সিঙ্গাপুরভিত্তিক বিদ্যুৎ কোম্পানি সামিট ইন্টারন্যাশনাল পাওয়ার লিমিটেড বাংলাদেশে, বিশেষ করে বিদ্যুৎ খাতে এবং সামাজিক ব্যবসায় তাদের বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানোর অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছে।
প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসকে লেখা এক চিঠিতে সম্প্রতি দেশের জ্বালানি খাতে বিদ্যমান অবদান এবং ভবিষ্যৎ বিনিয়োগের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে প্রতিষ্ঠানটি।
সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আজিজ খান শুক্রবার টেলিফোনে ইউএনবিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, 'দারিদ্র্য ও বেকারত্ব দূরীকরণে আরও বিনিয়োগ করতে এবং অবদান রাখতে আমরা একটি অনুকূল ব্যবসায়িক পরিবেশ চাই।’
বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী সামিট গ্রুপ দেশের প্রায় ২০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন করে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায় অধ্যাপক ইউনূসকে অভিনন্দন জানান আজিজ খান। গ্রামীণ ব্যাংকের মাধ্যমে ক্ষুদ্রঋণ প্রদানে ইউনূসের দর্শনের প্রশংসা করে তিনি বলেন, গ্রামীণ ব্যাংক অত্যন্ত দরিদ্রদের আর্থিক খাতে অন্তর্ভুক্তিকরণের পথ সুগম করেছে এবং 'থ্রি জিরো' লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ সামাজিক ব্যবসার প্রসার ঘটিয়েছে।
খান বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার দর্শনে অনুপ্রাণিত হয়ে আমরা বাংলাদেশে ও সামাজিক ব্যবসায় বিনিয়োগ বাড়াতে আগ্রহী। আমাদের লক্ষ্য আরও বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং দারিদ্র্য বিমোচনে সহায়তা করা।’
বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সামিট পাওয়ার ইন্টারন্যাশনালের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
আরও পড়ুন: সামিট গ্রুপ আরেকটি এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনের অনুমোদন পেল
‘নেট জিরোর দিকে দেশের যাত্রাকে সমর্থন করতে, আমরা আগামী পাঁচ বছরে প্রায় ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আকৃষ্ট করতে আন্তর্জাতিক অংশীদার ও ঋণদাতাদের সঙ্গে সহযোগিতা করার পরিকল্পনা করছি। জাপানি, আমেরিকান, ড্যানিশ ও ভারতীয় সহযোগীদের অংশীদারিত্বে ফ্লোটিং স্টোরেজ রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিট (এফএসআরইউ), অনশোর এলএনজি টার্মিনাল এবং বায়ু ও সৌর শক্তির মতো পুনর্নবায়নযোগ্য শক্তি উদ্যোগের মতো প্রকল্পগুলোতে আমাদের নজর থাকবে।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম বিদেশি বিনিয়োগকারী হিসাবে, অতি প্রয়োজনীয় বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে বাতিঘর হিসেবে কাজ করে সামিট।
ইউএনবির হাতে আসা ওই চিঠিতে শীর্ষ সম্মেলনের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের কথাও তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) থেকে বিলম্বিত অর্থ প্রদান, বাংলাদেশি টাকার তীব্র অবমূল্যায়ন, উচ্চ সুদের হার, ব্যাংকিং খাতে তারল্য সংকট এবং কিছু কোম্পানির স্থাপনায় সাম্প্রতিক হামলা।
সামিটের চিঠিতে বিদ্যুৎ প্রকল্পে ক্যাপাসিটি পেমেন্ট নিয়ে ভুল ধারণার বিষয়টিও তুলে ধরা হয়েছে এবং বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে ভুল প্রতিবেদন বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে বলে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে।
এসব ভুল বোঝাবুঝি মোকাবিলা করে সত্য উদঘাটনে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সিআইডি, বাংলাদেশ ব্যাংক, বিডা, বিডিএ, আরইবি, পেট্রোবাংলাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
আরও পড়ুন: মহেশখালীতে নতুন এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের অনুমোদন পেল সামিট গ্রুপ