দুই দেশের মধ্যে বিতর্কিত সীমান্তে উত্তেজনা কমানোর প্রচেষ্টা জোরদার করতে এবং মোতায়েন থাকা নিজেদের হাজার হাজার সৈন্যকে সরিয়ে নিতে সম্মত হয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
বৃহস্পতিবার(২৪ আগস্ট) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা এই তথ্য জানিয়েছেন।
জোহানেসবার্গে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে তাৎক্ষণিক একটি বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। উন্নয়নশীল অর্থনীতির ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকার ব্রিকস ব্লক সৌদি আরব এবং ইরান সহ আরও ছয়টি দেশকে এই গ্রুপে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা ভারতীয় সাংবাদিকদের বলেছেন, প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এর সঙ্গে একটি তাৎক্ষণিক বৈঠকে অমীমাংসিত সীমান্ত সমস্যা নিয়ে ভারতের উদ্বেগ তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
আরও পড়ুন: চাঁদে ভারতীয় মহাকাশযানের সফল অবতরণ
লাদাখের বিতর্কিত সীমান্ত এলাকায় কয়েক হাজার ভারতীয় ও চীনা সৈন্যের মধ্যে তিন বছর ধরে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। তিন বছর আগে এই অঞ্চলে সংঘর্ষে ভারতের ২০ জন এবং চার চীনা সেনা নিহত হয়েছিল।
কোয়াত্রা আরও বলেছেন, দুই নেতা প্রচেষ্টা জোরদার করতে সম্মত হয়েছেন। তবে মোদির উদ্বেগ প্রকাশের বিষয়ে শির প্রতিক্রিয়া কী বা ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী কী বলেছেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাননি।
নয়াদিল্লিতে চীনা দূতাবাস পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি বিবৃতি টুইট করে বলেছে, প্রেসিডেন্ট শি জোর দিয়েছেন যে চীন-ভারত সম্পর্কের উন্নতি তাদের অভিন্ন স্বার্থের জন্য এবং বিশ্ব ও আঞ্চলিক শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়নের জন্যও সহায়ক।
এতে বলা হয়েছে, ‘দুই পক্ষের তাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সামগ্রিক স্বার্থের কথা মাথায় রাখা উচিত এবং সীমান্ত সমস্যাটি যথাযথভাবে পরিচালনা করা উচিত, যাতে যৌথভাবে সীমান্ত অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতাবস্থা বজায় রাখা যায়।’
আরও পড়ুন: ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে এজেন্ডাগুলোর অগ্রগতির আশা করছে রাশিয়া ও চীন
পরিস্থিতি স্থিতিশীল করার আপাত প্রচেষ্টায় গত সপ্তাহে ভারত ও চীনের সামরিক কমান্ডাররা বৈঠক করেছেন। একটি প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা পশ্চিমে লাদাখ থেকে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য অরুণাচল প্রদেশে চীন এবং ভারত নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলগুলোকে পৃথক করে, যেটিকে সম্পূর্ণরূপে নিজের দাবি করে চীন।
ভারত ও চীন ১৯৬২ সালে তাদের সীমান্তে যুদ্ধে জড়িয়েছিল। চীন ভারতের উত্তর-পূর্বে অরুণাচল প্রদেশ সহ প্রায় ৯০ হজার বর্গ কিলোমিটার (৩৫ হাজার বর্গ মাইল) অঞ্চল দাবি করে, যেখানে প্রধানত বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীর আবাস।
অন্যদিকে ভারত বলেছে, চীন আকসাই চিন মালভূমিতে তার অঞ্চলের ৩৮ হাজার বর্গ কিলোমিটার (১৫ হাজার বর্গ মাইল) দখল করেছে, যেটিকে ভারত লাদাখের অংশ হিসাবে বিবেচনা করে। যেখানে বর্তমানে মুখোমুখি হওয়ার ঘটনা ঘটছে।
আরও পড়ুন: 'শান্তি ও স্থিতাবস্থা' বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি চীন-ভারতের