অর্থনৈতিক মন্দার কারণে দেশের মানুষের মধ্যে ঈদের কোনো আনন্দ নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
তিনি বলেন, ‘ঈদ মানে খুশি। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে এই আনন্দ অনুপস্থিত। তারা আনন্দ উপভোগ করার মতো অবস্থায় নেই।’
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের মির্জা আব্বাস বলেন, গত ১৫ বছর ধরে দেশের মানুষের জন্য ঈদের আনন্দ অধরা রয়ে গেছে।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি সরকারের আমলে মানুষ বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে ঈদ উদযাপন করত, কিন্তু ঈদের সেই আনন্দ এখন মানুষ অনুভব করে না।
তিনি বলেন, 'মানুষের কষ্ট ও যন্ত্রণার ছাপ তাদের উদ্বিগ্ন মুখে ফুটে উঠেছে। তারা অনেক কষ্টে পশু কোরবানি দিচ্ছে। আমার বাসার (শাহজাহানপুর) কাছেই কোরবানির পশুর হাট আছে। আমি লক্ষ্য করেছি যে অনেক ব্যবসায়ী তাদের গরু বিক্রি করতে পারছেন না, যা জনগণের মধ্যে অর্থের লক্ষণীয় অভাবের ইঙ্গিত দেয়।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্বাস বলেন, 'অবৈধ ও অনির্বাচিত' সরকার ক্ষমতায় থাকার কারণে বাংলাদেশের মানুষ চরম কষ্ট সহ্য করছে।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচিত সরকার থাকলে আজকের মতো দুর্ভোগ পোহাতে হতো না জনগণের। এই বৈপরীত্য স্পষ্ট... যখন নির্বাচিত সরকার ছিল তখন পরিস্থিতি কী ছিল আর আজকে কী অবস্থা?’
কারাগারে থাকা দলটির হাজার হাজার নেতাকর্মীর সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন বিএনপির এ নেতা।
আব্বাস বলেন, ‘অক্টোপাসের শুঁড় দিয়ে দেশের মানুষকে চারদিক থেকে আটকে ফেলা হয়েছে। সেটা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও ভৌগোলিক অবস্থা সব দিক থেকেই। আমরা যদি ভৌগোলিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলি, আমরা ভালো অবস্থানে নেই এবং আমরা শান্তিতে নেই।’
তিনি সেন্টমার্টিন দ্বীপের উত্তেজনাকর পরিস্থিতি ও সংকট নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
আব্বাস বলেন, ‘দ্বীপটি খাদ্য সংকটের মুখোমুখি হয়েছে এবং দেশের অন্যান্য অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সেখানে খাবার সরবরাহ করা যাবে না। কেন? কারণ মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর ভয়। কিন্তু ১৯৭৮-৭৯ সালে মিয়ানমার নতজানু হয়ে বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতির (জিয়াউর রহমান) কাছে ক্ষমা চেয়েছে। মিয়ানমার এখন এতটাই দুঃসাহসী হয়ে উঠেছে যে, তারা আমাদের দিকে চোখ রাঙাচ্ছে।’
তিনি বলেন, মিয়ানমার দুঃসাহস দেখাচ্ছে কারণ বর্তমান অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকারের দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে সমর্থন নেই।
বিএনপির এই নেতা বলেন, বর্তমান সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে আরও অনেক দেশ বাংলাদেশের প্রতি বড় ভাই মনোভাব দেখাচ্ছে। এই সরকার অন্যের প্রভাবে নিজেরা সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না।
মিয়ানমারের প্রকৃত পরিস্থিতি নিয়ে সরকার মিথ্যা প্রচার করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
বিএনপির সাম্প্রতিক রদবদল প্রসঙ্গে মির্জা আব্বাস বলেন, দল পুনর্গঠনের জন্য তারা নিয়মিত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া হিসেবে এটা করছেন।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দলের কয়েকজন নেতাকে নিয়ে মির্জা আব্বাস রাজধানীতে জিয়ার সমাধিতে যান এবং সেখানে ঈদুল আজহা উপলক্ষে ফাতেহা পাঠ করেন।
তারা জিয়ার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করেন।