চট্টগ্রামে মাসব্যাপী বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বন্দর নগরীর পলোগ্রাউন্ড মাঠে এই ৩০তম চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা ২০২৩ এর উদ্বোধন করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি দেশের এবং ব্যবসায়ীদের সমৃদ্ধির জন্য শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে ব্যবসায়ীদের প্রতি অনুরোধ জানান।
তিনি বলেন, নিরবিচ্ছিন্নভাবে দেশের সমৃদ্ধির সঙ্গে যে ব্যবসা-বাণিজ্যেরও সমৃদ্ধি আসছে সেটি যদি অব্যাহত রাখতে হয়, জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা অব্যাহতভাবে যদি দেশ পরিচালনা করতে পারেন তাহলে আমাদের দেশকে আমরা স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছাতে পারবো। অন্যথায় আমরা দেশকে স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছাতে পারবো না।
তিনি বলেন, ২০১৩-১৪ ও ১৫ সালে যখন সারাদেশে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা হচ্ছিল মানুষের ওপর, তখন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে মুরগি এবং গরু ছাগলের ওপর পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছিল। এটার কারণ হচ্ছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম রুট হচ্ছে বাংলাদেশের ইকোনমিক লাইফলাইন, সেটাকে বন্ধ করে দেয়ার জন্য। তখন আমাদের সরকার সমস্ত প্রোটেকশন দিয়ে রপ্তানিসহ সবকিছু চালু রেখেছিল। তারা যদি আবার সুযোগ পায় দেশটাকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দিবে। আজকে দেশ সমৃদ্ধ হচ্ছে, এগিয়ে যাচ্ছে। মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে, ব্যবসা-বাণিজ্যে সমৃদ্ধি আসছে, বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা এখন বিদেশে বিনিয়োগ করছে, এটি শেখ হাসিনা না হলে হতো না। এখানে যদি আবার অন্য সরকার আসে এগুলো সব বন্ধ হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: বিসিআই সভাপতি হিসেবে আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পুননির্বাচিত
চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এমএ লতিফ এমপি, এফবিসিসিআই’র সভাপতি মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, বাণিজ্য মেলা কমিটির চেয়ারম্যান একেএম আক্তার হোসেন।
অনুষ্ঠানে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি ও তাদের দোসররা পদ্মা সেতু দিয়ে ওপারে গিয়ে জনসভা করে। তবুও তারা বলে, দেশে কোন উন্নয়ন হয় নাই। অথচ তারা পদ্মা সেতুর ওপর দিয়েই গেলেন। ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে গিয়ে বলেন কিছুই হয় নাই। যাদের চোখ থাকতে অন্ধ, কান থাকতে বধির তাদেরকে কেউ আলোও দিতে পারবে না, শ্রবণশক্তিও দিতে পারবে না। আমি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি আল্লাহ তাদের হেদায়েত করুন।
এফবিসিসিআই ও চট্টগ্রাম শিল্প বণিক সমিতিসহ সব সমিতিকে অনুরোধ জানিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, পৃথিবীর সব দেশে দেখতে পাই যখন পূজা পার্বন-উৎসব হয় তখন পণ্যের দাম কমে। আমাদের দেশে যখন উৎসব হয় তখন পণ্যের দাম বাড়ে। যখন আমাদের কোন উৎসব হবে, সেটি ঈদ-রোজা-পূজা যেটিই হোক তখন যেন পণ্যের দাম কমানোর মানসিকতা ব্যবসায়ীরা রাখে। যারা মজুদদারি করবে তাদের বিরুদ্ধে যেন ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এফবিসিসিআই ও বণিক সমিতি যদি ব্যবসায়ীদের ডেকে বলেন, যারা পণ্যের দাম কমাবে তাদেরকে ব্যবসায়ী সংগঠনের পক্ষ থেকে উৎসাহ দেয়া হবে। প্রয়োজনে পুরস্কৃত করা যেতে পারে। তাহলে আমাদের দেশে সেই সংস্কৃতিটা চালু হবে।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে নিরবিচ্ছিন্নভাবে এ মেলার আয়োজন চলছে। ঢাকার আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা সরকারের তত্ত্বাবধানে হয়। চট্টগ্রামে সরকার সহযোগিতা করে, কিন্তু মেলার আয়োজন করে চট্টগ্রাম শিল্প বণিক সমিতি। চট্টগ্রামে মেলার স্থায়ী ভ্যানু দরকার। এটা দীর্ঘদিনের দাবি। খুব তাড়াতাড়ি আউটার রিংরোডের বে- টার্মিনালের উল্টোপাশে মেলার জন্য জায়গা বরাদ্দ দেয়া হবে। আজ সকালে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা হয়েছে। নকশার কাজের প্রক্রিয়া চলমান আছে।
আরও পড়ুন: ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে হাইকমিশনের সহায়তা চায় বিজিএমইএ