে দেখছেন, তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।’
আরও পড়ুন: ভারত-পাকিস্তান সংঘাত: ৩ রুটে ফ্লাইটের সময়সূচি পরিবর্তন বিমানের
জিও নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বকে বলতে চাই, এটি কেবল এই অঞ্চলের মধ্যেই আটকে থাকবে না; এটি হবে ব্যাপক ধ্বংসাত্মক। ভারত যে পরিস্থিতি তৈরি করছে, তাতে আমাদের বিকল্পগুলো কমছে।’
এ সময় পরমাণু অস্ত্রের দেখভাল করা ন্যাশনাল কমান্ড অথরিটির কোনো বৈঠক ডাকা হয়নি বলেও দাবি করেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী।