অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠককে একটি ‘আশাপ্রদ ঘটনা’ হিসেবে উল্লেখ করেছে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক কাঠামো সংস্কারে গঠিত প্ল্যাটফর্ম নাগরিক কোয়ালিশন। বুধবার (১১ জুন) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য জানিয়েছে তারা।
এতে বলা হয়, এপ্রিলের নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রত্যাখ্যান করে ডিসেম্বরে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে বিএনপিসহ বেশ কিছু রাজনৈতিক দল অনড় অবস্থানের কারণে একটি রাজনৈতিক সংকট ঘনীভূত হচ্ছে, যা ঈদের ছুটির পর গভীরতর হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে দেশে-বিদেশে অনেক ষড়যন্ত্র এখন গোপনে এবং প্রকাশ্যে দুভাবেই ঘটে চলেছে বলে প্রতীয়মান।
‘এই অবস্থায় আগামী ১৩ জুন লন্ডনে ড. ইউনূসের সঙ্গে তারেক রহমানের বৈঠক বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক সংকটের মুখে একটি অত্যন্ত আশাপ্রদ ঘটনা।’
নাগরিক কোয়ালিশন জানিয়েছে, সাংবিধানিক স্বৈরাচার ঠেকাতে এবং নিরপেক্ষ নিয়োগ ও ক্ষমতার প্রাতিষ্ঠানিক ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নাগরিক কোয়ালিশনের প্রস্তাবিত ‘৭/২’ সংবিধান সংস্কার প্রস্তাব গুরুত্বের সঙ্গে আলোচিত হবে।
আরও পড়ুন: ইউনূস-তারেকের বৈঠক থেকে গণতন্ত্রের সুবাতাস বইবে: রিজভী
তাদের প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে, জুলাই চার্টারকে রাজনৈতিক সমঝোতার ভিত্তি হিসেবে নেওয়া, উচ্চকক্ষে আনুপাতিক ভোটের অনুপাতে আসন বণ্টন, সাংবিধানিক নিয়োগে নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পুনঃস্থাপন, সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নারী আসনে নির্বাচন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নাগরিক কোয়ালিশন মনে করে আগামী ডিসেম্বর বা এপ্রিল—কোনোটিই নির্বাচনের জন্য কার্যকর সময় নয়। ডিসেম্বরের মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা ও তার জন্য বিভিন্ন আইনি পরিবর্তন এবং নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা যেমন দুঃসাধ্য, তেমনি এপ্রিলের নির্বাচন অসহনীয় গরমে অসুস্থ ও বৃদ্ধ নারী-পুরুষদের ভোট দিতে নিরুৎসাহিত করবে।
‘পাশাপাশি, রমজানের তীব্র গরমে নির্বাচনের জন্য দেশব্যাপী ব্যাপক সরকারি কর্মযজ্ঞ ও রাজনৈতিক দলের প্রচার ও প্রস্তুতি দুরূহ করে তুলবে এবং তার সাথে সাথে এপ্রিলে অনুষ্ঠেয় এসএসসি–এইচএসসি পরীক্ষাও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে।’
বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা ও চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও এপ্রিলেই কেন নির্বাচনের সময় প্রস্তাব করা হয়েছে, তার কোনো ব্যাখ্যা সরকারের তরফ থেকে পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে নাগরিক কোয়ালিশন।
তারা বলছে, এপ্রিলের প্রথম দুই সপ্তাহে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করলেও সংস্কার ও নির্বাচনের প্রধান ধাপগুলো কবে কীভাবে অনুষ্ঠিত হবে, তার কোনো পরিকল্পনা বা বিভিন্ন ধাপের সম্ভাব্য তারিখ সরকার এখনো ঘোষণা করেনি। এই ধাপগুলো যেকোনো একটি বাস্তবায়নের শিথিলতা এপ্রিল মাসের নির্বাচনকেও যে পিছিয়ে দিতে পারে, এই আশঙ্কা মোটেও অমূলক নয়।