বাংলাদেশের চলমান ইতিহাসে ১৯৮১’র ১৭ মে বঙ্গকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ঘটনাটি যে কত গুরুত্বপূর্ণ ছিল, তা যত দিন যাচ্ছে ততই স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হয়ে উঠছে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর ক্ষমতায় আসা প্রতিক্রিয়াশীল সামরিক স্বৈরশাসকেরা স্বাধীন বাংলাদেশকে পুনরায় যেভাবে উল্টোরথে চড়িয়ে অধঃপাতে নিয়ে যাচ্ছিল, বঙ্গবন্ধুকন্যা সেদিন ফিরে না এলে আর কোনোদিন নিজের অভীষ্ট লক্ষ্যের সোজা পথে ফিরে আসা বাংলাদেশের পক্ষে আদৌ সম্ভব হতো কি না, সে-ব্যাপারে গভীর সন্দেহের অবকাশ আছে।
জননেত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের গুরুত্ব সঠিকভাবে অনুধাবনের জন্য তৎকালীন রাজনৈতিক পরিবেশ-পরিস্থিতির ওপর সামান্য আলোকপাত করা প্রয়োজন মনে করছি। কারণ, এ ইতিহাস পুরনো প্রজন্মের অনেকের জানা থাকলেও এ ব্যাপারে নতুন প্রজন্মের কোনো ধারণা নেই বললেই চলে।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট যেদিন বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়, জননেত্রী শেখ হাসিনা তখন তার ছোটবোন শেখ রেহানা এবং দুই সন্তানসহ স্বামীর কর্মস্থল পশ্চিম জার্মানিতে ছিলেন, যার ফলে তারা প্রাণে বেঁচে যান। বঙ্গবন্ধুর পরিবারের বাকি সদস্যরা এবং সম্প্রসারিত পরিবারের অনেক সদস্যও সেদিন শিকার হন শুধু বাংলার নয়, বিশ্বের এক নৃশংসতম রাজনৈতিক গণহত্যাকাণ্ডের।
এ হত্যাকাণ্ডের পর জননেত্রী শেখ হাসিনার স্বামী পরমাণু বিজ্ঞানী এম. এ. ওয়াজেদ মিয়া ভারত সরকারের কাছে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেন এবং এ আবেদন অনুমোদিত হয় ২৪ আগস্ট। জার্মানির ভারতীয় দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা জননেত্রী শেখ হাসিনা, ওয়াজেদ মিয়া, তাদের দুই শিশুসন্তান সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ও সজীব ওয়াজেদ জয় এবং শেখ রেহানাকে ১৯৭৫ এর ২৫ আগস্ট সকালে ফ্রাঙ্কফুর্ট বিমানবন্দর থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমানে করে দিল্লি পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।
দিল্লিতে পৌঁছানোর কয়েকদিন পর ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর বাসভবনে গিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা ও তার স্বামী বাংলাদেশের ১৫ আগস্টের ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত অবগত হন। ১৯৭৫ থেকে ১৯৮১, টানা প্রায় ৬ বছর দিল্লিতে তাদের নির্বাসিত জীবন কাটানোর সময় আওয়ামী লীগের কয়েকজন সিনিয়র নেতা বিভিন্ন সময়ে দিল্লিতে যান তাদের খোঁজখবর নিতে এবং দেশ ও দলের এক গভীরতম সঙ্কটলগ্নে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব নিতে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে রাজি করানোর অভিপ্রায় নিয়ে। এদের মধ্যে ছিলেন আবদুর রাজ্জাক, জিল্লুর রহমান, আবদুস সামাদ আজাদ, সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, তৎকালীন যুবনেতা আমির হোসেন আমু প্রমুখ।
আরও পড়ুন: স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
এরপর ১৯৮১’র ফেব্রুয়ারিতে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে জননেত্রী শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতেই তাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়।
সম্মেলনের এক সপ্তাহ পরে ২৪ ফেব্রুয়ারি আবদুল মালেক উকিল, জিল্লুর রহমান, আবদুল মান্নান, আবদুস সামাদ, এম. কোরবান আলী, বেগম জোহরা তাজউদ্দীন, গোলাম আকবর চৌধুরী, সাজেদা চৌধুরী, আমির হোসেন আমু, আইভি রহমান, আবদুর রাজ্জাক, তোফায়েল আহমেদ প্রমুখ ঢাকা থেকে দিল্লিতে যান এবং জননেত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে পর পর কয়েকটি বৈঠকে বসে নেত্রীকে দেশে ফিরতে রাজি করান এবং ফেরার পরবর্তী কর্মপন্থার খসড়া পরিকল্পনা করেন।
দলীয় ঐক্যের প্রতীক হিসেবে এবং বঙ্গবন্ধুর প্রদর্শিত পথ থেকে জোর করে বিচ্যুত করা জাতিকে আবার ধর্মনিরপেক্ষতা, অসাম্প্রদায়িকতা, বাঙালি জাতীয়তাবাদ আর মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে বঙ্গবন্ধু-তনয়ার প্রয়োজনের গভীরতা তারা সেদিন নেত্রীকে বোঝাতে পেরেছিলেন। দেশ, জাতি আর দলের সেই ভয়াবহ সঙ্কটকালে পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে জননেত্রী শেখ হাসিনা অবশেষে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়েই দেশে ফিরতে সম্মত হন।
দিল্লিতে দুই শিশুসন্তান জয় আর পুতুলকে ছোটবোন শেখ রেহানার কাছে রেখে ১৯৮১’র ১৭ মে দেশে ফেরেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের তৎকালীন রাজনৈতিক-সামাজিক আবহের মতো সেদিনকার আবহাওয়াও ছিল তীব্র ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ। ঘণ্টায় ৬৫ মাইল বেগে বইছিল ঝোড়ো বাতাস, সঙ্গে তুমুল বৃষ্টি। এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ঝড়বাদল অগ্রাহ্য করে সেদিন লাখ লাখ লোক জমা হয়েছিল তাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রীকে স্বাগত জানানোর জন্যে।
সেদিন বিকাল ৪টায় কুর্মিটোলা বিমানবন্দরে জননেত্রী শেখ হাসিনা পা রাখার সঙ্গে সঙ্গেই ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ ধ্বনিতে চরাচর মুখরিত হয়ে ওঠে। লাখ লাখ মানুষের কণ্ঠে সমস্বরে ঘোষিত হয়- ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার আগমন, শুভেচ্ছা স্বাগতম’; ‘ঝড়-বৃষ্টি আঁধার রাতে, আমরা আছি তোমার সঙ্গে’; ‘পিতৃহত্যার বদলা নিতে, লাখ ভাই বেঁচে আছে’; ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’...।
দেশের মাটিতে পা দিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা সেদিন জনতার উদ্দেশে অশ্রুরুদ্ধ কণ্ঠে বলেছিলেন, ‘আমার আর হারাবার কিছুই নেই। পিতা-মাতা, ভাই রাসেল সবাইকে হারিয়ে আমি আপনাদের কাছে এসেছি। আমি আপনাদের মাঝেই তাদের ফিরে পেতে চাই।... সব হারিয়ে আমি আপনাদের মাঝে এসেছি, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তার আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে জাতির পিতা হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণে আমি জীবন উৎসর্গ করতে চাই।’
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার ৪৩তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ
তিনি বলেছিলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগের নেত্রী হওয়ার জন্য আসি নি। আপনাদের বোন হিসেবে, মেয়ে হিসেবে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী কর্মী হিসেবে আমি আপনাদের পাশে থাকতে চাই।’
দেশে ফিরে যেসব অঙ্গীকার নিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব নেন তার মধ্যে ছিল: বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও স্বপ্ন বাস্তবায়ন, বঙ্গবন্ধু হত্যা ও জাতীয় ৪ নেতা হত্যার বিচার, একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার স্বৈরতন্ত্রের চিরঅবসান ঘটিয়ে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, সার্বভৌম সংসদীয় পদ্ধতির শাসন ও সরকার প্রতিষ্ঠা। এসব অঙ্গীকার বাস্তবায়নে কখনো পিছু হটেননি বঙ্গবন্ধুকন্যা।
দেশে ফেরার পর শুরু হয় সামরিক জান্তা ও স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে জননেত্রী শেখ হাসিনার নিরবচ্ছিন্ন সংগ্রাম, যা চলে দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে। জেল-জুলম, অত্যাচার কোনোকিছুই তাকে তার পথ থেকে একতিলও টলাতে পারে নি। বাংলার মানুষের হৃত অধিকার পুনরুদ্ধার করতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনি বার বার স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন। বাংলার জনগণ তার বৈপ্লবিক ভূমিকায় মুগ্ধ হয়ে তাকে ভূষিত করেছে ‘গণতন্ত্রের মানসকন্যা’ অভিধায়।
দেশে ফেরার পর জননেত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতার অপূর্ণ স্বপ্নকে সম্পূর্ণতা দেওয়ার পথে সব বাধা-বিপত্তির মুখোমুখি হতে পুরোপুরি প্রস্তুত বলে জানিয়ে বলেছিলেন, ‘জীবনে ঝুঁকি নিতেই হয়, মৃত্যুকে ভয় করলে জীবন মহত্ত্ব থেকে বঞ্চিত হতে হয়।’ মহান নেত্রী তার জীবন দিয়ে তার এ উক্তিকে সত্য প্রমাণিত করেছেন।
বিরোধী দলীয় নেত্রী থাকাকালে ঘাতকেরা তার ওপর একের পর এক প্রাণঘাতী হামলা চালিয়েছে। বার বার তিনি সাক্ষাৎ মৃত্যুর মখোমুখি হয়েছেন, কিন্তু কিছুমাত্র ভ্রূক্ষেপ করেননি। বঙ্গকন্যার অদম্য সাহস আমাদেরকে প্রাণিত ও প্রণোদিত করে সত্য, সুন্দর ও কল্যাণের সংগ্রামে আরো সাহসী হয়ে ওঠায়। মৃত্যুঞ্জয়ী জননেত্রী শেখ হাসিনা আজ সত্যিই এক মহৎ প্রেরণার নাম।
১৯৮১ থেকে ২০২৪- সুদীর্ঘ প্রায় সাড়ে ৪ দশক পেরিয়ে যাওয়ার পর জননেত্রী শেখ হাসিনার সেদিনকার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন আর অঙ্গীকারের গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য ক্রমপরিস্ফূট হয়ে উঠছে। বঙ্গবন্ধু-কন্যা যদি সেদিন ফিরে না আসতেন, কবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী, পাকিস্তানপন্থী, উগ্র সাম্প্রদায়িক, সামরিক স্বৈরাচারী অপশাসনের আগ্রাসন থেকে জাতি কোনোদিন মুক্তি পেতো কি না সন্দেহ। জাতির পিতা আর তার স্বপ্নের হন্তারকেরা জাতিকে যে-উল্টোরথে চড়িয়ে এক কৃষ্ণবিবরের দিকে নিয়ে যাচ্ছিল, জননেত্রী শেখ হাসিনাই তার ৪৪ বছরব্যাপী সংগ্রাম আর সরকার পরিচালনার দীর্ঘ অভিজ্ঞতার বিনিময়ে সেই উল্টোরথকে উন্নয়ন ও প্রগতির আলোকাভিমুখী সোজা পথে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছেন।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস: ধানমন্ডি ৩২-এ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
১৯৮১’র ১৭ মে দেশে ফিরে জননেত্রী শেখ হাসিনা যেসব কথা বলেছিলেন, যেসব অঙ্গীকার করেছিলেন, সেগুলোকে সত্যে পরিণত করেছেন কঠোর নিষ্ঠা আর একাগ্র প্রচেষ্টায়। পঁচাত্তর-পরবর্তী প্রবল প্রতিকূল সময়ে বিরুদ্ধস্রোতে কুটোর মতো ভাসমান ও ভগ্নপ্রায় আওয়ামী লীগ তার সময়োপযোগী বিচক্ষণ ও দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণেই আজ একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে অনেক বেশি সুসংগঠিত, ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী হয়ে উঠতে পেরেছে।
দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত আর ২০০৯ থেকে চলতি ২০২৪ পর্যন্ত মোট কুড়ি বছর প্রধানমন্ত্রীর গুরুদায়িত্ব সর্বোচ্চ যোগ্যতার সঙ্গে পালন করে চলেছেন। ২০২৩-এ জনগণের নিরঙ্কুশ রায় নিয়ে টানা চতুর্থবার এবং সব মিলিয়ে পঞ্চমবার ক্ষমতায় আসার সূত্রে এ দফায় তাকে আমরা আরো ৫ বছর সরকার-প্রধান হিসেবে পাচ্ছি, এটা জাতির জন্যে এক বিরাট পাওয়া। আগামীতে আবারো আমরা তাকে নির্বাচিত করব এবং আজীবন তিনি আমাদের প্রধানমন্ত্রী থাকবেন, এটাই আমাদের আশা।
এ ছাড়া ১১ বছরেরও বেশি সময় তিনি জাতীয় সংসদে একজন সংগ্রামী বিরোধী দলীয় নেতার ভূমিকাও পালন করেছেন। বঙ্গকন্যার হাত ধরে তার দল ও দেশ আজ প্রতিক্রিয়াশীল সামরিক স্বৈরাচারী অপশাসনের দুঃসহ স্মৃতিকে পেছনে ফেলে পৌঁছে গেছে এক অনন্য উচ্চতায়। জননেত্রী শেখ হাসিনার সেদিনকার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতিকে বিশ্বসভায় সমুন্নত শিরে দাঁড়াতে শিখিয়েছে।
জননেত্রী শেখ হাসিনার গত ৪৪ বছরের রাজনৈতিক জীবনে অর্জিত মাইল ফলকগুলো হলো: সামরিক স্বৈরশাসনের অবসান, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং জাতির ভাত ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা। বাংলাদেশকে তিনিই আজ খাদ্যে সম্পূর্ণ স্বয়ম্ভর করে তুলতে পেরেছেন।
বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় ৪ নেতার খুনিদের এবং একাত্তরের মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকার্য সম্পন্ন তথা রায় কার্যকর করিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্ব বাংলাদেশ আজ বিশ্বজয়ের এক নতুন পথের অভিযাত্রী। তারই দিকনির্দেশনায় বাংলাদেশ আজ বিশ্বের চোখে ‘উন্নয়নের আইকন’ হয়ে উঠেছে। ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ বলে কথিত বাংলাদেশ আজ পরিণত হয়েছে ‘স্বল্পোন্নত দেশ’ থেকে ‘উন্নয়নশীল দেশ’ এ।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন মঙ্গলবার উদযাপন করবে আ’লীগ
প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রখর দূরদৃষ্টি, অক্লান্ত পরিশ্রম আর দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার ফলে দেশের এমজিডি অর্জন, এসডিজি বাস্তবায়ন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবার মানোন্নয়ন, লিঙ্গসমতা প্রতিষ্ঠা, কৃষি দারিদ্র্যসীমা হ্রাস, গড় আয়ু বৃদ্ধি, রপ্তানিমুখী শিল্পায়ন এবং বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ার মাধ্যমে পোশাক শিল্প, ওষুধ শিল্প প্রভৃতি প্রতিষ্ঠা, রপ্তানি আয় বৃদ্ধিসহ নানা অর্থনৈতিক সূচক বাড়ানো সম্ভব হয়েছে।
এ ছাড়া বাস্তবায়িত হয়েছে পদ্মা সেতু, ঢাকা মেট্রো রেল, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী টানেল প্রভৃতি মেগা-প্রকল্পগুলো এবং বাস্তবায়নের পথে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর প্রভৃতি আরো কিছু মেগা-প্রকল্প।
প্রতিক্রিয়াশীল ঘাতক চক্রের হাতে পড়ে প্রায় পঙ্গু হয়ে পড়া একটি দেশ ও জাতিকে আবার নিজের সুস্থ সবল দৃঢ় পায়ে দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন অনাপোষ ও স্থিতপ্রতিজ্ঞ বঙ্গবন্ধু-তনয়া জননেত্রী শেখ হাসিনা। বিশ্বসভায় বাংলাদেশকে এনে দিয়েছেন একটি সম্মানজনক পরিচিতি। আজ বাংলাদেশ বিশ্বের সামনে উন্নয়নের রোল মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে তারই কারণে। তিনি আজ জাতীয় নেত্রী থেকে বিশ্বনেত্রীর পর্যায়ে উন্নীত হয়েছেন।
বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন ‘মানবতার জননী’, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাকে আজ অনেকটাই বাস্তবে পরিণত করেছে তার সুযোগ্য কন্যার গতিশীল নেতৃত্ব। আর এসব সম্ভব হচ্ছে শুধুমাত্র তিনি ১৯৮১’র ১৭ মে দেশে ফিরে আসার যুগান্তকারী সিদ্ধান্তটি নিয়েছিলেন বলেই। আর সেকারণেই ১৭ মে দিনটি স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে সোনার আখরে লেখা হয়ে গেছে।
লেখক: গবেষক, কলামিস্ট, শিক্ষাবিদ, ফোকলোরিস্ট ও অধ্যাপক, ইংরেজি বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।
(বি.দ্র. ইউএনবির সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামত নাও মিলতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির আইনগত, মতামত বা বিশ্লেষণের দায়ভার সম্পূর্ণরূপে লেখকের। লেখকের নিজস্ব মতামতের কোনো দায়ভার ইউএনবি নেবে না।)