বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে ‘বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চল’ স্থাপনে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চলকর্তৃপক্ষ (বেজা) ও বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা) এর মধ্যে ‘ডেভেপলমেন্ট চুক্তি’ স্বাক্ষরিত হয়েছে।
রবিবার রাজধানীর একটি হোটেলে এই চুক্তিস্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়। বেজার পক্ষে নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী ও বেপজার পক্ষে নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. নজরুল ইসলাম ডেভেলপমেন্ট চুক্তি স্বাক্ষর করেন।
সভাপতির বক্তব্যে পবন চৌধুরী বলেন, বেজা এবং বেপজার মধ্যে অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে এই চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে বেজা আরেকটি মাইলফলক রচনা করেছে। এর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়ন ও একটি শিল্পোন্নত, সমৃদ্ধ ও সুখী ‘সোনার বাংলা’ বিনির্মাণে আমরা আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলাম।
আরও পড়ুন : সম্ভাবনাময় আগামীর মিরসরাই: উন্নয়নের মোহনায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর
তিনি বলেন, করোনাকালেও বাংলাদেশ বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে সমর্থ হয়েছে। শুধুমাত্র গত বছরেই বেজা ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ প্রস্তাব পেয়েছে। অচিরেই বেজার অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে অবস্থিত বেশ কিছু কারখানা পুরোদমে উৎপাদনে যাবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রীর মূখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস বেজা এবং বেপজার এ মাইলফলকে অর্জনে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, বিনিয়োগের সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টির পাশাপাশি আধুনিক, দ্রুত এবং মানসম্মত সেবা বৃদ্ধির মাধ্যমে বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য বেজার কার্যক্রমের ফলে করোনা কালেও বাংলাদেশের অর্থনীতি বিশ্বের কাছে বিস্ময়বলে প্রতীয়মান হয়েছে।
বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো.নজরুলইসলাম বলেন, বিনিয়োগ আকর্ষণ এবং পণ্যের বহুমুখীকরণের মাধ্যমে রপ্তানিবৃদ্ধি, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি রক্ষেত্রে বেপজা ইতোমধ্যেই দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, ইপিজেডগুলোর মতো অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিচালনায়ও বেপজা সাফল্যের পরিচয় দেবে।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ বলেন, বেজাকে বঙ্গবন্ধুশেখ মুজিব শিল্পনগর উন্নয়নে সরাসরি সহযোগিতা প্রদানে তার মন্ত্রণালয় বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, বেজা ও বেপজার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও সরকারের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা ও বিনিয়োগকারীরা উপস্থিত ছিলেন।
দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা, ১৫ বছরের মধ্যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ১ কোটি লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতিবছর অতিরিক্ত ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি আয় প্রত্যাশা নিয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কোভিড-১৯: বিসিক শিল্পনগরীসমূহে উৎপাদন অব্যাহত
চট্টগ্রামে রসীতাকুন্ড ও মিরসরাই উপজেলা ও ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার প্রায় ৩০ হাজার একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর। ইতিমধ্যে ২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ এখানে নিশ্চিত হয়েছে।
বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে রয়েছে জাপানের নিপ্পন, ভারতের এশিয়ান পেইন্টস, যুক্তরাজ্যের বার্জার পেইন্টস, সিঙ্গাপুরের উইলমারসহ আরও অনেকে এবং দেশী স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে পিএইচপি, বসুন্ধরা গ্রুপ, ওয়ালটন গ্রুপ, টি কে গ্রুপ ছাড়াও আরও অন্যন বিনিয়োগকারী।
এ শিল্পনগরে ইতোমধ্যে সরকারি বিভিন্ন সংস্থার সাথে বেজার সুসমন্বয়ের ফলে নির্মিত হয়েছে শেখ হাসিনা সরণি, দেশের সর্বপ্রথম সুপারডাইক, প্রতিষ্ঠিত হয়েছে গ্যাস সংযোগ, বিদ্যুৎ সরবরাহের কাজ। এ শিল্প নগরে বর্তমান ১৩টি শিল্প নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে আরও ১৫টি প্রতিষ্ঠান শিল্প নির্মাণের অংশ হিসেবে প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে। জুলাই মাস নাগাদ কমপক্ষে দুটি শিল্প কারখানা উৎপাদনে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।