নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে চট্টগ্রাম-১ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনীত প্রার্থী মাহবুব উর রহমানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) আসনটির নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান ও অর্থঋণ আদালতের বিচারক (যুগ্ম জেলা জজ) মুজাহিদুর রহমান এ আদেশ দেন।
আদেশে বলা হয়, আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহবুব উর রহমানের সমর্থকরা একই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের সমর্থকদের মারধর, প্রাণে হত্যার হুমকিসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন। যেটি সংসদ নির্বাচনের রাজনৈতিক ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা-২০০৮ এর ১১ (ক) বিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
আরও পড়ুন: নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন: নওগাঁয় ২ প্রার্থীকে শোকজ
এমতাবস্থায় মাহবুবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্বাচন কমিশনে কেন সুপারিশ করা হবে না- তা আগামী ১৭ ডিসেম্বর বেলা ৩টার সময় জেলা জজ আদালতের ৪২২ নম্বর কক্ষে ব্যক্তিগতভাবে অথবা প্রতিনিধির মাধ্যমে কারণ দর্শাতে বলা হয়।
এর আগে গত ১২ ডিসেম্বর প্রার্থী মাহবুবের অনুসারী ও উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মাসুদ করিম রানার নেতৃত্বে আট থেকে ১০ জন বড়তাকিয়া বাজারে স্বতন্ত্র প্রার্থী গিয়াস উদ্দিন সমর্থিত কর্মী মাসুদ রানাকে মারধর করে।
এ ঘটনায় মাসুদ রানা বাদী হয়ে ১৩ ডিসেম্বর মিরসরাই থানায় মামলা দায়ের করে। এছাড়া প্রার্থী গিয়াসের পক্ষে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক নিয়াজ মোর্শেদ এলিট জেলা রিটার্নিং কার্যালয়ে অভিযোগ জমা দেন।
এতে গিয়াস উদ্দিনের কর্মীদের উপর হামলা এবং তফসিল ঘোষণার পর থেকে তার কর্মীদের হুমকি-ধমকি, হামলা ও প্রাণে মেরে ফেলার ভয়ভীতি প্রদর্শন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার ছবির অডিও-ভিডিও বিকৃত করে প্রতিনিয়ত নির্বাচন পূর্ব অনিয়ম করে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়।
এসব অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান ১৪ ডিসেম্বর নির্বাচনী অনুসন্ধানী কমিটিকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চিঠি লেখেন।
চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম বলেন, অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদূর রহমান মিরসরাই আসনের নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, তিনি ওই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থীর অভিযোগের ভিত্তিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন।
চট্টগ্রাম-১ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহবুব উর রহমান দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের ছেলে।
প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী গিয়াস উদ্দিন আওয়ামী লীগের নেতা উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন।
মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর জেলা রিটার্নিং কার্যালয় প্রথমে গিয়াসের মনোনয়ন বাতিল করেছিল।
পরে নির্বাচন কমিশনে আপিল করে প্রার্থিতা ফিরে পান গিয়াস। শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকতে পারলে আসনটিতে মাহবুব ও গিয়াসের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে ধারণা স্থানীয়দের।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল ৩০ নভেম্বর।
মনোনয়নপত্র বাছাই হয়েছে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর।
প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর আর ভোট গ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি।
আরও পড়ুন: আচরণবিধি লঙ্ঘন: ফরিদপুর-৪ আসনের কাজী জাফর উল্লাহকে শোকজ