হামাসের ঘাঁটি খুঁজে বের করার উদ্দেশ্যে দক্ষিণ গাজার শহর রাফাহর আরও গভীরে প্রবেশ ইসরায়েলি বাহিনী। এছাড়া উত্তর গাজায় ইসরায়েলের দলখ করা অংশে ফের হামাস যোদ্ধারা সংঘবদ্ধ হয়েছে বলে বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এমনকি তাদের সঙ্গে লড়াই হয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা।
রাফাহকে হামাসের শেষ ঘাঁটি হিসেবে বিবেচনা করছে ইসরায়েল। ফলে হামাসকে নিঃশেষ করতে এবং গত ৭ অক্টোবর এই সশস্ত্র বাহিনীর হাতে জিম্মি নাগরিকদের মুক্ত করতে রাফাহতে আগ্রাসন চালিয়ে যাওয়া হবে বলে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।
গাজায় আগ্রাসন শুরুর পর থেকে উপত্যকার অন্যান্য অংশ থেকে অন্তত ১০ লাখ বেসামরিক ফিলিস্তিনি রাফাহতে আশ্রয় নেয়। তবে ইসরায়েলের হুঁশিয়ারির পর থেকে দক্ষিণ গাজার এ শহরটি থেকে অন্তত ৩ লাখ শরণার্থী শহর ছেড়েছে।
রাফাহতে ইসায়েলি আগ্রাসনের কঠোর সমালোচনা করেছে মিসর। দেশটি আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গাজায় ‘ইসরায়েলের গণহত্যা’র বিচার চেয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার করা অভিযোগে সমর্থন দিয়েছে।
এ বিষয়ে দেওয়া এক বিবৃতিতে ফিলিস্তিনি নাগরিকদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর আগ্রাসন ‘ক্রমবর্ধমান বর্বরতা’ বলে উল্লেখ করেছে মিসরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে করা দক্ষিণ আফ্রিকার ওই অভিযোগ অবশ্য প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরায়েল।
তবে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান ফলকার তুর্কও ইসরায়েলের গাজায় আগ্রাসনের বিরোধিতা করেছেন।
এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, রাফাহতে ইসরায়েলের ‘পূর্ণ আগ্রাসনের’ পরও তা কীভাবে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয় না, তা আমার বোধগম্য নয়।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে অতর্কিত হামলা চালায় ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। হামলায় অন্তত ১২০০ বেসামরিক ইসরায়েলি প্রাণ হারায়। এছাড়া আরও অন্তত ২০০ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায় হামাস যোদ্ধারা।
ওই ঘটনার পর থেকে হামাসকে নির্মূলের উদ্দেশ্যে গাজায় আগ্রাসন শুরু করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। ইসরায়েলের সর্বাত্মক হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৪ হাজারের বেশি বেসামরিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও হাজার হাজার মানুষ। ইসরায়েলের হামলা থেকে বাদ পড়েনি গাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, উপাসনালয় থেকে শুরু করে হাসপাতালও। গত কয়েক মাসে মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হয়েছে গাজা।
যুদ্ধবিরতি ও চলমান যুদ্ধের স্থায়ী অবসানের জন্য দুই পক্ষকে এক টেবিলে বসানোর চেষ্টা করে যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতার। সে আলোচনার ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’ হয়েছিল বলেও মধ্যস্থতাকারী দেশ মিসরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল। তবে ইসরায়েলের রাফায় আগ্রাসানের মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি আলোচনা ভেস্তে গেছে।